Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রার্থী চূড়ান্তকরণ আ.লীগের বড় চ্যালেঞ্জ আ.লীগকে ছাড় দেয়ার প্রশ্নই উঠে না : সাক্কু

| প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : অন্তর্কোন্দলের কারণে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলের একক প্রার্থী চূড়ান্ত করার বিষয়টি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জন্য। দলীয় প্রতীকে কুমিল্লায় এই প্রথম সিটি নির্বাচনের জমজমাট আসর ঘিরে আওয়ামী লীগ ঘরনার অন্তত সাতজন মনোনয়ন দৌড়ে অংশ নিয়েছেন। এ সাতজনের বেশিরভাগই দলের একাধিক গ্রæপের সাথে সম্পৃক্ত। কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নতুন ইসির অধীনে একটি বড় আয়োজনের এ নির্বাচনের দিকে চোখ পড়েছে দেশবাসীর। তাই কুমিল্লা সিটি নির্বাচন হবে অনেক কঠিন। আর এরকম কঠিন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ভোটাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হেভিওয়েট প্রার্থী দিতেই চলছে দলের মধ্যে চুলছেড়া বিশ্লেষণ। গত শুক্রবার থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীরা দলের ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আবেদনপত্র জমা দেয়া শুরু করেছেন। এদিকে আওয়ামী লীগ থেকে হেভিওয়েট কাউকে প্রার্থী দেয়া হলে বিএনপি প্রার্থী মাঠ ছেড়ে দেবে এমন খবরের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন বিএনপির একক প্রার্থী সাবেক সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। তিনি এধরনের গুজবে কান না দেয়ার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহŸান জানিয়েছেন।
আসন্ন কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর তালিকায় আওয়ামী লীগের সাতজন আবেদন ফরম জমা দেয়ার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। তারা হলেন কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আলহাজ ওমর ফারুক, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আরফানুল হক রিফাত, আফতাবুল ইসলাম মঞ্জু, সিটি কর্পোরেশনের সাবেক নারী কাউন্সিলর আনজুম সুলতানা সীমা, তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিকদার ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন। গত শুক্রবার থেকে ঢাকায় ধানমন্ডিস্থ দলের রাজনৈতিক কার্যালয়ে পর্যায়ক্রমে এসব নেতারা নির্বাচনে মেয়র পদে অংশগ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বরাবর আবেদনপত্র জমা দেয়া শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে অনেকেই আবেদনপত্র জমা দেয়ার কাজ শেষ করে লবিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশিরা ঢাকায় অবস্থান করলেও কুমিল্লায় এসব সম্ভাব্য প্রার্থীদের নেতা, কর্মী, সমর্থকরা মোটামুটি অস্থির সময় পার করছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনী মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কাকে দলের একক চূড়ান্ত প্রার্থী করবেন এনিয়ে দলের নেতা, কর্মী, সমর্থকদের ভাবনার শেষ নেই। নগরীর আমজনতার মুখে মুখে কারো কারো নাম শোনা গেলেও এসব উড়ো আওয়াজে কেউই কান দিচ্ছেন না। কেননা দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়নের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্তে নেবেন তা কি হবে আগ থেকে কেউই বলতে পারবেন না। কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে যে চমক দেখিয়েছেন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও প্রার্থী চূড়ান্তে চমক দেখাবেন বলে নগরীর সর্বত্র এমন আলোচনা চলছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আরফানুল হক রিফাত দলীয় মনোনয়ন পেলে মাঠ ছেড়ে দেবেন সাক্কু এমন খবর একটি জাতীয় দৈনিক প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টিকে ভিত্তিহীন দাবি করে সিটির সাবেক মেয়র ও কুমিল্লা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা মনিরুল হক সাক্কু বলেছেন তিনিই বিএনপির একক প্রার্থী। শুক্রবার রাতে দলের মনোনয়ন বোর্ডের কাছে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। দুই একদিনের মধ্যে তিনি কুমিল্লায় এসে সাংবাদিক, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, দলের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। শনিবার একটি জাতীয় দৈনিকে তার প্রার্থিতার বিষয় নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা নিছক গুজব। আরফানুল হক রিফাত আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলে নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে দেবেন এমন চিন্তা-ভাবনা তিনি কখনোই করেননি এবং এব্যাপারে গণমাধ্যম বা তার রাজনৈতিক, পারিবারিক ঘনিষ্ঠ কারো কাছেও কোন বক্তব্য উপস্থাপন করেননি। নির্বাচনের আগে তাকে নিয়ে এধরনের মন্তব্যের পুরোটাই গুজব এবং দলের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টির অপপ্রয়াস। সাক্কু বলেন, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে কাকে প্রার্থী দেয়া হলো এটা নিয়ে তিনি মোটেই চিন্তিত নন। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত হলে তিনি মাঠ ছেড়ে দেবেন কেনো। প্রশ্নই উঠে না। গত পাঁচ বছর সিটি মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে নগরীর ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন দাবি করে সাবেক মেয়র সাক্কু আরো বলেন, সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপক্ষে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। নগরীর উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। এবারেও তিনি প্রার্থী হবেন। দল তাকেই প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে। তাই নির্বাচনের মাঠে বিএনপির মতো একটি বড় দলের প্রার্থী হয়ে অন্য আরেকটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকে ছাড় দিয়ে পরাজয়ের স্বাদ নিয়ে ঘরে ফিরে যাবার প্রশ্নই উঠে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ