পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : জোরালো আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে অবশেষে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দেখতে তদন্ত কমিশন পাঠাচ্ছে মিয়ানমার। বিশেষ করে জেনেভায় অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সভায় রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে সমালোচনা পাশ কাটাতে মিয়ানমার এ পদক্ষেপ নিচ্ছে। ঢাকা ও ইয়াঙ্গুনের কূটনৈতিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সভা শুরু হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রদূত মিউ মিন্ট থানও গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে মিয়ানমার সরকারের আগ্রহের বিষয়টি
জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবরের পর মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর হামলার কারণে শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এছাড়া ৭০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। বিশ্বব্যাপী এ গণহত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ শুরু হলে মিয়ানমার ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ট সুয়েকে প্রধান করে এ সামগ্রিক অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করে। ওই কমিশনের কাজ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, তদন্ত কমিশনের পক্ষ থেকে মিয়ানমার যত শিগগিরই সম্ভব একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে চায় কক্সবাজার পরিদর্শনের জন্য।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রতিনিধি দলে কতজন সদস্য থাকবেন, কতদিন থাকবেন, কিভাবে কাজ করবেন, পরে এ ব্যাপারে তারা বিস্তারিত জানাবেন। প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে সম্মত এবং প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরে এ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসবে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ইয়াংঘি লি রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখার জন্য কক্সবাজার সফর করেন। রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা নিরসনের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের ওই বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার। ঢাকা ও কক্সবাজারে চার দিনের সফর শেষে ইয়াংঘি লি বলেন, আমি যা ধারণা করেছিলাম, তারও কয়েকগুণ বেশি সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন রোহিঙ্গারা।
কক্সবাজার সফরকালে ইয়াংঘি লি রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনেন। এর মধ্যে রয়েছেন রোহিঙ্গাদের গলা কেটে ফেলা, গুলিবর্ষণ করা, বন্দি করে ঘরে আগুন দেয়া, শিশুদের আগুনে ছুড়ে মারা, গণধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন নির্যাতনের মতো ঘটনার বর্ণনা।
তিনি বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার পর তার মনে হয়েছে, রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী যে মাত্রায় সহিংসতার শিকার হয়েছে, তা যে কারও কল্পনার অতীত। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দুর্দশা লাঘবে দেশটির সরকারকে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতেও বলেন তিনি। এছাড়া রোহিঙ্গাদের প্রতি সংঘটিত অপরাধের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তেরও দাবি জানান।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের সরকারি কমিশনকে বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়টি প্রথমেই দেশটি তার সরকারি গণমাধ্যমে প্রচার করেছে। এরপর বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছে। বিতর্কিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও বর্তমানে মিয়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ট সিউকে প্রধান করে গত ডিসেম্বরে ‘মংডু অঞ্চলবিষয়ক তদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে। গত মাসে কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ইয়াঙ্গুনে ২০০৭ সালে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বে স্যাফরন রেভল্যুশন (গেরুয়া বিপ্লব) হয়েছিল। ভিক্ষুদের দমনে সামরিক সরকারের রক্তাক্ত অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন জেনারেল মিন্ট সিউ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।