পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : গত শুক্রবার বিডিনিউজ২৪.কম এ বøগে প্রকাশিত কানাডা ওয়ার্ল্ড মুসলিম কংগ্রেসের স্বঘোষিত উপদেষ্টা হাসান মাহমুদ মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে হাদিসের উদ্বৃতি দিয়ে ফতোয়ার নামে যে মিথ্যাচার করেছে। এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন আওয়ামী ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন উল্লিখিত প্রবন্ধে হাদিস শরীফ ও ইতিহাস বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। মূর্তি সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি হচ্ছে, মহান আল্লাহ তিনি পবিত্র সুরা হজ্জ্ব এর ৩০নং আয়াতে এরশাদ করেন, “তোমরা মূর্তিদের অপবিত্রতা থেকে বেঁচে থাক এবং মিথ্যা কথন থেকে দূরে সরে থাক” মহানবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সরাসরি এরশাদ করেছেন, যে “আমি প্রেরিত হয়েছি মূর্তি ও বাদ্যযন্ত্র ধ্বংস করার জন্য।”
হাদিস শরিফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক আমাকে প্রেরণ করেছেন সমস্ত জাহানের জন্য রহমত স্বরূপ এবং হিদায়েত স্বরূপ। আর আদেশ করেছেন বাদ্যযন্ত্র, মূর্তি, ক্রুশ ও জাহেলি কাজসমুহ ধ্বংস করার জন্য।”
হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম যখন মূর্তি ভেঙে ফেলেছিলেন, তখন নমরূদ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে তলব করলে, তিনি নমরূদকে বলেছিলেন “তোমরা কি মহান আল্লাহ তাআলার পরিবর্তন এমন কিছুর উপাসনা কর, যা তোমাদের কোন উপকারও করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারেনা? আফসোস! তোমাদের জন্যে এবং মহান আল্লাহ তা’আলার পরিবর্তে যাদের উপাসনা কর তাদের জন্যে। তোমরা কি বুঝ না?”
বিবৃতিদাতারা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, সাধারণ সম্পাদক- আলহাজ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি, সহ-সভাপতি লায়ন মাওলানা আবু বকর সিদ্দীক, পীরজাদা মাওলানা সিরাজুল ইসলাম (হবিগঞ্জ), মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী টাঙ্গাইল, মাওলানা তাজুল ইসলাম (বড়নগরী) বাক্ষণবাড়িয়া, মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল কাদের শরীয়তপুরী, আলহাজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান রংপুরী প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, উল্লিখিত প্রবন্ধের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে;
১) উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) একটা হাদিস শরিফ দিয়ে বলেছে, তিনি পুতুল নিয়ে খেলেছেন। নাউযুবিল্লাহ।
২) হযরত রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাবা শরীফের দেয়ালে অংকিত হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম-এর প্রতিকৃতি বা প্রতিচ্ছবি মুছে ফেলতে নিষেধ করেন।
৩) যে মূর্তি সৌন্দর্য্য বাড়ায়, সুসজ্জিত করে সে ব্যাপারে কোরান অনুমতি দেয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মা আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) এর বরাত দিয়ে, উনার পুতুল খেলা নিয়ে হাদিছটি সর্বসম্মতভাবে বাতিলকৃত অর্থাৎ মানসুখ। মূর্তির বিষয়ে এই হাদিছটি দলিলরূপে ব্যবহার চক্রান্তমূলক ও উদ্দেশপ্রণোদিত। মূর্তি, ছবি বা ভাস্কর্যকে জায়েয প্রমাণ করতে গিয়ে উক্ত হাদিস শরিফকে দলিল হিসেবে উল্লেখ করা মূর্খতা বৈ কিছুই নয়। উক্ত হাদিস শরীফ-এর ব্যাখ্যায় ‘শরহুল কিরমানী আলাল বুখারিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শিশুদের জন্য খেলনা পতুল বা মূর্তি ব্যবহার করাকে বৈধ প্রমাণ করতে গিয়ে কেউ কেউ উক্ত হাদিস শরিফকে দলীল হিসেবে পেশ করে থাকে। ... অথচ উক্ত হাদিস শরিফখানা ছবি ও মূর্তি সম্পর্কিত অসংখ্য হাদিস দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে।
সুতরাং শরিয়তের দৃষ্টিতে পতুল তৈরি করা এবং খেলাও নাজায়িয, হারাম। আর খেলনা পুতুলও যদি কারো ঘরে প্রকাশ্যে থাকে তবে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করবে না ও নামায মাকরূহ তাহরীমী হবে।
সুতরাং হাসান মাহমুদ নিশ্চয়ই নাসেখ মানসুখ সম্পর্কে অজ্ঞ ও জ্ঞানপাপী। কারণ, তাফসিরবিদ ও হাদিসবিদগণসহ সকল ইমাম-মুজতাহিদগণ বলেন, নাসেখ, মানসুখ-এর জ্ঞানার্জন ব্যতীত কারো জন্য কুরআন শরীফের তাফসির, হাদিস শরীফের তাশরীহ এবং ফতওয়া প্রদান করা বৈধ নয়, যা করেছে হাসান মাহমুদ।
হাদিস শরিফে উল্লেখ আছে, হযরত আলী (রা.) এক বিচারককে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনি কি নাসেখ এবং মানসুখের পরিচয় করতে পারেন? বিচারক বললো না, তখন হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আপনি নিজেও ধ্বংস তথা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন এবং অন্যকেও ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন।” নাসিখুল কুরআন নামক কিতাবের ১৫ পৃষ্ঠায় আরো বলা হয়েছে, অর্থ : “প্রত্যেক আলিম, মুতায়াল্লিম (ইল্ম অন্বেষণকারী) এবং সমস্ত মুসলমানগণের জন্য পবিত্র কুরআন শরীফের নাসেখ ও মানসুখের জ্ঞানার্জন আবশ্যক।”
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।