পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ভুয়া ঠিকানায় সিকিউরিটির চাকরি নেয়া। এরপর ভল্ট ভেঙে ডাকাতি। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। এরকম একটি চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। চক্রটি পরিকল্পিতভাবে সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি নিতো। পরে গার্মেন্টস, ব্যাংক, স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করত তারা। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের নিট প্লাস গার্মেন্টসে ডাকাতির ঘটনায় এই চক্রের মূল হোতাকে গ্রেফতারে উদ্ঘাটন হয় রহস্য। উদ্ধার করা হয় এক কোটি ১৭ লাখ টাকা, একটি অস্ত্র, পাঁচ রাউন্ড গুলি।
গ্রেফতারকৃতরা হলোÑ মাহাবুবুর রহমান ওরফে ফিরোজ মোল্লা ওরফে আবদুল খালেক মিয়া (৫১), খলিলুর রহমান রানা ওরফে রানা সর্দার ওরফে ফিরোজ (৪০), বেলায়েত হোসেন ওরফে আকন্দ (৪২), ইকবাল হোসেন রুবেল (৩৭), ফারুক হোসেন ওরফে বাবুল ওরফে আলম শিকদার (৫০) ও উজ্জ্বল বিশ্বাস (৩৪)।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে অয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ডাকাত দলের দুই সদস্য ছদ্মনামে চাকরি নেয় একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে। এরপর এক দিনের মধ্যেই কালিয়াকৈরের নিট প্লাস গার্মেন্টসে নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি হয় তাদের। তারা জানতে পারে, স্টাফদের বেতনের মোটা অঙ্কের টাকা ভল্টে রাখা হবে। বাইরে থাকা বাকি সদস্যদের খবর দেয় তারা । রাতে অন্য নিরাপত্তা প্রহরীদের অজ্ঞান করে ভল্ট ভেঙে লুট করে নেয় তিন কোটি ৪১ লাখ টাকা।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, এই চক্রটি ভুয়া নাম, ঠিকানা ব্যবহার করে বিভিন্ন সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে ডাকাতি করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। গার্মেন্টে ডাকাতির ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় মামলা দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইশতিয়াম আহমেদ পাটোয়ারী। মামলাটির ছায়া তদন্ত করে র্যাব। তারা সংগ্রহ করা সিসিটিভি ফুটেজ থেকে ডাকাতির ঘটনার কিছু তথ্য-উপাত্ত হাতে পায়। জানতে পারে আবদুল খালেক নামের ছদ্মনাম পরিচয়ধারী নিরাপত্তারক্ষীর প্রকৃত নাম মাহাবুবুর রহমান এবং আলম শিকদারের প্রকৃত নাম ফারুক হোসেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে রোববার থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত একযোগে খুলনা, রাজশাহী, কুমিল্লা, বরিশাল, ঢাকা ও গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। গ্রেফতার করে ছয়জনকে। একইসাথে লুট হওয়া টাকার মধ্যে এক কোটি ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, মাহাবুবুর রহমান ও খলিলুর রহমান রানা এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। তাদের সহযোগিতায় মাহাবুব ও ফারুক বিস্কুট ও পানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে নিরাপত্তারপক্ষীদের অচেতন করে। পরে অচেতন অবস্থা নিশ্চিত হলে দলের অন্য সদস্যের সহযোগিতায় ডাকাতি করে তারা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর মৌচাকের নিট প্লাস লিমিটেড গার্মেন্টসে দুর্ধর্ষ ডাকাতির মাধ্যমে তিন কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার টাকা লুট হয়। পরদিন সকালের শিফটের নিরাপত্তারক্ষীরা গার্মেন্টসে ঢুকেই চারজন নিরাপত্তাকর্মীকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খুঁজে পাওয়া যায়নি অপর দুই নিরাপত্তাকর্মী আবদুল খালেক মিয়া ও আলম শিকদারকে। অচেতন ওই চারজনকে কোমল পানীয় এবং বি¯ু‹টের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে। এরপর তাদের অন্যান্য বহিরাগত সহযোগীদের সহায়তায় ডাকাতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
র্যাব জানায়, মাহাবুব ও ফারুক গার্মেন্টস কোম্পানিতে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে একাধিকবার বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করেছে। রানা গার্মেন্টসের লটের ব্যবসা করে এবং রুবেলের মিরপুরে-১ এ রোজ ফ্যাশন নামে একটি গার্মেন্টসের কাপড়ের দোকান রয়েছে। রানা ও রুবেল লুটের টাকা দিয়ে ছোটখাটো একটি গার্মেন্টস চালু করা জন্য ১৫টি গার্মেন্টস মেশিনারিজ ক্রয়ও করে। অপর সদস্য বেলায়েত বর্তমানে ঝালকাঠিতে হাঁস-মুরগির খামার ব্যবসার সাথে জড়িত। তাদের সহযোগী উজ্জ্বল গোপালগঞ্জে মোবাইল ও টেলিকম ব্যবসার সাথে জড়িত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।