Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশ্বে ষষ্ঠ অবস্থানে বাংলাদেশ

সংসদে প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্র্রধানমন্ত্রী  ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। নারীর উন্নয়ন ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়- এ গভীর উপলব্ধি থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর নারীসমাজের উন্নয়নে পদক্ষেপ নেন। তিনি আমাদের উপহার দেন ’৭২ এর অনন্য সংবিধান। যা কেবল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির কথাই বলেনি; অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে নারী-পুরুষের সমতাও সমুন্নত করেছে।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় এমপি কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে সর্বপ্রথম জাতির পিতা নারীদের জন্য ১৫টি আসন সংরক্ষিত করেন। এটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে প্রথম বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। যার ফলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের প্রথম সংসদেই নারীরা প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়।  
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, দেশের নারীসমাজের উন্নয়নে কাজ করেছে উল্লেখ করে সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে নারী উন্নয়নের গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে। এখন মন্ত্রণালয়গুলোতে জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। স্পিকার, মন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সিনিয়র সচিব/সচিব পদে, ব্যাংকিং সেক্টরে উচ্চপদ, রাষ্ট্রদূত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আমরা নারীদের নিয়োগ/দায়িত্ব প্রদান করেছি। সব মন্ত্রণালয়ে নারী উন্নয়ন সংক্রান্ত ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।
নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে ও জেন্ডার সমতা নির্ধারণে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলোÑ নারীর সামর্থ উন্নীতকরণ, নারীর অর্থনৈতিক প্রাপ্তি বৃদ্ধিকরণ, নারীর মত প্রকাশ ও মত প্রকাশের মাধ্যম স¤প্রসারণ এবং নারীর উন্নয়নে একটি সক্রিয় পরিবেশ সৃষ্টিকরণ।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা নারী উন্নয়নের আমাদের ভ‚য়সী প্রশংসা করছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের গেøাবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৬ অনুযায়ী ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭২তম যা দক্ষিণ এশিয়ার যে কোনো দেশের চাইতে ভালো অবস্থান নির্দেশ করেছে। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী অংশগ্রহণের মান হিসেবে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ ষষ্ঠ স্থানে। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সরকার এবং সরকার প্রধান হিসেবে বিভিন্ন পুরস্কার প্রাপ্তির কথা উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, অর্জিত সাফল্যে নারীরা আজ সমাজকে আলোকিত করেছে। এই পুরস্কার এ দেশের সব নারীর।
বিনা বিচারে বন্দিরা ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে
নূরুল ইসলাম মিলনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বিনা অপরাধে কারাগারে আটক রয়েছেন, তারা সংশ্লিষ্ট আটককারী কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে। তাছাড়া, যদি কেউ রাষ্ট্রের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে, তবে আইনে সে বিধানও রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আটক অপরাধীদের পরিসংখ্যান নিয়ে তাদের বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছে।
সংসদ নেতা বলেন,  যারা কারাগারে আটক রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান আছে। এসব মামলা তদন্তাধীন পর্যায়ে থাকতে পারে বা বিচারিক পর্যায়েও থাকতে পারে। বিচারিক পর্যায়ে দীর্ঘসূত্রতা থাকলে এসব মামলায় কারাগারে আটক ব্যক্তিদের জামিনে মুক্তি প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করা সংশ্লিষ্ট বিচারকের এখতিয়ারাধীন। সরকার এসব মামলা দ্রæত বিচারের লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছেÑ দ্রæত বিচার আদালত ও ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ মামলার বিচারকার্য ত্বরান্বিত করার জন্য বিভিন্ন অবকাঠামোগত এবং সংস্কারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। এ ছাড়াও অপরাধীরা যাতে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন আটক না থাকে, সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকার তাদের দ্রæত বিচার সম্পন্ন করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।



দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্দোনেশিয়ায় তিন দিনের সরকারি সফর শেষে গতকাল (বুধবার) অপরাহ্নে দেশে ফিরেছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বেলা ৩টা পাঁচ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
প্রধানমন্ত্রী ইন্ডিয়ান ওসান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) লিডার্স সামিটে যোগ দিতে গত সোমবার জাকার্তা যান। সামিটের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী ড. মাইথা সালেম আল শামসির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন।
গত মঙ্গলবার সামিটের সাধারণ বিতর্ক সেশনে প্রধানমন্ত্রী তার প্রদত্ত ভাষণে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করতে নিবেদিত হয়ে কাজ করার জন্য ভারত মহাসাগর রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) নেতৃবৃন্দের প্রতি আহŸান জানান। তিনি এ অঞ্চলের জন্য দক্ষ নাবিক পুল তৈরিতে বাংলাদেশে ভারত মহাসাগর কারিগরি ও বৃত্তিমূলক একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেরও প্রস্তাব করেন।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক  বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ইন্দোনেশীয় সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে মিয়ানমার ইস্যু উত্থাপন করে বলেন, মিয়ানমারের শরণার্থী বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা এবং এর সমাধান প্রয়োজন।
শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনার সঙ্গে বৈঠকে উভয়  দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য স¤প্রসারণে একটি ‘ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট’ (এফটিএ) স্বাক্ষরের বিষয়ে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সেদেশে বাংলাদেশীদের গমনের জন্য ভিসা সহজীকরণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।







 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ