Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেবার মান বাড়াতে দ্রুতই টেকনিউট্রালিটি

| প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফারুক হোসাইন : ভয়েস ও ইন্টারনেট সেবার মান বাড়াতে দ্রুতই টেকনোলজি নিউট্রালিটি (কারিগরি নিরপেক্ষতা) দিতে যাচ্ছে সরকার। ৯০০/১৮০০ মেগাহার্টজ বেতার তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) টেকনিউট্রালিটি ঘোষণার পরপরই ফোরজি নিলামেরও প্রস্তুতি নিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। টেকনিউট্রালিটি হলে এই তরঙ্গ দিয়েই বাংলাদেশে থ্রিজি এবং ফোরজি সেবা দিতে পারবে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। দুটি ব্যান্ডের স্পেকট্রামে টেকনিউট্রালিটি সুবিধা চালু করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, টেলিযোগাযোগ সেবার মান উন্নত করতেই টেকনিউট্রালিটি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। খুব দ্রুতই দুটি ব্যান্ডের স্পেকট্রাম টেকনিউট্রালিটি দেয়া হবে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে অনেক আগে থেকে এসব ব্যান্ডের স্পেকট্রামের টেকনিউট্রালিটি সুবিধা চালু কার্যকর ছিল।
কমিশন এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এতোদিন ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্জে শুধুমাত্র টুজি সেবা দিত মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। অন্যদিকে ২১০০ মেগাহার্জে থ্রিজি সেবা দিচ্ছে তারা। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) ৭০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের বেতার তরঙ্গকে মোবাইল টেলিকম ব্যান্ড হিসেবে ঘোষণা করেছে। অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গ ফোরজি এবং এলটিই মোবাইল ফোন সেবার জন্য বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্রæত এ সেবা চালুর জন্য স্পেকট্রাম নিলামের পরিকল্পনা রয়েছে এবং আগামী নিলামে ৯০০ ও ১৮০০ স্পেকট্রামকে টেকনিউট্রালিটির ঘোষণা দেওয়ার জন্য কাজও শুরু করেছে।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, অপারেটররা অনেক আগেই থেকে ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রামকে টেকনিউট্রালিটি অনুযায়ী এই ব্যান্ড দিয়ে থ্রিজি সেবা দিতে আগ্রহ দেখায়। কিন্তু বিগত সময় বিটিআরসি এ বিষয়ে কোন ধরনের সাড়া দেয়নি। এ বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ৯০০ ও ১৮০০ ব্যান্ডকে টেকনিউট্রালিটি সুবিধা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এই ব্যান্ড দিয়ে অপারেটররা থ্রিজি এবং ফোরজি সেবা দিতে পারবে। অচিরেই এই ব্যান্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে টেকনিউট্রালিটি ঘোষণা করা হবে। এজন্য ইতোমধ্যে কাজ করছে কমিশন। এছাড়াও অব্যহৃত স্পেকট্রাম নিলাম এবং ফোরজি সেবা নিয়ে কাজ করছে বিটিআরসি। তিনি আরও বলেন, থ্রিজি অপারেটরদের ফোরজি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকে নতুন করে লাইসেন্স নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। আর ৭০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের সেম্পট্রাম এখনো বিক্রি হয়নি। সেক্ষেত্রে অপারেটরদের ফোরজি সেবা দেওয়ার জন্য ৭০০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম কেনার পাশাপাশি নতুন লাইসেন্স নিতে হবে।
লার্ন এশিয়ার ফেলো আবু সাঈদ খান এ বিষয়ে বলেন, বিটিআরসি অনেক বিলম্ব করে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ বিশ্বে এসব ব্যান্ডের টেকনিউট্রালিটি সুবিধা পাচ্ছে অনেক আগেই থেকেই। বিটিআরসি অযথা এ বিষয়টিকে আটকে রেখেছিল।
টেকনিউট্রালিটির বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, আমাদের ফোরজি রোল আউটের প্রস্তুতি আছে। দ্রুতই সেটা বাস্তবায়ন করতে চায়। অপারেটরগুলো বলছে টেকনিউট্রালিটি দিলে সেবার মান উন্নত হবে। গ্রাহদের সেবার মান উন্নত করতে আমরা টেকনিউট্রালিটি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি হলে সেবার মান উন্নত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। মন্ত্রী বলেন, টেকনিউট্রালিটি দিলে তারা মান উন্নত করতে বাধ্য থাকবে এবং আমরা চাপ প্রয়োগও করতে পারবো। কারণ এর আগে তারা বলেছে টেকনিউট্রালিটি দিলে সেবার মান উন্নত হবে।
বিটিআরসি ২০১২ সালে একই সঙ্গে থ্রিজি, ফোরজি ও এলটিই লাইসেন্সের জন্য খসড়া নীতিমালা তৈরি করে ওই বছরের ২৭ মার্চ তা চ‚ড়ান্ত করার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠিয়ে দেয়। তখন বিটিআরসি ২০১২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ওই লাইসেন্স নিলামের তারিখ নির্ধারণের প্রস্তাব রেখেছিল। কিন্তু পরে শুধুমাত্র থ্রিজি’র জন্য লাইসেন্স এবং এ সেবার জন্য ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের তরঙ্গ নিলামের মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ওই নিলামে সরকারের হাতে থাকা ৮টি বøকে ২১০০ ব্যান্ডের মোট ৪০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের মধ্যে কোন প্রতিযোগিতা ছাড়াই ৫টি বøকের ২৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি হয়। তার আগে তার আগে সরকারি মালিকানার মোবাইল ফোন কোম্পানি টেলিটককে দেওয়া হয় ওই ব্যান্ডের ১০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম। ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বরের ওই নিলামে সর্বোচ্চ দুইটি বøকের ১০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম কিনে নেয় গ্রামীণফোন। নিলামে অংশ গ্রহণকারী অন্য তিন অপারেটর- এয়ারটেল, রবি ও বাংলালিংক কিনে নেয় একটি করে বøকের মোট ১৫ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম। এরপর ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের অবশিষ্ট নিলামের উদ্যোগ নিয়েও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি বিটিআরসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ