পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে দলের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড। মনোনয়ন দৌড়ে অংশ নেয়া জেলা পর্যায়ের ৯ আওয়ামী লীগ নেতা থেকে বেছে নেয়া হয়েছে একজনকে। আর সেই সৌভাগ্যবান মানুষটি হলেন বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আফজল খানের কন্যা আনজুম সুলতানা সীমা। একটি রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা এ নারী প্রার্থী কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে এই প্রথমবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হচ্ছেন।
গতকাল রোববার রাতে ঢাকা ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে আনজুম সুলতানা সীমার নাম ঘোষণা করেন। এ খবর বাইরে আসার পর কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষমাণ শতশত নেতাকর্মী আনন্দ প্রকাশ করে এবং দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান। চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে সীমার নাম ঘোষণার পর তিনি মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। গত শনিবার রাতে মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই প্রার্থী কুমিল্লা সদরের এমপি হাজী আকম বাহাউদ্দিন বাহারের সমর্থনপুষ্ট আরফানুল হক রিফাত ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আফজল খান কন্যা আনজুম সুলতানা সীমা দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করেন। এদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর পক্ষে দলীয় নেতারা গতকাল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির জটিল সমীকরণের জায়গাটি সহজ করে দিলেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আর এমনটি মনে করছেন জেলার সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতারা। তাদের মতে, সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিয়েছে দল। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত আসন্ন কুমিল্লা সিটি নির্বাচন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও রাজপথের বিরোধীদল বিএনপির জন্য অনেক গুরুত্বের এবং একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘসময় বিলুপ্ত কুমিল্লা পৌরসভা ও সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কর্তৃত্ব বিএনপি দলীয় প্রার্থীর দখলে ছিল। আসন্ন সিটি নির্বাচনেও মেয়র পদটি বিএনপি আবারো তাদের প্রার্থীর দখলে রাখার জন্য যেমন মরিয়া হয়ে উঠবে, তেমনি বিভাগ বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে থাকা কুমিল্লা সিটির মেয়র পদটি আওয়ামী লীগের দখলে আনার প্রাণপণ চেষ্টা ফুটে উঠবে ভোটের মাঠে। জেলার আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন, সকল অনৈক্য ভুলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনার লক্ষ্যে দলের সবাই কাজ করবে।
এদিকে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে অবশেষে দলীয় প্রার্র্থী হিসেবে সদ্য সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। শনিবার রাতে ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাতকার নেয়ার পর বেগম খালেদা জিয়া কুসিক নির্বাচনে সাক্কুকে মনোনয়ন দেন। এসময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত দলীয় প্রত্যয়নপত্র সাক্কুর হাতে তুলে দেন। সাক্কুকে মেয়র পদে দল থেকে মনোনয়ন দেয়ার পর বেগম খালেদা জিয়া কুমিল্লা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থী সাক্কুর পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান। এসময় কুমিল্লা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমির উর রশিদ ইয়াছিন উপস্থিত ছিলেন। দলীয়ভাবে মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর গতকাল রোববার বিকেলে কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন ম-লের কাছ থেকে মেয়র পদে মনিরুল হক সাক্কুর মনোনয়রপত্র সংগ্রহ করা হয়। সাক্কুর ছোট ভাই অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকুকে সঙ্গে নিয়ে কুমিল্লা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া ও মহানগর বিএনপি নেতা আবদুর রউফ চৌধুরী ফারুক জেলা নির্বাচন অফিস থেকে সাক্কুর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
এদিকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর আজ সোমবার কুমিল্লায় আসছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। তার আগমনের খবরে ইতোমধ্যে কুমিল্লা নগরীতে বিএনপি, যুবদল ছাত্রদল, শ্রমিকদলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে ওঠেছেন। দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে সিটি নির্বাচনে সাক্কুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন দলের নেতাকর্মীরা। দলের জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা ছাত্রদল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইদানীং সময়ে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসন করে সবাইকে একই প্লাটফর্মে এনে সাক্কুর পক্ষে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতা জানান, নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে সদর উপজেলার উপনির্বাচন এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেহেতু বিএনপি অংশ নিয়েছে, তাই বিষয়টি দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেইদিক থেকে কুমিল্লায় এ দুইটি নির্বাচন বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আর এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কুমিল্লা বিএনপি এক ও অভিন্ন। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিজয়ের জন্য সবাই নিবেদিত হয়ে কাজ করবে। মেয়র প্রার্থী সাক্কুর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, আগামীকাল মঙ্গলবার অথবা স্বাধীনতা মাসের প্রথমদিন বুধবার দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সাক্কু স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মেয়র পদে তার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ি মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ২ মার্চ। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ৫ এবং ৬ মার্চ। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৪ মার্চ। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩০ মার্চ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।