Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

ময়মনসিংহে দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গম্বুজ মসজিদে জুমার নামাজ আদায়

তিন’শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন

| প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো. শামসুল আলম খান : ময়মনসিংহ নগরীর চরখরিচা গ্রামে নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গম্বুজের মসজিদ। প্রায় তিন’শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মনোরম, দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদের নাম রাখা হয়েছে মদিনা মসজিদ। শুক্রবার প্রথম জুমার নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে মদিনার মসজিদে নববীর আদলে নির্মিত এ মসজিদটি। দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির আল্লামা মাহমুদুল হাসানের ইমামতিতে নামাজে প্রায় কয়েক হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, বর্তমানে মসজিদটির ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। অত্যাধুনিকতার মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক গম্বুজের এ মসজিদ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন। সুইচ অন করলেই সরে যাবে এর গম্বুজ। তখন মসজিদের ভেতর থেকে দেখা যাবে আকাশ। ফলে এলাকাবাসীর ধারণা, সৌন্দর্য ও নান্দনিকতার দিক থেকে মসজিদটি ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে।
সূত্র জানায়, ২০১১ সালে এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চার তলা বিশিষ্ট মসজিদের ভেতরে কাতার হবে ১৯টি। প্রতি কাতারে ১১০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদে রয়েছে পাঁচটি গম্বুজ। এর মধ্যে চারটি স্থির এবং একটি বৈদ্যুতিক গম্বুজ। উঁচু মিনার রয়েছে দু’টি। এ মিনারের উচ্চতা চারতলা ভবনের উপর থেকে ১৬০ ফুট। মসজিদের কারুকাজে ব্যবহৃত হয়েছে মারবেল পাথর আর কাঠ। কাঠগুলো আনা হয়েছে মিয়ানমার থেকে। ছয় দরজা বিশিষ্ট এ মসজিদে মুসল্লিদের উঠা-নামার জন্য একটি চলন্ত সিঁড়িসহ মোট পাঁচটি সিঁড়ি স্থাপন করা হয়েছে।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনন্য দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদের উদ্যোক্তা মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের আমির, জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম ও জামিয়া মাহমুদিয়া আরবিয়া ইসলামিয়ার মহাপরিচালক আল্লামা মাহমুদুল হাসান। তিনি জন্মস্থান চরখরিচার নিজ বাড়িতে মসজিদটি নির্মাণ করেছেন। মসজিদের পাশে নিজ নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি কওমি মাদরাসা।
মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, মসজিদ মহান রাব্বুল আলামিনের ঘর। অথচ আল্লাহর ঘরকে সুন্দর করার দিকে মনযোগী হই না। এটা ঠিক না। প্রত্যেক মানুষের আল্লাহর প্রতি অপরিসীম প্রেম ও ভালোবাসা থাকতে হবে। সেই মহব্বত ও ভালোবাসা থেকে আল্লাহর ঘর নির্মাণের উদ্যোগ আল্লাহ আমার মাধ্যমে শুরু করিয়েছেন। এর পেছনে অগণিত মুসলমান ধর্মপ্রাণ মানুষের শ্রম-ঘাম রয়েছে।
এদিকে মসজিদের প্রথম জুমার নামাজ আদায়ের আগে এক মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক খলিলুর রহমান, পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সউদী আরবের নবী করিম (সা:) বংশধর হযরত আওলাদে রাসূল আল্লামা শাইখ সৈয়দ নাসির বিল্লাহ মক্কী, মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান, মুফতি আহাম্মদ আলী, মাওলানা শহীদুল্লাহ সরকার, মুফতি আনোয়ার শাহ, আল্লামা আবদুল হক, আল্লামা আবদুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা এইচ এম আবদুর সুবুর, মাওলানা ইদ্রীসসহ দেশ-বিদেশের আলেম উলামাগণ। প্রথম দিনের জুমার নামাজ ও আলোচনা সভায় প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক লোক অংশগ্রহণ করেন।
এতে আয়োজন ও আপ্যায়ন বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম একটি ব্যতিক্রমধর্মী মসজিদ নির্মাণ করায় উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন। তিনি বলেন, আল্লাহর জমিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এ মসজিদ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এ সময় তিনি দুই লাখ টাকা অনুদান ঘোষণা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ