পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থবছরের প্রথম আট মাসে কমেছে ১৭ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : রেমিটেন্স প্রবাহ কমছেই। ফেব্রæয়ারিতে মাত্র ৯৩ কোটি ৬২ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত পাঁচ বছরে কোনো একক মাসের প্রবাস আয়ের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে ২০১১ সালের নভেম্বরে ৯০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স বাংলাদেশে এসেছিল। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স প্রবাহের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ১০০ কোটি ডলারের কম রেমিটেন্স এলেও জানুয়ারি মাসে তা কিছুটা বেড়ে ১০০ কোটি ডলারের বেশি হয়। তবে ফেব্রæয়ারি মাসে তা ফের কমে ৯৩ কোটি ৬২ লাখ ডলারে নেমে এসেছে।
গত বছরের ফেব্রæয়ারিতে রেমিটেন্স এসেছিল ১১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় এবার এই মাসে রেমিটেন্স কমেছে ১৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। একইভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসের (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) হিসেবেও প্রবাসী আয় কমেছে ১৭ শতাংশ। রেমিটেন্সের অধঃগতিতে চিন্তিত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলছেন, আমাদের অর্থনীতিতে বর্তমানে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে রেমিটেন্সের কম প্রবাহ। আমাদের প্রবাসী আয়ের বড় অংশ আসছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। এসব দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তেলের দামও সেভাবে বাড়েনি, ফলে বাজেট ঘাটতি হয়েছে। এ কারণে সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের আয় কমে গেছে। অনেকের বেতনও কমে গেছে, চাকরিও হারিয়েছে কেউ কেউ। এ কারণে প্রবাসী আয় কমে গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রæয়ারি) ৮১১ কোটি ২৫ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৯৭৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সে হিসাবে এই আট মাসে রেমিটেন্স কমেছে ১৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত বলেছেন, ডলারের বিপরীতে ব্রিটিশ পাউন্ড, ইউরো, মালয়েশিয়ান রিংগিত, সিঙ্গাপুর ডলার প্রভৃতি মুদ্রার মূল্যমান কমে গেছে। ফলে এসব দেশের শ্রমিকদের আয়ের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা কম পাওয়া যাচ্ছে।
রেমিটেন্স প্রবাহের ধারাবাহিক পতনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষও উদ্বিগ্ন। স¤প্রতি কয়েক দফায় ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে তারা। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুটি প্রতিনিধি দল মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় সরেজমিনে তদন্তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত কয়েক বছর ধরে প্রবাসীদের পাঠানো আয় ১০০ কোটি ডলারের বেশি থাকলেও গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে তা নেমে আসে যথাক্রমে ৯৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার ও ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলারে। জানুয়ারি মাসে আসে ১০১ কোটি ডলার।
২০১৬ সালে প্রবাসীরা ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে এসেছিল ১ হাজার ৫৩২ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরে প্রবাসী আয় আগের বছরের চেয়ে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ কমেছিল। এর আগে ২০১৩ সালেও প্রবাসীরা তার আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন। প্রবাসী আয়ের নেতিবাচক প্রবণতা প্রথম দেখা দেয় ২০১৩ সালে। ওই বছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ৩৮৩ কোটি ডলার পাঠান, যা ২০১২ সালের তুলনায় ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম ছিল। এরপর ২০১৪ সালে প্রবাসী আয়ে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটে। ওই বছর মোট ১ হাজার ৪৯২ কোটি ডলার আয় দেশে আসে। এরপর ২০১৫ সালেও প্রবাসী আয়ে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। স¤প্রতি অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটের প্রথম প্রান্তিকের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন।
সেই প্রতিবেদনে প্রবাস আয় সম্পর্কে মুহিত বলেন, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্রবাস নিয়োগ হলেও প্রবাস আয়ে গতিশীলতা আসেনি। উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ধীর গতি, তেলের দাম কমার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং ডলারের বিপরীতে তুলনামূলকভাবে টাকা ‘শক্তিশালী’ থাকায় প্রবাস আয় প্রবাহ কমতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত ও বাহরাইন এই ছয়টি দেশ হতে প্রবাস আয়ের প্রায় ৫৮ শতাংশ আসে। গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৮ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবাস নিয়োগ বৃদ্ধি সত্তে¡ও এ সকল দেশ হতে একই সময়ে প্রবাস আয় কমেছে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, তেলের মূল্য কিছুটা স্বাভাবিক হলে এ সব দেশ হতে প্রবাস আয় প্রবাহও স্বাভাবিক হবে বলে আমি মনে করি। প্রবাসীরা অপেক্ষাকৃত কম বেতনে চাকরি নিয়ে তাদের কর্মস্থলে বহাল রয়েছেন। সে কারণে রেমিটেন্স কমছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।