Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ৬ মাস সময় পেল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

| প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম


সমস্যা চিহ্নিত করতে কমিটি গঠন
স্টাফ রিপোর্টার : বারবার সময় দেয়ার পরও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাচ্ছে না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে কয়েকদফা আল্টিমেটামও দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারপরও কোনো কাজ না হওয়ায় ফের পিছু হটেছে মন্ত্রণালয়। নতুন করে আবারো স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে আরো ছয়মাস সময় পেল ৩৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
আগামী জুন পর্যন্ত তাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। না হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ফের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কার্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস ইস্যুতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির যৌথ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের নেতৃত্ব দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব ক্যাম্পাসে না যাওয়াসহ অন্যান্য সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির প্রধান করা হয়েছে ইউজিসির সদস্য প্রফেসর আখতার হোসেনকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ ইউজিসির সদস্য এম শাহ নেওয়াজ আলী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবদুুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী, ইউজিসির উপ-পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) জেসমিন পারভীন। জেসমিন পারভীনকে ওই কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের জানান, এ কমিটি আগামী ৩০ জুনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেবে। তবে এর আগেও তারা সময়ে সময়ে জরুরি ভিত্তিতে সুপারিশ করবে। এর ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তারা জানান, বৈঠকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া ৩৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যার কথা আলোচনা হয়। নির্দিষ্ট সময়ে ক্যাম্পাসে না যাওয়ার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় তা জানতে চান শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ৯ ধারা অনুযায়ী তাদের সাময়িক অনুমতি বাতিলসহ বিভিন্ন ব্যবস্থার কথা জানান। এ ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ, সমাবর্তন ও শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রাখা, একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিয়োগকৃত ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগ বন্ধ করতে প্রেসিডেন্ট কার্যালয়কে সুপারিশ করা যায়। পরে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শিক্ষামন্ত্রী, সচিব, ইউজিসির সদস্য আখতার হোসেন আলাদা বৈঠকে বসেন। সেখানে কমিটি গঠনসহ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়ার সিদ্ধান্ত আসে। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী মালিকদের নানা দাবির বিষয় তুলে বলেন, তাদের কিছু দাবি যুক্তিসঙ্গত বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। সুতরাং তাদের আরো কিছু সময় দেয়া প্রয়োজন।
এ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, আমাদের উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য এগুলো আরো ভালোভাবে চলুক। তবে আজকেই তো কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য কমিটি করা হয়েছে। তারা সমস্যা চিহ্নিত করবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা  নেবে।
ইউজিসি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৩১ ডিসেম্বর স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার চতুর্থ দফা আল্টিমেটাম শেষ হয়। এর আগে গত ছয় বছরে চার দফায় সময় দেয়া হয়েছে। কিন্তু পুরোনো ৫১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এখনো ৩৯টি পুরোপুরিভাবে নিজস্ব ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি। তবে কেউ কেউ আংশিক গেছে, কেউ কেউ জমি কিনেছে, কেউ নকশা পর্যায়ে আছে। একটি জমিও কেনেনি। পূর্ণাঙ্গভাবে নিজস্ব ক্যাম্পাসে গেছে ১২টি।
গতকালের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে গত ২৭ ফেব্রæয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এই চিঠিতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে আরো সময় চাওয়া হয় মালিকদের পক্ষ থেকে। সেখানে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ার জন্য বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করেছে বলা হয়, নির্দিষ্ট সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অনেকেই জমি কিনেছে, অনেকেই রাজউক অনুমোদনের অপেক্ষায়, কেউ নকশা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সিদ্ধান্ত গ্রহণের দীর্ঘসূত্রতা এবং বিধিমালায় বিভিন্ন শর্তের কারণে পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করতে পারছে না। স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যাংক ঋণের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের জমি বন্ধক রেখেও সেই ব্যাংক ঋণ নিতে পারছে না। কোনো ব্যক্তির একক প্রচেষ্টা অখÐ জমি উচ্চমূল্যে কিনে ভবন নির্মাণ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনের ধারা সংশোধন করে ক্যাম্পাস নির্মাণের স্বার্থে দেশের প্রচলিত ঋণ গ্রহণের প্রতিবন্ধতা দূর করা জরুরি। এ ছাড়াও শিক্ষা কার্যক্রমের স্থানান্তরে যেটুকু বিলম্ব ঘটে, সেই সময়টুকু আইনের বরাদ্দ মেয়াদের সঙ্গে যুক্ত করার দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ