পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবু হেনা মুক্তি : শত কড়াকড়ি সত্তে¡ও বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। অনুমোদন ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ ও অপেশাদার চালক দ্বারা গাড়ি চালানো, ত্রæটিপূর্ণ সড়ক ব্যবস্থা, ট্রাফিক বিভাগের অদূরদর্শিতা এবং সংশি¬ষ্ট বিভাগের দুর্নীতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। নিরাপদ সড়কের জন্য গণসচেতনতা বাড়ানো স্বাধীনতার পরে এখনও কোনো বিশেষ প্রকল্প চালু হয়নি। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলেই টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তা রোধে দীর্ঘ মেয়াদি কোনো স্থায়ী পরিকল্পনা ও প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে না। যা হচ্ছে তা গতানুগতিক। তাছাড়া মন্ত্রণালয়ের সাথে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সমন্বয়হীনতার কারণে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। আর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে চলছে দেদারছে। সর্বশেষ গত বুধবার খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাট থানার বাইপাস সড়কে ট্রাক ও মটর সাইকেল দুর্ঘটনায় অনুরাগ নামে ৫ বছরের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এর আগে খুলনা গোপালগঞ্জ সড়কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের ধাক্কায় দুই শিক্ষার্থী আহত হয়।
খুলনা বাস, মিনিবাস মালিক সমিতি, ট্রাক সমিতি, পিকআপ সমিতি, মাইক্রোবাস সমিতিসহ বিভিন্ন যানবাহনের সমিতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতাধররা। যে কারণে বিআরটিএ বা ট্রাফিক বিভাগ ইচ্ছে থাকলেও ব্যবস্থা নিতে না পারায় তাদের সাথে দফা রফা করে দিন কাটিয়ে দিচ্ছে। ফলে সড়ক আর নিরাপদ থাকছে না।
মহাসড়ক শুধু নয়, বিভাগীয় শহর খুলনায় নগর পরিবহনের জরাজীর্ণতা ও লক্কড়-ঝক্কড় ট্রাকগুলো দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থা, এনজিও ও সুশীল সমাজের কর্তা ব্যক্তিরা সভা-সেমিনারে বিভিন্ন কর্মপন্থা ও সুপারিশমালা প্রদান করলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ হচ্ছে না। আর সড়ক দুর্ঘটনাও কমছে না। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটসহ এ অঞ্চলের ৫০ শতাংশের বেশি ফিটনেসবিহীন গাড়িই এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। অপরদিকে অনুমোদন ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে বিআরটিএ ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ একে অপরের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বাংলাদেশে রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত তাদের কাছে আসা মোট ৫২ শতাংশ গাড়ির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাকি ৪৮ শতাংশ গাড়ির অনুমোদন দেয়া হয়নি। সে হিসাবে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটসহ এ অঞ্চলের মোট গাড়ির পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ। গত বছর সকল জরিমানা মওকুফ করে গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানের সরকারি সিদ্ধান্তে বিপুল সংখ্যক মালিক এ সুযোগটি গ্রহণ করেছেন। ফলে এক বছরের আগের ৭৫ শতাংশ থেকে কমে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা ৫০ শতাংশে নামে। তবে বিআরটিএ’র দেয়া পরিসংখ্যানে লাইসেন্স ও ফিটনেস অনুমোদনপ্রাপ্ত গাড়ির সংখ্যায় এ হিসাব দেখানো হলেও বাস্তবে এর চিত্র ভিন্ন। বেসরকারি হিসাব মতে এর সংখ্যা আরও বেশি। আর এ বৃহৎসংখ্যক অনুমোদনহীন ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল করার কারণে দিন দিন আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে দুর্ঘটনা। অদক্ষ চালকের কারণেও ঘটছে অপূরণীয় দুর্ঘটনা।
সূত্র মতে, খুলনা-কয়রা ও খুলনা থেকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তাটি অধিকাংশ জায়গা গাড়ি চলাচলের জন্য মরণ ফাঁদ। ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে ডুমুরিয়া থেকে চুকনগরের পূর্ব পর্যন্ত সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত অধিকাংশ জায়গা বর্তমানে গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী। এজন্য প্রায়ই ছোট-খাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। এদিকে খুলনা-পাইকগাছা ও কয়রার ১০০ কিলোমিটার সড়কটি রয়েছে বেহাল দশায়। নিরাপদ সড়ক চাই’র খুলনার অন্যতম সদস্য এ্যাড: জি এম কামরুজ্জামান বলেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় দিন দিন এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। মন্ত্রীকে সাধুবাদ জানাই তিনি বলেছেন, খুব শিগগিরই সড়ক থেকে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালকদের বিদায় করবেন। আসলে বিআরটিএ ও ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে সমন্বয় না থাকার কারণে আজ এটি এমন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারের উচিত বিষয়টিকে অবহেলার দৃষ্টিতে না দেখে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া এবং কয়েকটি ঘটনার কারণ খুঁজে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) খুলনার একজন কর্মকর্তা জানান, খুব শিগগিরই ট্রাফিক বিভাগের কাছে অনুমোদিত যানের তালিকা প্রেরণ করা হবে। আমাদের কাছে গাড়ি আসলে আমরা গাড়ি ও তার চালকের সঠিক মান যাচাই-বাছাই করে তবেই গাড়িকে চলাচলের অনুমতি দিয়ে থাকি। অনুমোদন ছাড়া অসংখ্য গাড়ি রয়েছে যেগুলো শনাক্ত করার দায়িত্ব ট্রাফিক বিভাগের। ত্রæটিপূর্ণ গাড়ির জন্য সড়ক দুর্ঘটনা বাড়লে সে দায়ভার আমাদের নয়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, মহানগরীতে অনুমোদনহীন গাড়ি চলতে দেয়া হয় না। যদিও চলে তা আমাদের অগোচরে। আর ফিটনেস ও অদক্ষ চালকদের সম্পর্কে বিআরটিএ’র দেখার দায়িত্ব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।