পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ট্রাকচালক মির হোসেন মিরুর রায়কে কেন্দ্র করে সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘট চলে দীর্ঘ ৩২ ঘণ্টা। এরপর গতকাল ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। সাভারের ঝাউচরে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। খোদেজা বেগমকে হত্যার দায়ে চালক মির হোসেন মিরুকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। গত সোমবার ঢাকার পাঁচ নম্বর জজ কোর্ট থেকে ওই রায় দেয়া হয়। ওই ঘটনাটিকে নিছক সড়ক দুর্ঘটনা উল্লেখ করে মঙ্গলবার থেকে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
তবে ঘটনাস্থল সাভারের ঝাউচর গ্রামে গিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে যে তথ্য পাওয়া গেছে তা হলো- এটি সড়ক দুর্ঘটনা নয়, বরং একটি ইচ্ছাকৃত হত্যাকান্ড।
সেদিন কি হয়েছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রত্যক্ষদর্শী নাসিমা বেগম, সলিম মিয়া ও জুলেখা বেগম বলেন, সাভার উপজেলার হেমায়েতপুর এলাকার একটি গ্রাম ঝাউচর। ২০০৩ সালের ২০ জুন ওই গ্রামের নুরু গাজীর স্ত্রী খোদেজা বেগমকে তাদের পারিবারিক রাস্তায় ট্রাকচাপা দেয়া হয়।
তারা বলেন, ওই ঘটনার কয়েক দিন আগে ট্রাকযোগে খোদেজা বেগমের বাড়ির পাশের একটি জমি ভরাটের কাজ করছিল ট্রাকচালক মির হোসেন মিরু। পার্শ্ববর্তী একটি গ্রাম থেকে মাটি এনে খোদেজা বেগমের পারিবারিক একটি রাস্তা দিয়ে মাটি আনার কাজ করা হচ্ছিল।
অনুমতি না নিয়ে ও বাতাসের সঙ্গে ধুলা-ময়লা ছড়িয়ে পড়ার কারণ দেখিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে মাটি আনার প্রতিবাদ জানান খোদেজা বেগম ও তার স্বামী। তারা ওই রাস্তা দিয়ে ট্রাক চলাচল বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। এ নিয়ে ট্রাকচালক মিরু এবং তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটিও হয়।
২০০৩ সালের ২০ জুন খোদেজা বেগমের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ওই রাস্তা দিয়ে আবারও মাটির ট্রাক নিয়ে আসে ট্রাকচালক মিরু। এ সময় ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়ে বাধা দেন খোদেজা বেগম, তার স্বামী এবং প্রতিবেশীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রাকচালক মিরু সবাইকে রাস্তা থেকে সরে দাঁড়াতে বলেন। অন্যথায় সবার ওপর ট্রাক চালিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এরপরও তারা রাস্তা থেকে না সরলে ট্রাকচালক মিরু গাড়িতে উঠে প্রথমে একটু পেছনে নিয়ে আসেন ট্রাক। পরে দ্রæতবেগে এসে রাস্তায় অবস্থানকারীদের ওপর ট্রাক চালিয়ে দেয়। এ সময় অন্যরা রাস্তা থেকে সরে যেতে পারলেও খোদেজা ট্রাকের সামনের চাকা এবং পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
খোদেজা বেগমের ছেলে বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই দুই দফা তদন্ত করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। ঘটনাটি যে একটি হত্যাকান্ড সেটি পুলিশের তদন্ত এবং আদালতের সাক্ষ্য প্রমাণেও প্রমাণিত হয়েছে। দীর্ঘ ১৩ বছরের বিচারাধীন এই মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত।
খোজেদার স্বামী নুরু গাজী বলেন, এটি অন্য সড়ক দুর্ঘটনার মতো ঘটনা নয়। ঘটনাটি সড়ক কিংবা কোনো মহাসড়কে ঘটেনি। শুধু ট্রাকের মাধ্যমে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে বলেই একে সড়ক দুর্ঘটনা ধরা যায় না। এটি একটি ইচ্ছাকৃত হত্যাকান্ড। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম দস্তগীর বলেন, ঠান্ডা মাথায় ট্রাকচাপা দিয়ে খোদেজা বেগমকে নিজ পারিবারিক রাস্তায় হত্যার ঘটনায় ৩০২/৩৪ ধারায় আসামি মিরু হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ ঘটনায় তাকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। এটি কোনো সড়ক দুর্ঘটনা নয়, এটি ঠান্ডা মাথার হত্যাকান্ড।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।