পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরের সময় তিস্তা চুক্তি সই ও গঙ্গা ব্যারাজ ইস্যুকে সমভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে তিস্তাসহ ৮ নদী নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া গঙ্গা ব্যারাজ তৈরি হলে ভারতীয় অংশে কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা, তা আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, ভারতকে আস্থায় নিয়েই আমরা এই ব্যারাজ নির্মাণ করতে চাই।
গতকাল (রোববার) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ফারাক্কা ব্যারাজ নির্মাণের পর থেকে বাংলাদেশ গঙ্গার পানি কম পাচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক নদী মরে গেছে। ব্যারেজ নির্মাণের আগে গঙ্গায় ৫৪-৫৫ হাজার কিউসেক পানি পেত বাংলাদেশ। এখন শুষ্ক মওসুমে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০-২২ হাজার কিউসেকে। পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের অনেক নদী মরে গেছে, যাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তিস্তা চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশকে প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। আশা করি, সেটা থেকে তারা বিচ্যুত হবেন না।
আগামী এপ্রিল মাসের প্রথমদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে তিস্তা চুক্তিতে অগ্রগতি হবে কিনা, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, তিস্তা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কথা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা বলা যাচ্ছে না। এটি নিয়ে তাদের (ভারত) অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে।
তিস্তা চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা কম, এজন্য বাংলাদেশ এখন গঙ্গা ব্যারাজের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কিনাÑ জানতে চাইলে মন্ত্রী জানান, আমরা দুটো বিষয়ই গুরুত্ব দিচ্ছি। দুটোই আমাদের প্রয়োজন এবং সেভাবেই চেষ্টা চলছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে যখন আমরা কাজ করি, তখন কিছুটা বাস্তববাদী হতে হয়। কাজেই এসব সমস্যা মাথায় রেখেই এগুতে হয়।
গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ প্রসঙ্গে পানি সম্পদমন্ত্রী বলেন, গঙ্গা ব্যারাজ যে এলাকায় হবে, তার অর্ধেকটা ভারতে পড়েছে। তাই ভারতের কনসার্ন প্রয়োজন আছে। এছাড়া এই প্রকল্পের ব্যাপারে তাদের কিছু প্রশ্ন ছিল। বিশেষ করে পানির উল্টো প্রবাহ, পলি জমে ওঠার ব্যাপারে তাদের প্রশ্ন ছিল। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা তাদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছি। কাজেই দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি হয়েছে। আশা করি, এই কমিটি তাদের সমীক্ষা প্রতিবেদন দেবে।
মন্ত্রী বলেন, ফারাক্কা ব্যারাজের ব্যাপারে ভারতের রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক চলছে। বিশেষ করে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার স¤প্রতি জোরালোভাবে ফারাক্কা ব্যারেজের নেতিবাচক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তাই গঙ্গা ব্যারাজ তৈরি হলে আমাদের দেশে কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা, তা আমরা আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি।
পানি সম্পদমন্ত্রী তার মন্ত্রণালয় প্রসঙ্গে বলেন, মন্ত্রণালয়ের যেখানে যে সমস্যা দেখা দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছি। ওপরের কোনো স্থান থেকে কোনো ধরনের চাপ আসছে না। তিনি বলেন, আমি একটা জিনিস চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, অলমোস্ট ৯৫ শতাংশের ওপরে চুরি আমরা বন্ধ করতে পেরেছি। নট অনলি দ্যট, আমরা যে বøকগুলো ব্যবহার করতাম তার কোয়ালিটি ট্রিমিন্ডাস ইমপ্রæভ করেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এখনো কিছুটা অস্বচ্ছতা আছে। এর প্রধান কারণ আমাদের যে জনশক্তি ছিল সেটা এক সময় অর্ধেক করে দেয়া হয়েছিল। আমি এখনো জানি না কেন সেটা অর্ধেক করে দেয়া হয়েছিল।
‘পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সবকিছুতে স্বচ্ছতা আনা হচ্ছে’ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ১২ জনের চাকরি খেয়েছি। এটা খুব একটা ইজি ছিল না। আনফরচুনেটলি নট এ সিঙ্গেল কেস ওয়েন্ট টু দ্য কোর্ট। একটা কেসও কিন্তু কোর্টে যায়নি। কেউ কোর্টে গিয়ে বলে নাই এমন ঘটনা ঘটেছে বা কোর্ট থেকে আমাদের কাছে কোন আদেশ আসেনি। যে খানেই অস্বচ্ছতা দেখছি, সেখানেই ধরা হচ্ছে এবং যত দূর পারি ব্যবস্থা নিচ্ছি।
গঙ্গায় পানি প্রবাহ কমে গেছে বলে গড়াইয়ে পানি প্রবাহ নেই-স¤প্রতি পত্রপত্রিকায় দেয়া এমন বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পানি সম্পদমন্ত্রী বলেন, ফারাক্কা ব্যারাজ নির্মাণের আগে ঐ নদীতে পানি ছিল। তিনি বলেন, ফারাক্কা ব্যারাজের কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বহু নদী মরে গেছে, চর পড়ছে, শুকিয়ে যাচ্ছে।
নদী ড্রেজিং করে সচল রাখা প্রসঙ্গে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, কিছু দেশ বাংলাদেশ থেকে বালু নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে। ওই দেশগুলো নিজেরা নদী খনন করে বালি নিয়ে যাবে। নদী খননের এই প্রক্রিয়া প্রথমে শুরু করা হবে যমুনা নদী দিয়ে। তিনি জানান, নদী ভাঙনে প্রতি বছর ৫ হাজার হেক্টর জমি বিলীন হয়ে যায় এবং এতে প্রায় ৫০ হাজার লোক ভিটা হারায়।
ঢাকা শহরে যে ভাসমান মানুষ আছে, তার ৩০ শতাংশই নদী ভাঙনের শিকার। নদী পাড় ভাঙার প্রধান কারণ হলো ডুবচর। সে জন্য যেখানে তীর সংরক্ষণ প্রকল্প আছে তার পাশে ড্রেজিং করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের একটি অনুশাসন আছে ৫০ শতাংশ টাকা ড্রেজিংয়ে খরচ করা হবে।
ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুরসালীন নোমানীর সঞ্চালনায় এসময় সংগঠনের সহ-সভাপতি আবু দারদা জোবায়ের, যুগ্ম-সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, অর্থ-সম্পাদক মানিক মুনতাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক জিলানী মিল্টন, কল্যাণ সম্পাদক আজাদ হোসেন সুমন, আপ্যায়ন সম্পাদক আপ্যায়ন কামাল উদ্দিন সুমন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক মাহমুদ রিয়াত, কার্যনির্বাহী সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সুমন ও আনিসুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।