পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দোহারকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার-সালমান এফ রহমান
লাখো মানুষের ঢল
স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ি নতুন কমিশনের অধীনেই হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রুটিন সরকারের দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, বিএনপির সবকিছুতেই মানিনা, মানবোনা বলে থাকে। তাই মানেন আর নাই মানেন আগামী নির্বাচন সংবিধান মেনেই অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল (শনিবার) দোহারের জয়পাড়া হাইস্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান খোকন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী যিনিই হোন তাকে জয়ী করতে দোহার-নবাবগঞ্জের নেতাকর্মীদের কাজ করতে হবে। সালমান এফ রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে অত্যন্ত স্নেহ করেন। দুঃসময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন।
বিএনপির আন্দোলনের বিষয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ৫৯৬ সদস্যের কমিটি রাস্তায় বের না হয়ে ঘরে বসেই ভাঙা রেকর্ড বাজায়। দুদিন পর পরই আন্দোলনের কথা বলে। আন্দোলনের নতুন তারিখ দেয়। এই আন্দোলন কোন বছর? কোন বছরই আসবেনা। কবে আন্দোলনে জোয়ার আসবে প্রশ্ন রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ওবায়দুল কাদের বলেন, যতই উন্নয়ন করি তা মøান হয়ে যাবে যদি জনগণের সাথে আচরণ খারাপ করি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শিগগিরই দোহার-মাওয়া সড়কের কাজ শুরু হবে। পরে তা চার লেনে উন্নীত হবে। পদ্মার এপার-ওপার হংকংয়ের মতো হবে। দৃষ্টি নন্দন এক শহর হবে, যা খুব বেশি দূরে নয়। একই সঙ্গে ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, দোহারের বড় সম্যসা নদী ভাঙন। যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে গ্যাস সমস্যার সমাধানও হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সব কিছু বাস্তবায়ন হলে এই দোহারই হবে উন্নয়নের মডেল।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্দেশে সালমান এফ রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনে নৌকার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যাকেই মনোনয়ন দিবেন তাকেই বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালাবে এবং আশাকরি প্রধানমন্ত্রীকে এই আসনটি উপহার দিতে পারবো। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের উদ্দেশে তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে শুধু আওয়ামী লীগের ভোটে বিজয়ী হওয়া যাবে না। এ জন্য কাজ দিয়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ ভোটারদের মন জয় করতে নেতাকর্মীদের তাগিদ দেন। স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণে এলাকাবাসীর দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি জমি বরাদ্দ নিয়ে দুটিই আমি করে দিব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এখানকার উন্নয়নে অন্যতম অবদান সালমান এফ রহমানের। এখানকার মানুষের জন্য এমনকি নেই যা তিনি করেননি, যা তিনি দেননি। আওয়ামী লীগ এখানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে এবং বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তিনি স্থানীয় সাধারণ জনতার কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, দোহারের উন্নয়ন চাইলে সালমান এফ রহমানকে ভুলবেন না।
পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের শিল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে সালমান এফ রহমান পথিকৃত। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ তার মতো ব্যক্তিকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি সেক্টরে দায়িত্ব দেয়ার জন্য। ২০২১ সালে মধ্যম ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে শিল্প ও বেসরকারি খাতের উন্নয়ন অপরিহার্য। এজন্য তার মতো ব্যক্তিকে বেছে নেয়া হয়েছে বলে আমি মনে করি এবং তিনি এক্ষেত্রে সফলও হবেন বলে আমার বিশ্বাস।
পদ্মার ভাঙন রোধ করার জন্য সরকার সব ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ২১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প শুরু হয়েছে। অন্যান্য কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে ৭২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছে। আশা করি শিগগিরই পদ্মা পাড়ের প্রধান সমস্যা (নদী ভাঙন) সমাধান হবে।
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল মান্নান খান বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে।
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও তৃণমূল বিএনপি’র আহ্বায়ক ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, এক সময় দোহার থেকে ঢাকা যেতে ১২ ঘণ্টা লাগতো। আর সেই দূরত্বেই দেড় ঘণ্টায় এসেছেন সব মন্ত্রী-এমপিরা। আমার দায়িত্বকালীন সময়ে এই উন্নয়ন করা হয়েছে। নতুন করে উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছেন সালমান এফ রহমান। এই দোহারকে বাংলাদেশের রাজধানী রূপে প্রতিষ্ঠা করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে এই আসন থেকে সালমান এফ রহমানকে সমর্থন জানান এবং তার ভোটটি দেয়ারও ঘোষণা দেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, নদী ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। যার সবচেয়ে বড় অবদান সালমান এফ রহমানের। পদ্মা পাড়ে শিল্প এলাকা গড়তে গ্যাস সরবরাহ করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাসা বাড়িতে এলপিজি ব্যবহার করেন, তবে শিল্প এলাকার জন্য নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা হবে। ওই এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বিপু বলেন, জিঞ্জিরা- দোহার সড়কের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় এমপি সালমা ইসলাম দোহার-নবাবগঞ্জ এলাকায় গ্যাস সংযোগ না থাকায় উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে অবিলম্বে গ্যাস সংযোগ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।
এসময় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন অন্য নেতৃবৃন্দ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মানুষের ঢল : দোহারের জয়পাড়া হাইস্কুল মাঠে সালমান এফ রহমানের গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গতকাল দুপুর থেকেই লাখো মানুষের ঢল নামে। স্কুল মাঠের নির্ধারিত স্থানে অনুষ্ঠান শুরুর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এরপর সময় যতই গড়িয়েছে আশপাশের রাস্তা-ঘাট সর্বত্রই কেবল মানুষ আর মানুষে ভরে যায়। অনুষ্ঠান স্থলকে কেন্দ্র করে আশপাশের আট-দশ কিলোমিটার এলাকা জুড়েই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আসা মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সালমান এফ রহমানকে গণ-সংবর্ধনা উপলক্ষে দোহার উপজেলা ও নবাবগঞ্জ উপজেলা ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে সজ্জিত করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।