পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
তানোর (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহীর তানোরে বিসিআইসির অনুমোদিত সার ডিলারদের বিরুদ্ধে জমাটবাঁধা ও গুণগতমান কমে যাওয়া ইউরিয়া সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, এ সব সার কিনে তারা প্রতারিত হচ্ছেন। তারা জানান, বাঘাবাড়ী নৌবন্দর ও রাজশাহী বাফার গুদামে দীর্ঘদিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় এ সব ইউরিয়া সার জমাট বেঁেধ যাওয়ায় সারের গুণাগুণ কমে গেছে। অধিক মুনাফার আশায় তানোরের বিসিআইসির একশ্রেণীর ডিলার এ সব সার কমদামে কিনে এনে বেশি দামে কৃষকদের কাছে বিক্রি করছে। তারা বিভিন্ন কৌশলে কৃষকদের এ সব সার কিনতে বাধ্য করছে। আনুপাতিক হারে এ সব ইউরিয়া সার না কিনলে অন্যান্য সার কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে না বলেও কৃষকরা অভিযোগ করেছেন। ফলে এ সব ইউরিয়া সার গুণগত মানসম্পন্ন নয় জেনেও কৃষকরা বাধ্য হয়ে কিনছেন। চলতি বোরো মৌসুমে ডিলারদের কাছ থেকে এসব জমাটবাঁধা ইউরিয়া সার কিনে জমিতে প্রয়োগ করার পর কোন কাজেই লাগছে না।
তানোরের চান্দুড়িয়া ইউপির চান্দুড়িয়া উপরপাড়া গ্রামের একাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, তারা মেসার্স জামান ট্রেডার্স থেকে ডিএপি ও পটাশ সার কিনতে গেলে সারের সঙ্গে তাদের আনুপাতিক হারে জমাটবাঁধা ইউরিয়া সার কিনতে বাধ্য করা হয়েছে। অথচ ইউরিয়া সার ফসলের জমিতে প্রয়োগ করে কোনো উপকারে আসেনি। তানোরের পাঁচন্দর এলাকার কৃষক জাইদুর রহমান (৪৫) অভিযোগ করে বলেন, তানোর পৌর এলাকার মেসার্স সুমন ট্রেডার্স থেকে তিনি ইউরিয়া (জমাটবাঁধা) কিনে ফসলের জমিতে প্রয়োগ করে ফসলের কোনো কাজে লাগেনি তিনি বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর ও রাজশাহী বাফার গুদামের বাইরে দীর্ঘদিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় এ সব সার জমাটবেঁধে যাওয়ায় গুণাগুণ কমে গেছে। যে কারণে কৃষকের কোন উপকারেই আসছে না। বিআইসির এক ডিলার বলেন, জমাট বাধা ইউরিয়া সার উত্তোলন করে আমরা নিজেরাও গ্রাহকদের কাছে লজ্জিত। নিম্নমানের ও গুণগতমান কমে যাওয়ায় এ সব সার কৃষকরা সহজে নিতে চাচ্ছে না। আবার নিলেও পরক্ষণেই এসে নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত করছে। তিনি বলেন, বাফার লেবার, গুদাম ও বিসিআইসির একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারির সমন্বয়ে গঠিত সক্রিয় একটি সিন্ডিকেট বস্তাপ্রতি আনুপাতিক হারে উৎকোচ না পেলে বিভিন্ন কৌশলে তারা ডিলারদের জমাটবাঁধা সার নিতে বাধ্য করছে।
রাজশাহী বাফার গুদামের জমাটবাঁধা ইউরিয়া সার জমাট ভেঙে আবার নতুন ব্যাগে রিপ্যাক করে ডিলারদের গছানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে তানোর বিসিআইসির সার ডিলার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বাবু বলেন, জমাটবাঁধা সারগুলোর সত্যই গুণগতমান কম, অনেকদিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় এসব সারের গুণাগুণ কমে গেছে।
তিনি বলেন, আমরা নিজেরাও এসব জমাটবাঁধা সার তুলতে চাই না। কিন্তু লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েই আমাদের এ সব সার উত্তোলন করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ইউরিয়া সারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, এ সব সারের বিষয়ে কৃষকের কাছে থেকে তিনি এখনো কোনো অভিযোগ পাননি।
এ ব্যাপারে রাজশাহী বাফার গোডাউন ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সর্বশেষ মাসছয়েক আগে এগুলোর মান পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতেই প্রমাণিত এগুলো এখানো ব্যবহার উপযোগী আছে। এ সারগুলো বস্তায় ভরে কিছু কিছু করে ডিলারদের দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজশাহী বাফার গোডাউনে প্রায় ৫ হাজার টন জমাট ইউরিয়া সার মজুদ আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।