পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হলে দেশে কোনো দলেরই নিবন্ধন থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, আপনারা (সরকার) ইদানীংকালে বলছেন, বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে সে জন্য নাকি নির্বাচনে আসবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এ দেশের জনগণ হলো দেশের মালিক- মোক্তার, আপনারা কেউ না। নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করেই আমরা ইনশাআল্লাহ নির্বাচন করব সেখানে নিবন্ধন বাতিলের প্রশ্ন উঠবে না।
আর যদি এ দেশে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়, সে দেশে আপনারা আমার মনে হয় কোনো দলের নিবন্ধন সেদিন থাকবে না।
সেই পরিস্থিতির দিকে যদি সরকার এ দেশকে ঠেলে দেন, তা হলে তার জন্য এই সরকারকেই দায়ী থাকতে হবে, শেখ হাসিনা দায়ী থাকবেন। আপনি (শেখ হাসিনা) ব্যক্তিস্বার্থে, ব্যক্তিলোভে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেন, তার জন্য আপনাকে দায়ী থাকতে হবে। এই হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।
জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এই আলোচনা সভা হয়।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ সম্পর্কে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি একটি মধ্যমপন্থী গণতান্ত্রিক দল, আমরা সবসময় নির্বাচনের প্রস্তুত দল। যদি অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, যেকোনো সময়ে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত।
আমরা বিশ্বাস করি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে একটি নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করব ইনশাআল্লাহ। সেই সরকারের অধীনেই স্বাধীন মুক্ত পরিবেশে দেশনেত্রীর নেতৃত্বে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বেগম খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা মামলা প্রসঙ্গ টেনে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর তথ্য-উপাত্ত-যুক্তি নেই। ওই সব মামলা সবটাই বানোয়াট ও মিথ্যা, কোনোটাই প্রমাণ করতে পারবে না সরকার। তারা এই মামলা দিয়ে দেশনেত্রীকে মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করে আমাদেরকে দুর্বল করতে চায়। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, দেশনেত্রীকে শাস্তি এই সরকার দিতে পারবে না, কোনো আদালত দিতে পারবে না।
বেগম খালেদা জিয়ার শাস্তি হয়ে যাবে এবং শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবেÑ এই দুইটি বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা মাঠে নেমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উনারা ভাবছেন, জেল-জুলুম দিয়ে খালি মাঠে গোল দেবেন। আমরা বলতে চাই, ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি আগামীদিনে আবার সৃষ্টি করবেনÑ তাহলে আপনারা দিবাস্বপ্ন দেখছেন, তা সম্ভব হবে না। ষড়যন্ত্র বারবার করা যায়, জনগণ এটা এবার বুঝে ফেলেছে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, যারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শাস্তি দিয়ে, বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার স্বপ দেখছেন এবং নানা অপপ্রচার করছেন তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা এই চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। আপনাদের যদি বোধোদয় হয়, সহজ পথে আসুন, গণতন্ত্রের পথে আসুন। বেশিদিন গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করে আপনারা টিকে থাকতে পারবেন না।
অন্যথায় জনগণের যে রোষ ও জনগণের যে ক্ষোভ তা বেশিদিন ঘরের ভেতরে অবস্থান করবে না। অতি শিগগিরই চার দেয়াল থেকে জনগণের ক্ষোভ অতীতে যেভাবে গণঅভ্যুথানের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেই বিস্ফোরণ ঘটবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিচারবহিভর্‚ত হত্যাকাÐকে বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের দুর্বলতা, বিচার ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আটক এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংসতার কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এটা দুর্বল বিচার বিভাগকে আজকে এই সরকার জুজুর ভয় হিসেবে জনগণের সামনে দাঁড় করিয়েছে। কী করছে? বিচারালয়ে নাটক হচ্ছে। দেশনেত্রীকে বিশেষ আদালতে নিয়ে সারাদিন বসিয়ে রাখা হচ্ছে, মানসিকভাবে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সুপরিকল্পিতভাবে সরকার গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে তারা অপপ্রচার করছে যে, বেগম জিয়ার সাজা হয়ে যাবে।
আমি বলতে চাই, বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এরকম মামলা ১/১১ সময়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও দেয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনার চাঁদাবাজি মামলার যদি সাজা না হয়, তাহলে বেগম জিয়ার মামলাটিতেও সাজা দেয়া সম্ভব হবে না।
২০১৬ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাÐের পেছনে সরকারের মদদ রয়েছে বলে ইঙ্গিত করেছে দেশটি।
শুক্রবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছে, অসা¤প্রদায়িক, বহু মতের সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বেসামরিক প্রশাসনের ‘কার্যকর নিয়ন্ত্রণ’ রয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ মো: ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমীন, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নিরপেক্ষ সরকারের নির্বাচনে যাবে বিএনপি
পুরানা পল্টনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে, সেই নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করবে, সেই রকম নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিশ্চয়ই বিএনপি নির্বাচনে যাবে।
আর আপনারা (আওয়ামী লীগ) যুবলীগ-ছাত্রলীগকে দিয়ে প্রশাসনের মধ্যে লোক ঢুকিয়ে ওই নির্বাচন করার আর পুনরাবৃত্তি সম্ভব হবে না বাংলাদেশের মাটিতে। যতই ভয় দেখান না কেন?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আপনি বলেছেন, বিএনপি যদি না আসে রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে যাবে। আরে রেজিস্ট্রেশন কী? আপনারা যখন ’৭৯ সালে, ’৮৬ সালে নির্বাচনে গিয়েছিলেন, কোন রেজিস্ট্রেশনের ওপরে নির্বাচনে গিয়েছিলেন? রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছাটাই বড় রেজিস্ট্রেশন।
মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনরা একটা বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই রেজিস্ট্রেশন প্রথা চালু করেছিল। কারণ তাদের কাছে তাদের প্রভুরা যেভাবে বলেছেন, তোমাদের মাধ্যমে নির্বাচন হবে, সেখান আওয়ামী লীগ আসবে ক্ষমতায়, আওয়ামী লীগ অনেক দিন রাজত্ব করবে। বিএনপিকে রেজিস্ট্রেশন দিয়ে এমনভাবে বাঁধো তারা যাতে তাদের পাতানো নির্বাচনে, প্রহসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হয়। আর আজীবন ক্ষমতার রাজসিংহাসনে শেখ হাসিনা রাজত্ব করবে। আপনি এই সুখস্বপ্ন ভুলে যান ওবায়দুল কাদের। এই দেশটি ছোট হলেও সাড়ে ১৬ কোটি মানুষকে আপনি রেজিস্ট্রেশনের ফিতায় বাঁধবেনÑ সেই সুখস্বপ্ন কোনোদিন আপনাদের পূরণ হবে না।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ‘লিডারশিপ ওয়ার্কশপ’ এই অনুষ্ঠানে বিএনপির আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদলের নুরুল ইসলাম নয়ন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।