Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিতর্ক এড়াতে কাঁচের ভিতরে ঢাকা থাকছে ইসি

| প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জনসাধারনের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে সিটি কপারেশন, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা এবং সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নিবার্চন বিতর্ক থাকলেও আগামীতে সকল নিবার্চন বিতর্ক মুক্ত রাখতে কঠিন পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন
রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নতুন ভবনে জনসাধারণের প্রবেশে কড়াকড়ি বিধান করা হচ্ছে। নির্বাচন ভবনের প্রতিটি ফ্লোর কাঁচ দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। প্রতি ফ্লোরে থাকছে ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা। অনুমতি ছাড়া কেউ নির্বাচন ভবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। আগামী ১লা মার্চ থেকে জনসাধরনের প্রবেশের কড়াকড়ি আরোপের বিধান চালু করা হচ্ছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনে অবস্থিত বর্তমান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অফিস ছেড়ে আগামী মাসে নতুন নির্বাচন ভবন ও ইটিআই ভবনে স্থানান্তর হবে। নির্বাচন কমিশনের নতুন ভবনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ স্থানান্তর করা হচ্ছে।
ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, ইসির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার অংশ হিসাবে প্রতি ফ্লোরে ফিঙ্গার প্রিন্ট থাকবে। ভিজিটরদের জন্য আলাদা কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে। নির্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাত্ ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। অনুমতি নিয়ে যে কেউ ভবনে প্রবেশ করতে পারবেন। আগামী ১ মার্চ থেকে তা কার্যকর করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানাগেছে তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ১১ তলাবিশিষ্ট ‘নির্বাচন ভবনের’ প্রতিটি ফ্লোরে থাকছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই বিশেষ নিরাপত্তার কারণে জনসাধারণ দূরের কথা ইসির নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নির্বাচন ভবনের সব ফ্লোরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন না। প্রতিটি ফ্লোরে আলাদা আলাদা ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা থাকবে। ফ্লোরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়া অন্য ফ্লোরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রতিটি ফ্লোর কাঁচ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। প্রতিটি ফ্লোরের দু’পাশে প্রবেশের জন্য দু’টি দরজা থাকছে। এই দরজায় বসানো হয়েছে ফিঙ্গার প্রিন্টের মেশিন। ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় প্রবেশে বেশি কড়াকড়ি থাকবে। কারণ চতুর্থ ফ্লোরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এবং পঞ্চম তলায় চার নির্বাচন কমিশনারের দফতর। বঙ্গভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। বিশেষ করে সচিবালয়ে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকরা সহজে প্রবেশ করতে পারেন। সচিবালয়ের যে কোনো মন্ত্রণালয়ের কক্ষে প্রবেশের সুযোগ পান। কিন্তু ‘নির্বাচন ভবনে’ সাংবাদিকদের অবাধ বিচরণ আগামীতে আর থাকছে না। এমনকি বর্তমান নির্বাচন কমিশনাররা গণমাধ্যমে কথা বলতে নারাজ। গণমাধ্যম কর্মীরা কয়েক দফা নির্বাচন কমিশনারদের সাক্ষাত্ চেয়ে না পেয়ে ফিরে গেছেন।
ইসির একাধিক কর্মকর্তা ইনকিলাবকে জানান, এখন পর্যন্ত নতুন কমিশনের ভাবনা-সপ্তাহে একদিন গণমাধ্যমে কথা বলবেন ইসির ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিরা। এজন্য ইসিতে যে মিডিয়া সেন্টার করা হয়েছে সেটি মূল ভবনের গেটে (নিচতলায়)। ওই মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকরা অবস্থান করতে পারবেন। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে চাইলে পূর্বে অনুমতি লাগবে। সংশ্লিষ্ট ফ্লোরে কর্মরতদের অনুমতি সাপেক্ষে ওই ফ্লোরে প্রবেশ করতে পারবেন মাত্র। কোনো ফ্লোরে অতিরিক্ত ভিড় জমাতে দেবেন না ইসির নিরাপত্তাকর্মীরা।
ইসির সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আরো বলেন, মূল ভবনের ন্কশা অনুযায়ী নিরাপত্তা রক্ষা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত বা বাড়তি কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা থাকছে। সাংবাদিকদের প্রবেশের বিষয়ে বলেন, এ বিষয়ে আমরা ভাবছি। আশাকরি, সাংবাদিকদের প্রবেশে তেমন সমস্যা হবে না। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত বহুতল ভবনটির উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি দীর্ঘ ৪৩ বছর পরিকল্পনা কমিশনের ৫ ও ৬ নম্বর বøক ছেড়ে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের জন্য নির্মিত নির্বাচন ভবনে স্থানান্তর হয় বিদায়ী রকিব কমিশন। আর গত ১৫ ফেব্রæয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ভবনে কার্যক্রম শুরু করেন নবনিযুক্ত ইসি। জুলাই ২০১১ থেকে জুন ২০১৭ মেয়াদে বাস্তবায়নে কন্ট্রাকশন অব ইলেকশন রিসোর্সেস সেন্টার (ইআরসি) প্রকল্পের আওতায় নির্বাচন কমিশনের ভবন নির্মাণে ব্যয় হয় ২১৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় দুটি বেইজমেন্ট ও ১২তলা বিশিষ্ট ১.২২ লক্ষ বর্গফুট আয়তনের ইটিআই ভবন এবং দুটি বেইজমেন্ট ও ১১তলা বিশিষ্ট ২.৫৮ লক্ষ বর্গফুট আয়তনের নির্বাচন ভবন নির্মাণ করা হয়। গত ৬ ফেব্রæয়ারি প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ কেএম নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে পাঁচ সদস্য নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন, মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ