Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে দেশের পরিণতি ভয়াবহ হবে : আ স ম আবদুর রব

| প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, আগামী নির্বাচনে যদি মানুষ ভোট দিতে না পারে, সুস্থ্য ভোটের যদি ব্যবস্থা না করা হয়, ৫ জানুয়ারির মতো ভেল্কিবাজির নির্বাচন করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে। দেশের সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নামবে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে ২ মার্চ স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির’ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আজকে যারা ইতিহাস বিকৃত করছে, তাদেরকে একদিন ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলে আ স ম রব বলেন, ২ মার্চ না হলে ৩ মার্চ ও ৭ মার্চ সৃষ্টি হতো না। অগ্নিঝরা মার্চে একটার পর একটা ঘটনা ঘটেই চলেছিল, পয়লা মার্চ, ২ মার্চ, ৩ মার্চ একটা থেকে একটাকে আলাদা করা যাবে না।
তিনি বলেন, ইংল্যান্ড থেকে আমার কাছে একটি চিঠি এসেছে। চিঠির প্রেরক আমাদের সবাইকে একত্রে দেখতে চান (তিনি মঞ্চে উপবিষ্ট সকলকে দেখিয়ে এ কথা বলেন)। দেশে যে অরাজকতা চলছে, সেটা মেনে নেয়া যায় না। সংবিধান সংশোধন করে দেশকে ৯টি প্রদেশে বিভিক্ত করতে হবে। বর্তমান সরকার গায়ের জোরে দেশ চালাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ স্বধীনতার লক্ষে যে পতাকা উত্তোলিত হয়েছিল তার লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র, শোষণ মুক্তি ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা। দেশে আজ গণতন্ত্র থেকে শুরু করে পতাকা উত্তোলনের সব লক্ষ্যকে বিপন্ন করার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাকেই বিপন্ন করা হচ্ছে। দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা ও সংবিধানের আমূল সংস্কারের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং অবাধ রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা। সকলের অংশগ্রহণমূলক অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ গঠন করে সেখান থেকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিধান করা।
তিনি আরো বলেন, ঔপনিবেশিক ধাঁচের রাজনীতির ধারক বাহকদের বিপরীতে রাজনীতির দ্বিতীয় ধারার ভিত্তিতে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের বিপুল বেকার সমস্যা সমাধান, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সকল উপজেলায় উপজেলা শিল্পাঞ্চল গঠন এবং উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোট কার্যকর করা। এর জন্য উপনিবেশিক ধারার দলসমূহের বিপরীতে রাজনীতির দ্বিতীয় ধারার ভিত্তিতে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, বর্তমান সরকার ভুলে গেছে যে, তারা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া দল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে তারা বিক্রি করছে। এভাবে চলতে থাকলে আওয়ামী লীগ দেউলিয়া হয়ে যাবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ব্যবসা করছে। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। এভাবে চলতে দেয়া যায় না। আমাদেরকে এখন বিভেদ ভুলে দলীয় স্বার্থ ও ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের স্বার্থে একসাথে এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।
জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা জনগণের টাকায় জনসভা করে দলের জন্য ভোট চাচ্ছেন যা আইন ও নৈতিকতা বিরোধী। দেশকে অপরাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে ছল চাতুরীর হাত থেকে রক্ষা করতে হলে উদার গণতান্ত্রিক ও বাম রাজনৈতিক শক্তিকে পিছুটান পরিহার করে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।
২ মার্চ স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির’ আহ্বায়ক, বিশিষ্ট গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়জীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর, জেএসডি নেতা এম এ গোফরান, আতাউল করিম ফারুক, মো. সিরাজ মিয়া, মিসেস তানিয়া ফেরদৌসী, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, মোশারফ হোসেন, এস এম সামসুল আলম নিক্সন, তৌফিকুজ্জামান পিরাচা প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ