Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাষ্ট্রপক্ষকে দুই মাস সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ

সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী

| প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম


৮ মে পরবর্তী শুনানি
স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিমকোর্টের বিচারক অপসারণ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে দিয়ে করা সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি জন্য দুই মাস সময় দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। আগামী ৮ মে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত সদস্যের বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিট আবেদনকারীপক্ষে মনজিল মোরসেদ। এসময় আদালত নিযুক্ত অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল ও অ্যাডভোকেট এমআই ফারুকী উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল শুনানির শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল আট সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, প্রস্তুতির জন্য সময় দরকার।
এসময় আদালত বলেন, হাইকোর্টে বিস্তারিত শুনানি করেছেন আপনি। এখানে আইনগত বিষয়ে (ল’ পয়েন্ট) আপনার কথা শুনতে চাই। নতুন কিছু নেই। তাই অন্য বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপনের প্রয়োজন নেই। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা গুরুত্বপূর্ণ মামলা। তাই প্রস্তুতির জন্য সময় প্রয়োজন।
এরপর আদালত আগামী ৮ মে পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে আদেশ দেন। আদালত বলেন, এরপর আর সময় দিতে চাই না।
আদালতে উপস্থিত ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি লিখিত বক্তব্য প্রস্তুত করেছি। আদালত বলেন, আপনি ইচ্ছা করলে তা দাখিল করতে পারবেন। এসময় আদালত অ্যামিকাস কিউরিদের লিখিতভাবে তাদের মতামত জমা দেয়ার অনুরোধ করেন।
এর আগে গত ৮ ফেব্রæয়ারি আপিল বিভাগ শুনানিতে আদালতকে সহযোগিতার জন্য ১২ জন সিনিয়র আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেন। সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী অবৈধ বলে হাইকোর্টের দেয়া রায় প্রকাশের পর তা চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য রিট আবেদনকারীপক্ষে গত বছর ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। পরদিন আপিল বিভাগ ওই আবেদনের ওপর ৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ছিল। ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষ চার সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করে। আদালত ৮ ফেব্রæয়ারি দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় ওইদিন ৮ সপ্তাহ সময় চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবারো সময়ের আবেদন করে। আদালত ৭ মার্চ শুনানির দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় গতকাল নির্ধারিত দিনে আবারো ৮ সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করলো রাষ্ট্রপক্ষ।
১৯৭২ সালে প্রণীত মূল সংবিধানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা প্রেসিডেন্ট-এর হাতে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দেয়া হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে। আপিল বিভাগের রায়ে ৫ম সংশোধনী বাতিল হলেও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ব্যবস্থা রেখে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা পুনরায় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়। এরপর তা ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশ পায়। এ অবস্থায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। গত বছর ৫ মে আদালত সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতামতের ভিত্তিতে ১৬তম সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। তিন বিচারকের মধ্যে দুইজন ১৬তম সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন এবং একজন রিট আবেদনটি খারিজ করেন। এরমধ্যে সংখ্যা গরিষ্টদের রায় প্রকাশিত হয় গতবছর ১১ আগস্ট এবং রিট খারিজ করে দেওয়া বিচারকের রায় প্রকাশিত হয় একইবছরের ৮ সেপ্টেম্বর। দুটি মিলে মোট ২শ’ ৯০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ