Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্দর থেকে মালামাল খালাস বন্ধ, কোটি টাকার পচনশীল মাছ নষ্ট হচ্ছে

| প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট
বেনাপোলে আটকা পড়েছে ভারত ফেরত শত শত পাসপোর্ট যাত্রী

বেনাপোল অফিস : খুলনা বিভাগের দশ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে বেনাপোল চেকপোস্টে আটকা পড়েছে ভারত ফেরত শত শত বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রী। অপরদিকে আমদানিকৃত মালামাল নিয়ে প্রায় চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ছে বেনাপোল বন্দরে। বন্দর থেকে মালামাল খালাস বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, সড়ক দুর্ঘটনায় সাংবাদিক মিশুক মুনীর ও চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদসহ ৫জন নিহত হওয়ার মামলায় বাস চালক জমির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয় আদালত। এর প্রতিবাদে রোববার সকাল থেকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এ ধর্মঘট শুরু হয়। বেনাপোল বন্দরে কোটি টাকার পচনশীল ৫ ট্রাক মাছ আটকা পড়েছে ধর্মঘটের কারণে। ইতিমধ্যে মাছের ট্রাকের বরফ গলে মাছ নষ্ট হওয়ার আশংকা করছে ভরতের উড়িষ্যা থেকে আসা ট্রাক চালক পলাশ প্রামাণিক। বন্দর থেকে পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজসহ বিভিন্ন শিল্প-কলকারখানার কাঁচামাল আটকা পড়েছে।
চট্টগ্রামের ধনিয়া এলাকার বাসিন্দা ক্যান্সারে আক্রান্ত ৮ বছরের শিশু  মোহাম্মদ আলী সাদনান ও তার পিতা আহম্মদ আলী বিকেলে ভারতে ১৫ দিনের চিকিৎসা শেষে ফিরেছেন দেশে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে তারা আটকা পড়েছেন বেনাপোলে। তার বাবা জানান, তার কাছে বেশী পয়সা নেই, কি করে যাবো বাড়িতে ? ভারত থেকে আসা আরেক পাসপোর্ট যাত্রী মাহবুব আলম জানান, তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে অর্থের সংকট রয়েছে তারও। সে সাথে আনা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য উপহার সামগ্রী পরিবহনে জমা রেখে টাকা লোন করবেন এবং থাকবেন পরিবহন কাউন্টারে।
বেনাপোলের সোহাগ পরিবহনের ম্যানেজার আব্দুল জলিল জানান,  মালিক পক্ষের সিদ্ধান্তের কারণে বেনাপোল থেকে সব রুটে পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর থেকে কোন পরিবহন ছাড়বেন না। ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রীরা কেউ বিকল্প উপায়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন আবার কেউ কেউ পরিবহন কাউন্টার, বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, চায়ের দোকানে  অপেক্ষা করছেন।
বেনাপোলে একটি চায়ের দোকানে কথা হয় ভারত থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসা নারায়ণগঞ্জের আবু তাহেরের সাথে। তিনি বলেন, ধর্মঘটের কারণে বেনাপোলে এসে আটকা পড়েছেন। আবাসিক হোটেলগুলোতেও কোনো সিট খালি নেই। কোথায় আশ্রয় নেব। কীভাবে বাড়ি ফিরবো কিছু ভেবে পাচ্ছি না। তাই চায়ের দোকানে বসে অপেক্ষা করছি। কখন বাস ছাড়বে।
বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন জানান, পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে বন্দর থেকে আমদানিকৃত পণ্য খালাস হচ্ছে না। যে সব ট্রাক বন্দর থেকে পণ্য লোড করছে তারা ধর্মঘট শেষ হওয়ার আশায় বন্দরের অভ্যন্তরেই অপেক্ষা করছে। যদি ধর্মঘট দ্রুত প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে বন্দরে ভয়াবহ যানজট হওয়ার আশংকা রয়েছে।
বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ধর্মঘটের ফলে বেনাপোল বন্দরে প্রায় চার শতাধিক ট্রাক আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে বন্দর এলাকায় আটকা পড়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল ও জরুরি অক্সিজেন এবং পচনশীল বিভিন্ন ধরনের পণ্য রয়েছে। দ্রুত সমাধান না হলে আটকে থাকা পণ্য পচে ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ