Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যে আইন মানুষের উপকারে আসে না, সেটি আইন নয় -মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৭, ৭:১৪ পিএম

স্টাফ রিপোর্টার : গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আইনের (আরপিও) রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিলসংক্রান্ত ধারার দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আইন মানুষের উপকারের জন্য। যে আইন মানুষের উপকারে আসে না, সেটি আইন নয়।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম ওই আলোচনার আয়োজন করে।

ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন বিষয় নয়, বিএনপি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা চায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নির্বাচন নয়। সরকার একই কায়দায় ছলচাতুরী করে, প্রতারণা করে গোল করতে চায়। কিন্তু তা এত সহজ নয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশের কোথাও গণতন্ত্র নেই। জনগণকে বোকা বানানোর জন্য সরকার গণতন্ত্রের কথা বলে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।

নিবন্ধন বাতিলের আইনের কথা বলে সরকার ‘ছলচাতুরীর’ মাধ্যমে বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে ‘বাধ্য করার ষড়যন্ত্র’ করছে মন্তব্য করে মহাসচিব বলেন, পত্র-পত্রিকা খুললেই দেখবেন, একটা গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রটা কী? বিএনপিকে নির্বাচনে আসতেই হবে। আজকের পত্রিকা খুলে দেখেন। বলছে, বিএনপি নির্বাচনে আসতে বাধ্য। আইন তো মানুষের জন্য, যে আইন মানুষের উপকারে আসবে না, যে আইন মানুষের কল্যাণ করবে না, যে আইনে নাগরিকরা তার সমান অধিকার পাবে না, সেই আইন আইন নয়, আইন হতে পারে না। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, পরপর দুটি সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। ফলে দশম জাতীয় নির্বাচন বর্জন করা বিএনপিকে নিবন্ধন বাঁচাতে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতেই হবে।

ফখরুল প্রশ্ন করেন, এই নির্বাচনের লক্ষ্য কী? যেখানে কোনো বিকল্প থাকবে না, আর কোনো দল থাকবে না বা যারা নির্বাচিত হতে পারেন সেরকম কেউ থাকবে না, তাকে কি আমরা নির্বাচন বলতে পারি? সরকার আবারও ‘একই কায়দায়’ নির্বাচন করতে চাইছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা ফুটবল খেলার সময়ে... আপনারা দেখেছেন, গোল দেবার সময়ে আমরা ড্রিবলিং করি, কাটিয়ে কুটিয়ে নিয়ে চলে যাই। মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে, প্রতারণা করে তারা এখন গোল করতে চায়। এতো সহজ নয়।”

ফখরুলের বিশ্বাস, বাংলাদেশের মানুষ ‘কখনই অন্যায় মেনে নেবে না’, প্রতারণাকারী ও উৎপীড়নকারী সাময়িকভাবে সফল হতে পারে, তবে সেই সাফল্য স্থায়ী হয় না।
ফখরুল বলেন, তারেক রহমান একটি সুদূর প্রসারী চক্রান্তের শিকার হয়েছেন। এই চক্রান্ত শুরু হয়েছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে, যা সফল হতে পারেনি পরবর্তীকালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে। তিনি জিয়াউর রহমানের দর্শন নিয়ে এগিয়ে গেছেন। তারেক শুধু শহীদ জিয়া ও বেগম জিয়ার সন্তান নন, তিনি সমগ্র বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক, দেশের রাজনীতির সম্ভাবনাময় প্রতীক। তাকে দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের আন্দোলন করতে হবে। শুধু বছরের একটা দিন কারাবন্দী দিবস পালন করলে হবে না।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেন, তারেক রহমানকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে বহু তদন্ত হয়েছে, আন্তর্জাতিকভাবেও তদন্ত হয়েছে কিন্তু কেউ প্রমাণ করতে পারেনি তারেক রহমান বাংলাদেশের খলনায়ক। বরং প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের নায়ক হিসেবে তারেক রহমান আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির নিবন্ধন সম্পর্কে বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, বাংলাদেশে বেগম জিয়ার মতো রাজনৈতিক নেত্রী, তারেক রহমানের মতো রাজনৈতিক নেতা, বিএনপির মতো রাজনৈতিক দলের ভাগ্য কোনো আদালতের কলম, কোনো নির্বাহী আদেশ বা কোনো আইনের ধারায় নির্ধারিত হবে না। এটা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনগণ। নিবন্ধনের কথা বলে আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে নেওয়া সম্ভব হবে না। নির্বাচনে যেটা হবে, সেটা বেগম জিয়া থাকবেন, আমরা থাকব, সহায়ক সরকারের অধীনেই হবে, আওয়ামী লীগের অধীনে হবে না।

এসময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কবির কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিলকিস জাহান শিরিন, কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান রতন, প্রফেসর এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, কায়সার কামাল, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুল খান আলীম, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, ব্যারিস্টার মীর হেলাল। এছাড়া প্রফেসর মামুন আহমেদ, সাইফুল ইসলাম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, রফিকুল আলম মজনু, এস এম জাহাঙ্গীরসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ