Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ ছাড় পাবেন অপ্রাপ্তবয়স্ক পুরুষরাও

আলোচিত বাল্যবিবাহ নিরোধ বিল পাস

| প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দুই বছরের কারাদন্ড ও এক লাখ টাকার দন্ডের বিধানসহ ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ শর্তসাপেক্ষ অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের বিয়ের বিধান রেখে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিল-২০১৭’ পাস করেছে জাতীয় সংসদ। তবে এ জন্য আদালতের নির্দেশ এবং মাতা-পিতা বা অভিভাবকের সম্মতিক্রমে বিধি মোতাবেক বিয়ে অনুষ্ঠানের শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। বিলে বাল্যবিবাহ অর্থ করা হয়েছে, এইরূপ বিবাহ যার কোনো পক্ষ বা উভয় পক্ষ অপ্রাপ্তবয়স্ক। এছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্ক অর্থ করা হয়েছে, অপ্রাপ্ত বয়স্ক অর্থ বিবাহের ক্ষেত্রে ২১ বৎসর পূর্ণ করেননি এমন কোনো পুরুষ এবং ১৮ বছর পূরণ করেননি এমন কোনো নারী। এছাড়া নতুন প্রণীত এ আইনে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষ বাল্যবিবাহ করলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এ জন্য দুই বছরের কারাদন্ড বা এক লাখ টাকা অর্থদন্ড আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো নারী বা পুরুষ বাল্য বিয়ে করলে এক মাসের আটকাদেশ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় ধরনের শাস্তিযোগ্য হবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ সংসদীয় কমিটির সংশোধিত আকারে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত কমিটি গঠন, জনমত যাচাই ও সংশোধনী প্রস্তাবসমূহ কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিলের ১৯ ধারায় বিশেষ বিধান এনে বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং মাতা-পিতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিয়ে সম্পাদিত হলে তা এই আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে না’।
ব্রিটিশ আমলে প্রণীত ‘চাইল্ড ম্যারেজ রেসট্রেইন্ট অ্যাক্ট-১৯২৯’ বাতিল হলেও এই আইনের অধীনে চলমান মামলার ক্ষেত্রে তা প্রয়োজ্য হবে না মর্মে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে। বিলে এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ সংঘটনের দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ দাখিল করার বিধান রাখা হয়েছে। বাল্যবিবাহ সম্পাদন বা পরিচালনা বা বাল্যবিয়েতে বাধ্য করা হলে পিতা-মাতা বা অভিভাবক বা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন এবং সর্বনি¤œ ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদÐ ও ৫০ হাজার টাকার জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া বাল্যবিবাহ নিবন্ধনের জন্য নিকাহ রেজিস্ট্রারের লাইসেন্স বাতিলসহ অনুরূপ শাস্তি আরোপের বিধান বিলে রাখা হয়েছে। তবে আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধে উদ্যোগী হওয়ার শর্তে ইচ্ছা করলে মুচলেকা নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অপরাধের দায় থেকে খালাস দিতে পারবেন। বিলে বাল্যবিবাহ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও শাস্তি বিধানের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাল্যবিয়ে বন্ধে সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি করার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাল্যবিবাহ নিরোধের লক্ষ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ, শিশু অধিকার সনদ স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে এবং শিশু আইন ২০১৩-তে বর্ণিত শিশু সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ১৯২৯ রহিত করে যুগোপযোগী বিলটি প্রণয়ন করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ