পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারের পক্ষ থেকে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে
বিশেষ সংবাদদাতা : খেলাধুলায় উৎসাহ এবং সহযোগিতা প্রদান করতে সমাজের বিত্তবান, জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের খেলাধুলা আরো এগিয়ে যাবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেছেন, খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপই তার সরকার গ্রহণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই খেলাধুলার জন্য আরো সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। আমরা ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেই ব্যবস্থা আমরা করবো। কাজেই আমরা চাই এই খেলাধুলার দিকে সকলকে আরও মনোনিবেশ করবেন। আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে আমাদের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলার দিকে আরো নজর দিক। এগিয়ে যাক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৬’ এবং ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৬’-এর ট্রফি ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এইটুকুই চাই খেলাধুলার মধ্যদিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা দেশপ্রেমিক হবে, দেশের দিকে আরো নজর দেবে। আমাদের শিক্ষক-অভিভাবক এবং আমাদের যারা জনপ্রতিনিধিরা আছেন বিভিন্ন স্তরে, যারা একটু সচ্ছল ব্যক্তি আছেন এবং প্রত্যেক এলাকার এলাকাবাসী- সকলকেই আমি আহ্বান জানাবো যে, খেলাধুলার প্রতি আমাদের ছেলেমেয়েরা মনোনিবেশ করেছে, তাদেরকে আরো উৎসাহ প্রদান করতে হবে। এর সাথে সাথে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা স্কুলগুলো যেন পায় সেই ব্যবস্থা তারা করবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এমপি। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনসহ মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৬’ এ অংশগ্রহণকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৬৪ হাজার ২৬০টি। মোট ৩২ হাজার ১৩০টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ এ ৬৪ হাজার ১৯৬টি বিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে মোট ৩২ হাজার ৯৮টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। টুর্নামেন্ট দু’টিতে ২১ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫২ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
প্রধানমন্ত্রী স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৬’ এর ফাইনাল ম্যাচ উপভোগ করেন। এতে লালমনিরহাটের তেপুরগাড়ি বিকে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১-০ গোলে রাজশাহীর বড়বাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরাজিত করে শিরোপা জয় করে।
খেলা শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এ ২০১৬ এবং ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৬’ এর বিজয়ী, রানার্সআপ এবং তৃতীয় স্থান অধিকারকারী দল ও খেলোয়াড়দের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ চ্যাম্পিয়ন টইটং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পেকুয়া কক্সবাজার’এর খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের হাতে স্বর্ণ ট্রফি ১ লাখ টাকার প্রাইজমানী এবং খেলোয়াড়দের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকার প্রাইজমানী এবং মেডেল ব্যক্তিগত পুরস্কার হিসেবে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী-রানার্স আপ কামরাঙ্গীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জৈন্তাপুর সিলেটকে রৌপ্য ট্রফি, নগদ ৭৫ হাজার টাকার প্রাইজমানী এবং খেলোয়াড়দের প্রত্যেককে সাড়ে ৭ হাজার টাকার ব্যক্তিগত পুরস্কার তুলে দেন।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’-২০১৬ এ তৃতীয় পশ্চিম আমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বরগুনাকে ব্রোঞ্জকাপ এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং খেলোয়াড়দের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত পুরস্কার প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। আবু হানিফ নোমান টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় এবং মিনার উদ্দিন বুলেট সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জয় করেন। ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৬’এর চ্যাম্পিয়ন তেপুরগাড়ি বিকে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, লালমনিরহাট চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণ ট্রফি এবং নগদ ১ লাখ টাকার প্রাইজমানি এবং প্রত্যেক খেলোয়াড় ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত পুরস্কার ও মেডেল গ্রহণ করেন।
রানার্স আপ বড়বাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রাজশাহীকে রৌপ্যকাপ এবং ৭৫ হাজার টাকার প্রাইজমানী এবং খেলোয়াড়দের প্রত্যেককে মেডেল ও সাড়ে ৭ হাজার টাকার ব্যক্তিগত পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। তৃতীয় বাবুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ধনবাড়ি টাঙ্গাইলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের হাতে দলগত ও ব্যক্তিগত পুরস্কারও তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। মিতু আক্তার টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় এবং রুমা আক্তার টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার লাভ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা খেলাধুলাকে সবসময় গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ, খেলাধুলা আমাদের ছেলেমেয়েদের মেধা বিকাশের সুযোগ দেয়, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে তোলে এবং সেই সাথে সাথে তারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।
তিনি বলেন, টুর্নামেন্ট দু’টিতে ২১ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫২ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এত বিপুলসংখ্যক ছেলেমেয়েদের অংশগ্রহণে এধরনের ফুটবল টুর্নামেন্ট বিশ্বে বিরল। এজন্য আমি আয়োজক, খেলোয়াড়, বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানাই।
প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের দেশের খেলাধুলা আরো এগিয়ে যাক। ছেলে-মেয়ে সকলেই যেন এই খেলায় অংশ গ্রহণ করে। এজন্য আমরা বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং মেয়েদের জন্য ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের’ আয়োজন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় স্টেডিয়ামে আসার আগে আজকের খেলাঘরে টিভি সেটের সামনে বসেও দেখেছেন উল্লেখ করে উভয় দলের প্রশংসনীয় ক্রীড়া নৈপুণ্যের প্রশংসা করে বলেন, এরাই একদিন আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য এই দেশ আমাদের এগিয়ে যাবে সর্বক্ষেত্রে। আজকে যেমন আমরা আমাদের খেলাধুলাটাকে একটি প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রে নিয়ে যেতে পেরেছি। তাছাড়া, আমাদের মেয়েরাও ভাল খেলছে। আমাদের মেয়েরা এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলে আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। ভারতে অনুষ্ঠিত নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় আমরা রানার-আপ হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী এসময় প্রত্যেক উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম তৈরীর তার সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি তার সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক স্কুলে খেলাধুলার সরঞ্জামাদি প্রদানের কথাও উল্লেখ করেন।
বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী অগ্নিঝরা এই মার্চ, আমাদের স্বাধীনতার মাস উল্লেখ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, জাতীয় চার-নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতিও সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী স্টেডিয়ামে আয়োজিত বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়ের মনোরম ডিসপ্লেও উপভোগ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।