পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সজনে প্রতি কেজি ২শ’ টাকা
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : বাজারে উঁকি দিয়েছে বসন্তের সবজি সজনে। যাকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় সজিনা বা সাজনা। অত্যন্ত সুস্বাদু সবজি এই সজনে বাঙালির প্রতিটি ঘরে ঘরেই জনপ্রিয়। সজনে খায় না এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। চাহিদার কারণে এ সজনের দাম সবসময়ই চড়া থাকে। ফড়িয়াদের চাটাইয়ে এলে প্রতি বছরই এর দাম থাকে অস্বাভাবিক।
গত মঙ্গলবার নরসিংদী রেলবাজারে (বটতলা বাজার) এক ফড়িয়ার দোকানে প্রথম আমদানি হয় সজনে। বিক্রেতা এক কেজি সজনের দাম হাঁকেন ২শ’ টাকা, যা শুনে অনেক ক্রেতারই চোখ কপালে উঠে যায়। সজনে কেনা তো দূরের কথা অনেক ক্রেতাই দাম শুনে দ্রæত স্থান ত্যাগ করে চলে যায়। এত দামের পরও ফড়িয়ার চাটাইয়ে সজনে থাকবে না। এ চড়া দামেই কিনে নিয়ে যাবে ভাগ্যবান ক্রেতারা। সাধারণ মানুষ শুধু চোখেই স্বাদ নেয়।
সজনের জনপ্রিয়তার পেছনে রয়েছে এর মুখরোচক স্বাদ ও এর ভেষজ গুণ। সজনের পাতা, ছাল ও ফল সবই ঔষধি গুণসম্পন্ন উপকারী খাদ্য। বিজ্ঞানীদের মতে, সজনে অ্যামাইনো এসিডসমৃদ্ধ একটি সবজি, যা দেহের পাশাপাশি বাতের জন্যও অনেক উপকারী। সজনে পাতা শাকের মতো রান্না করে আহারের সময় অল্প পরিমাণে খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে ও ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। পাতা বেটে ফোঁড়া বা টিউমারে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের জনগণ সজনে পাতা শাক হিসেবে খেয়ে থাকে। শরীরে বল বৃদ্ধির কারণে এ সজনে পাতা শ্রমজীবী মানুষেরা বেশি বেশি খায়। এতে তাদের শ্রমজনিত ক্লান্তি এবং শরীরের বিষ-ব্যথা দূরীভূত হয়। সজনে বীজের তেল খুবই উপকারী। তবে আমাদের দেশে সজনে বীজের তেল পাওয়া যায় না।
বিদেশে সজনের তেলকে ‘বেনওয়েল’ বলা হয়। এই সজনের তেল দিয়ে ঘড়ি মেরামতের কাজ করা হয়। বাত ব্যথার জন্য এ সজনের তেল দিয়ে মালিশ করা হয়। এই তেল কুষ্ঠরোগে লাগালে বা বীজ বেটে প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, সজেনার মূল এবং বীজ সাপে কামড়ানোর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া সজনে মূলের ছালের প্রলেপ দিয়ে দাউদ রোগের চিকিৎসা করা হয়।
তবে বাংলাদেশে সজনে নিয়ে কোনো গবেষণা হয়েছে বলে জানা যায়নি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সজনেগাছ, পাতা ও সবজি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। এসব গবেষণায় এ গাছ হরমোন বর্ধক ঔষুধী গুণসম্পন্ন বলে প্রমাণিত হয়েছে। সজনেগাছ কাগজ তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে। বসন্তকালে এই সবজি ফলে বলে দেশের কবিরাজরা সুদূর অতীতকাল থেকেই সজনে ফুলকে বসন্ত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। সজনের ফুল শাকের মতো রান্না করে খাওয়া হলে বসন্তের প্রতিসেধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া সর্দি, কাশি, শোথ, প্লীহা ও যকৃতের কার্যকারিতা কমে গেলে সজনে ফুল, ফল ও গাছ ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এছাড়া নিয়মিত সজনে ছালের রস খেলে পেটের কৃমি নষ্ট হয়। প্রাচীন চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, সজনেতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, নিকোটিনিক এসিড, প্রোটিন, চর্বিজাতীয় পদার্থ ও কার্বোহাইড্রেড ইত্যাদি। ভারতীয়রা সজনের সুপ করে খেয়ে থাকে। ঋতু পরিবর্তনের কারণে অনেকের মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। এসময় সজনে, সজনের পাতা ও ফুল খেলে মুখের রুচি বৃদ্ধি পায়। বহুবিধ গুণের কারণে আধুনিক পুষ্টি বিজ্ঞানীরা সজনেকে পুষ্টির ডিনামাইট হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।