Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

টার্গেট নির্বাচন এবং আন্দোলন দল গোছাচ্ছে বিএনপি

| প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আন্দোলন এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে দ্রুত দল গোছাচ্ছে বিএনপি। সে প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সারা দেশের জেলা পর্যায়ের কমিটি পুনর্গঠন চলছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দকে ঢাকায় ডেকে এনে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে খসড়া কমিটি তৈরি করছেন। পরে দলের চেয়ারপার্সন এই খসড়া কমিটি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত করছেন। এভাবেই বর্তমানে সারা দেশের সাংগঠনিক কমিটি গঠিত হচ্ছে। সারা দেশে ৭৫টি সাংগঠনিক কমিটির অর্ধেকেরও বেশি ইতোমধ্যে পুনর্গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে দল পুনর্গঠনে দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, নানান প্রতিক‚ল পরিস্থিতির মধ্যে আমরা দল পুনর্গঠনের কাজ করছি। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা, তারপর রয়েছে সরকারের প্রতিবন্ধকতা। এসবের মধ্যেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া জোট এবং দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে বৈঠক করে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সাথে চেয়ারপার্সন সর্বস্তরে দল পুনর্গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন। চেয়ারপার্সনের সে নির্দেশ অনুযায়ী দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলছে। তবে আগামী নির্বাচন এবং আন্দোলনকে সামনে রেখে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটিকে সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সরকার বিরোধী আন্দোলনের মূল কেন্দ্র হচ্ছে ঢাকা মহানগর। এই মহানগরী তথা রাজধানীর আন্দোলন গতিশীল না হলে সারা দেশের আন্দোলনে গতি থাকে না। রাজধানীর আন্দোলন সফল না হলে সারাদেশে যত তীব্র আন্দোলনই হোক না কেন তাতে সরকারের খুব একটা টনক নড়ে না। বিগত সময়ের আন্দোলন থেকে বিএনপি বা ২০ দলীয় জোট এটা বেশ ভালোভাবেই উপলব্ধি করছে। ঢাকা মহানগরীর তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিটি নেতাকর্মীই এমনটা মনে করেন। তাদের বক্তব্য ঢাকা মহানগরীর আন্দোলন তীব্র না হলে তৃণমূলে তীব্র আন্দোলন করেও সফলতা আসবে না। তাই সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ কর্মীবান্ধব যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে মহানগর কমিটি গঠন করার দাবি কর্মীদের। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা এমএ হান্নান বলেন, ঢাকা মহানগরীতে জোরালো আন্দোলন না হওয়ায় সারা দেশে তীব্র আন্দোলনের পরও বিগত সময়ে সফলতা আসেনি। তাই আগামী সময়ে মহানগরীতে অত্যন্ত জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সৎ-যোগ্য, ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি গঠন করা। অতীতের বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি গঠন করলে ফলাফল সেই আগের মতোই হবে। তিনি আরও বলেন, মহানগর কমিটি বলতে শুধু ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটি নয় একই সাথে মহানগরীর প্রতিটি থানা কমিটিও এক সাথে পুনর্গঠন করা প্রয়োজন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, প্রতিটির থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হলেও সভাপতি সেক্রেটারির নাম ঘোষণা করলে গোটা মহানগরীর নেতাকর্মীরা এক সাথে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। পুনর্গঠন প্রক্রিয়া এবং ভবিষ্যৎ আন্দোলন দুটোই গতিশীল হবে।
আগামী নির্বাচনের আগে সহায়ক সরকারের দাবি আদায়ের যে আন্দোলনের প্রস্তুতি ২০ দলীয় জোট নিচ্ছে তা সফল করতে মহানগরীকে অবশ্যই শক্তিশালী করতে হবে। সে উপলব্ধি থেকেই এবার ঢাকা মহানগরীকে সাংগঠনিকভাবে নতুন করে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দলীয় সূত্র জানায়, এবার সাংগঠনিকভাবে ঢাকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে কমিটি ঘোষণা করার বিষয়টি ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। ঢাকা উত্তর এবং ঢাকা দক্ষিণ নামে দুটি কমিটি করা হচ্ছে। দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে কমিটি গঠন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
আগামী আন্দোলন কর্মসূচি সামনে রেখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক ইউনিট ঢাকা মহানগরীর নতুন কমিটি করা হচ্ছে। এ কমিতে তরুণদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। দলীয় সূত্র মতে খুব শিগগিরই মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এ দুটি কমিটি ঘোষণা করা হবে। দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছেÑ ঢাকা মহানগর উত্তরে সভাপতি পদে এম এ কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তাবিথ আউয়ালের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আরও যাদের নাম আলোচিত হচ্ছে তারা হলেন, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার এবং কমিশনার হাসান। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদের জন্য, শহিনুর আলম মারফত ও সোহেল রহমান এ দু’জনের নাম শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে মহানগর দক্ষিণে সভাপতি পদে বর্তমান আহŸায়ক কমিটির সদস্যসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের নাম চূড়ান্ত এমনটাই আলোচিত হচ্ছে। এ ছাড়া মহানগর দক্ষিণে সভাপতি হওয়ার জন্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম এবং সালাহউদ্দিন আহমেদও কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। দক্ষিণের সাধারণ সাম্পদক হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে বর্তমান আহŸায়ক কমিটির সদস্য, মতিঝিল থানা বিএনপির সভাপতি সাবেক কমিশনার হারুণ অর রশিদ হারুণের নাম। মহানগর তৃণমূল কর্মীদের পছন্দের নেতা সাবেক কমিশনার হারুণ। দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার নামই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে। দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন বর্তমান আহŸায়ক কমিটির সদস্য ইউনুস মৃধা এবং সাবেক কমিশনার নবী উল্লাহ নবী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বা সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মহানগর নেতা তানভীর আহমেদ রবিন এবং এম এ হান্নানের নাম শোনা যাচ্ছে।
শুধু ঢাকা মহানগর কমিটি নয়, এর পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনের পুনর্গঠনও চলছে পুরোদমে। স¤প্রতি মহিলা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাসাসের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজও চলছে। কৃষক দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দলের কমিটি গঠন নিয়ে কাজ করছেন দায়িত্বশীল নেতারা। আগামী ২৭ ফেব্রæয়ারি কৃষক দলের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • abul kalam azad ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১০:০৭ এএম says : 0
    Moudud BNPer Boro Sothru . Khalada Zia Kno Moudud K out koray na janena
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ