Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে বোরকা পরা ভোটারদের নিয়ে সন্দেহ বিজেপির

| প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:৫৬ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের উত্তর প্রদেশে এখন বিধানসভার ভোট নেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি শেষ দুই দফার ভোট-গ্রহণের আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বলেছে, বোরকা পরে যারা ভোট দিতে আসবেন, তাদের পরিচয় যেন ভাল করে খতিয়ে দেখা হয়। বোরকা পরে অনেক পুরুষ নাকি ভোট দিয়ে যাচ্ছেন- এরকম খবর পেয়েছে তারা।
বিজেপির এই দাবিতে মুসলিম সমাজ ক্ষুব্ধ হয়ে বলছে, এটা তাদের অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় আর ধর্মের ভিত্তিতে ভোট মেরুকরণের প্রচেষ্টা। উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য গতকাল ষষ্ঠ দফার ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী বুধবার শেষ দফার ভোট- যার মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে এলাকার সংসদ সদস্য, সেই বারানসিও।
শেষ দুই দফার এই ৮৯টি আসনে ভোটের ঠিক আগেই ভারতীয় জনতা পার্টি নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে যে, বোরকা পরে ভোট দিতে আসবেন যারা, তাদের পরিচয় ভাল করে খতিয়ে দেখা হোক। আগের দফার নির্বাচনগুলির সময়ে নাকি দলীয় কর্মীরা জানিয়েছেন যে, বোরকা পরে অনেক পুরুষ মানুষ ভোট দিয়ে গেছেন। ওই ভুয়া ভোটারদের রুখতেই বোরকা পরা ভোটারদের পরিচয় খতিয়ে দেখার দাবি।
বিজেপির উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুখপাত্র বিজয় পাঠক বলেছেন, ‘অনেক এলাকা থেকেই কর্মীরা জানিয়েছেন যে, বোরকা পরে পুরুষ মানুষরা ভোট দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু বুথে মহিলা ভোট কর্মী নেই বলে বোরকার আড়ালে আসলে পুরুষ আছে না নারী, সেটা খতিয়ে দেখা যাচ্ছে না’।
মি. পাঠক আরও বলেছেন, এই দাবি তোলার মধ্যে কোনও রাজনীতির বিষয় নেই- কোনও ধর্মীয় বিষয়ও নেই। তবে তাকে যখন জিজ্ঞাসা করি যে, গ্রামীণ অঞ্চলে তো বহু হিন্দু নারীও গলা পর্যন্ত ঘোমটা দিয়ে ঢেকে বাইরে বের হন- তাদের পরিচয় খতিয়ে দেখার আবেদন কেন করা হল না, উত্তরে মি. পাঠক জানিয়েছেন যে, হিন্দু নারীরা তো শাড়ি পরে- কোনও পুরুষ তো আর শাড়ি পরে ঘোমটায় মাথা ঢেকে ভোট দিতে আসবে না।
বিজেপির এই দাবিকে অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় বলে অভিহিত করছে মুসলিম নারী সংগঠনগুলি। মুসলিম উইমেন পার্সোনাল ল’ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও লখনৌতে একটি মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা শাহিস্তা আম্বার বলেন, ‘বিজেপি বা তার মতো অন্য দলগুলো যখন এসব কথা বলে, তাতে তাদের অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়’।
‘তারা ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করছে এসব বলে। আগেই তো তারা ভোট প্রচারে ধর্মের প্রসঙ্গ এনে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ ভঙ্গ করেছে আর এখন তারা একটা বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে,’ বলেন মিসেস আম্বার।
তবে বিজেপি ওই দাবি তোলার পরে গতকালের ভোট-গ্রহণের সময়ে যে বোরকা পরিহিত ভোটারদের পরিচয় খতিয়ে দেখতে বাড়তি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, এমন খবর নেই। উত্তর প্রদেশের জনসংখ্যার প্রায় কুড়ি শতাংশ মুসলমান।
৪০৩ আসনের বিধানসভায় প্রায় ১২০টি আসন এমন রয়েছে, যেখানে মুসলমান ভোটারের সংখ্যা ২০%র থেকে বেশী - অর্থাৎ সেখানে মুসলমানরাই নির্ণায়ক শক্তি বলে মনে করা হয়। রাজ্যের পূর্বাঞ্চল- যেখানে গতকাল ও আগামী বুধবার- শেষ দুই দফার ভোট- সেখানে কোনও কোনও আসনে মুসলমানদের জনসংখ্যা ২৭% পর্যন্তও রয়েছে। সূত্র : বিবিসি বাংলা




 

Show all comments
  • এস, আনোয়ার ৫ মার্চ, ২০১৭, ৮:৪৭ এএম says : 0
    বিজেপি নিজেই একটা সন্দেহভাজন দল।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ