পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সার্কের নতুন মহাসচিবের দায়িত্ব নিচ্ছেন পাকিস্তানের আমজাদ হোসেন সিয়াল
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : অবসান হলো পাকিস্তান-ভারত দ্বন্দ্বের। ভারত সম্মতি দেয়ায় অনুমোদন পেলেন সার্কের নতুন মহাসচিব পাকিস্তানি কূটনীতিক আমজাদ হোসেন বি. সিয়াল। আজই তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। ফলে আবারো গতিশীল হচ্ছে সার্কের কার্যক্রম। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শক্তিশালী অবস্থানের কারণেই গতি ফিরে পেলো সার্ক। গতকাল মঙ্গলবার সার্কের বিদায়ী মহাসচিব নেপালি কূটনীতিক অর্জুন বাহাদুর থাপার মেয়াদ শেষ হওয়ায় আজ বুধবার পাকিস্তানের কূটনীতিক আমজাদ হোসেন সিয়াল সার্কের ১৩তম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।
প্রসঙ্গত, ভারত-পাকিস্তান বিরোধের ফলেই মূলত গতি হারাচ্ছিল সার্ক। তৈরি হয় নানান জটিলতা। কিন্তু মহাসচিব নিয়ে জটিলতার অবসানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শক্তিশালী বার্তাই আবারো গতিশীল করছে সার্ককে। সম্প্রতি ঢাকা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎকালে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব জয়শঙ্কর বাংলাদেশের মনোভাব জানতে সার্কের স্থবিরতার প্রসঙ্গ তুলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবকে স্পষ্টই জানিয়ে দেন, আমরা এটি ডুবে যেতে দেব না। এছাড়া সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের ৪৭তম সম্মেলনের ‘হারনেসিং রিজিওনাল কো-অপারেশন ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক আলোচনায়ও শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন যে, সার্কের কার্যকারিতা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। আট জাতির আঞ্চলিক সংস্থাটি খুব ভালোভাবে সক্রিয় আছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মানে সভাকক্ষের সার্ক সদস্য দেশসহ অন্যরা ভালোভাবেই বুঝে নেন। কথাটা যখন শেখ হাসিনা বলছেন, অবিশ্বাসের কিছু নেই।
এছাড়া ঢাকায় যখন পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কচ্ছেদের কথা বলা হচ্ছিল বিভিন্ন মহল থেকে, তখনো প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি চলবে, সম্পর্কও থাকবে। এমন সদর্থক কূটনীতি আর কী হতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষ্যও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি। সার্কের বিদায়ী মহাসচিব ঢাকায় বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে এলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তাকে বলেন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সার্ক গড়ায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সব সময় সংস্থাটিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের উন্নতির জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে।
জানা যায়, সার্কের রীতি অনুযায়ী সদস্য দেশগুলোর ইংরেজি নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী নেপালের পর পাকিস্তানেরই সার্ক মহাসচিব হিসেবে তার দেশের কাউকে মনোনয়ন দেয়ার কথা। পাকিস্তান সে দেশের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক আমজাদ হোসেন সিয়ালকে মনোনয়ন দেয়ার পর সদস্য দেশগুলো গত বছরের মার্চ মাসে এ ব্যাপারে নীতিগত সম্মতি জানিয়েছিল। তবে বিষয়টি সার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল।
গত জানুয়ারিতে ভারতের পক্ষ থেকে নেপালে সার্ক সচিবালয়কে পাঠানো কূটনৈতিক বার্তায় সার্কের নতুন মহাসচিব নিয়োগে আপত্তি জানায়। ওই বার্তায় বলা হয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া সার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অনুমোদিত হতে হবে। এ প্রেক্ষিতে সার্ক মহাসচিবের পদটি শূন্য থাকার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। কারণ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকটি পাকিস্তানে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের কারণে ২০১৬ সালের নভেম্বরে ইসলামাবাদে সার্কের ঐ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি।
সূত্র জানায়, ভারত শেষ পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ছাড়াই নতুন মহাসচিব নিয়োগের ব্যাপারে সায় দেয়ায় সৃষ্ট জটিলতার অবসান হয়। সার্কের ইতিহাসে এবারই প্রথম দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র একদিন আগে মহাসচিব অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত হলো। বাংলাদেশ তার অনুমোদনের আনুষ্ঠানিকপত্র গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সার্ক সচিবালয়ে পাঠিয়েছে। গত সপ্তাহে ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপ তাদের অনুমোদন দেয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।