পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়া হাসান খান (২২)। ছোট বেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিলো চিকিৎসক হবার। সেবা করবে রোগাক্রান্তদের। মেয়ের ইচ্ছে পূরণে বাবা-মাসহ পরিবারের সকল সদস্যই উৎসাহ যোগাতেন সাদিয়াকে। স্বপ্ন পূরণের কাছাকাছিও পৌঁছেছিলেন সাদিয়া। পুরান ঢাকার বেসরকারি ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন তিনি। ওই কলেজের ৫ম বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন। আগামী বছর ফাইনাল। এর পর ইন্টার্ণ। শেষে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসক। সেই স্বপ্ন ও মনোবাসনা নিয়েই এগিয়ে চলছিলেন সাদিয়া। কিন্তু গতকাল শনিবার এক নিমিষেই তার সব শেষ। দায়ী বেপরোয়া বাস। যে বাস সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। আর চাপা পড়া সিএনজির যাত্রী ছিলেন সাদিয়া ও তার মা শাহীন সুলতানা জলি (৪৫)। পথচারীরা যতক্ষণে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন ততক্ষণে সাদিয়া নেই ইহজগতে। আহত তার মাও চিকিৎসাধীন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
বংশাল থানার ওসি নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, নিহত সাদিয়া হাসানের গ্রামের বাড়ি রাজশাহী জেলার রাজপাড়া থানার হরগ্রাম। বাবার নাম হাসানুজ্জামান। একই ঘটনায় আহত সাদিয়ার মা শাহীন সুলতানা জলি জানান, ন্যাশনাল মেডিকেলের একটি ছাত্রী হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করতো সাদিয়া। কয়েকদিন আগে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যায়। গতকাল শনিবার ভোরে রাজশাহী থেকে ট্রেন যোগে ঢাকায় ফেরেন। সঙ্গে ছিলেন তিনি নিজেও। সকাল ৭টায় কমলাপুর থেকে মেয়েকে নিয়ে তিনি সিএনজি অটোরিকশায় চেপে যাচ্ছিলেন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে। পথে নয়াবাজার এলাকায় একটি বেপরোয়া বাস তাদের বহনকারী অটোরিকশাকে পেছন থেকে চাপা দেয়। এতে তারা মা-মেয়ে দু’জনই আহত হন। পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাদিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সাদিয়ার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। এই ঘটনার খবর পেয়ে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা ছুটে আসেন ঢাকা মেডিকেলে। সাদিয়ার সহপাঠীদের কান্নায় সেখানের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
বংশাল থানার ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় দায়ী বাস শনাক্ত করা যায়নি। আটক করা যায়নি এর চালককেও। তবে বাস শনাক্ত ও এর চালককে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় বংশাল থানায় মামলা হয়েছে।
সড়ক অবরোধ ও আল্টিমেটাম
এদিকে সাদিয়ার নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদে রায় সাহেব বাজার মোড় অবরোধ করে তার সহপাঠীরা। দুপুর পৌনে ১টার দিকে তারা এ সড়ক অবরোধ করেন। দেড়টার দিকে পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। অবরোধ চলাকালে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এমএ আবুল বাশার বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ী বাস চালককে গ্রেফতরা করা না হলে আবার সড়ক অবরোধ করা হবে। অপরদিকে সড়ক অবরোধের কারণে গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, সদরঘাট, বাবু বাজার যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের রাস্তায় দেখা দেয় তীব্র যানজট। এ যানজট অব্যাহত থাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
সাদিয়ার ফুপা ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, সাদিয়ার লাশ তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে নিয়ে দাফন করা হবে। তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে তারা একটি মামলা দায়ের করবেন।
শিক্ষার্থীদের অবরোধ করার আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় সাদিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, মেডিক্যাল কলেজটির অধ্যক্ষ এমএ আবুল বাশার ও কোতয়ালী অঞ্চলের পুলিশের এডিসি শাহেন শাহসহ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
জানাজার আগে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, একজন হবু চিকিৎসকের অকাল মৃত্যু মানে রাষ্ট্রীয় ক্ষতি, জনগণের ক্ষতি। আমি সরকারের কাছে আহŸান জানাচ্ছি, দ্রæত বাস চালককে গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে তার শাস্তি দেয়া হোক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।