Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অমর একুশে গ্রন্থমেলা- চাহিদা বেশি মুক্তিযুদ্ধের বই ও অভিধানে

| প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : শুধু গল্প-উপন্যাস নয়, বরং প্রয়োজনীয় বই বেশি সংগ্রহ করছে বইমেলা থেকে পাঠকরা। শিক্ষার্থীরা বিষয়ভিত্তিক বইয়ের খোঁজ করছে মেলায়। তবে যে প্রয়োজনীয় বইটি সবচেয়ে বেশি যা বিক্রি হয় বইমেলায় তা হলো অভিধান। সময় যত এগোচ্ছে অভিধানের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন ততই বাড়ছে। প্রকাশকরা জানালেন, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্রন্থের সবচেয়ে বড় ক্রেতা তরুণ ও কিশোররা। মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক রচনার প্রতি সব বয়সী পাঠকের আগ্রহ থাকলেও নবীনদের আগ্রহের মাত্রাটা অনেক বেশি। ফলে প্রকাশকরাও এসব বই প্রকাশে বিশেষভাবে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। সেই সূত্র ধরে প্রতিবছরই মেলায় আসছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নতুন নতুন বই। তথ্যসংবলিত বইয়ের পাশাপাশি গল্প-উপন্যাস কিংবা কবিতার চরণেও উঠে আসছে একাত্তরের বীরত্বগাথা। এই দুই ধরনের বই মূলত শিক্ষার্থীরা ও সচেতন পাঠকরাই বেশি কিনছে বলে জানা গেছে।
প্রতিবারের মতো গল্প-উপন্যাসের বই ভালোই বিক্রি হচ্ছে। আর প্রকাশের দিক থেকে শীর্ষে বরাবরের মতো রয়েছে কবিতা। বাংলা একাডেমি স্টলের বিক্রেতারা বলছেন, ‘অভিধান’ প্রয়োজনীয় বই। এবছর ‘আধুনিক বাংলা অভিধান’ এনেছে বাংলা একাডেমি সেটাই বিক্রি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। প্রতিবছরই বিক্রির শীর্ষে থাকে অভিধান, এবারো তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ১৯৫৮ সালে রচিত ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’-এর মধ্য দিয়ে অভিধানের ব্যাপকতা শুরু হয়। এরপর গত ষাট বছরের ইতিহাসে শুধু বাংলা একাডেমি থেকেই মোট ২১টি অভিধান প্রকাশ পেয়েছে। শুধু তাই নয়, কাটতি ভালো হওয়ায় সব ধরনের অভিধানগুলো নিয়ে এবারই প্রথম স্বতন্ত্র স্টল বসিয়েছে একাডেমি কর্তৃপক্ষ।
বাংলা একাডেমির বিক্রয়কেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান, ইংরেজি থেকে বাংলা ও বাংলা থেকে ইংরেজি অভিধানের বিক্রি বেশি। নতুন আসা আধুনিক বাংলা অভিধানও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, বানান অভিধান, উচ্চারণ অভিধানের বিক্রিও ভাল বলে জানান তিনি। বাংলা একাডেমির স্টলে অভিধানসহ সব বই বিক্রি হচ্ছে ৩০ শতাংশ ছাড়ে। এই স্টলগুলো ছাড়াও বাংলা একাডেমির নতুন ভবনের নিচে স্থায়ী একটি স্টল রয়েছে। সেখান থেকেও অভিধান কেনা যাচ্ছে। একাডেমির অভিধানের মধ্যে ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, বাংলা টু ইংলিশ ও ছোটদের অভিধান বিক্রির শীর্ষে রয়েছে। তবে একাডেমি থেকে প্রকাশিত প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা ভাষার অভিধান, ছোটদের অভিধান, বাংলা বানান অভিধান, আঞ্চলিক ভাষার অভিধান, বাংলা উচ্চারণ অভিধান, বিবর্তনমূলক বাংলা অভিধান, সমকালীন বাংলা ভাষার অভিধান, সহজ বাংলা অভিধানেরও বেশ চাহিদা রয়েছে।
তবে মেলায় বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত অভিধানের পাশাপাশি অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত কিছু অভিধানও পাওয়া যাচ্ছে। যার মধ্যে ঐতিহ্য প্রকাশনীতে খন্দকার মাহমুদুল হাসানের ‘ঢাকা অভিধান’, আবদুল মান্নান স্বপনের ‘গালি অভিধান’, অবসর প্রকাশনা সংস্থায় পূরবী বসুর ‘সম্প্রীতির জন্যে শব্দাবলি’, ড. প্রদীপ রায় ও মালবিকা বিশ্বাসের ‘পরিভাষা অভিধান’, দিব্যতে ড. মিয়া মোহাম্মদ আদেলের ‘ভাষা কোষ’, শানজিদ অর্ণবের ‘ধর্ম কোষ’, শেখ সাদীর ‘উদ্ভিদ কোষ’, খন্দকার মাহমুদুল হাসানের ‘প্রথম বাংলাদেশ কোষ’, কবি মোহাম্মদ আশরাফ আলমের ‘লোক প্রশাসন কোষ’, আহমদ পাবলিশিংয়ের ড. হায়াত মামুদ ও মুস্তাফা পান্নার ‘কিশোর বাংলা অভিধান’ উল্লেখযোগ্য। ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) প্রকাশ করেছে মরহুম বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমানের ‘যথাশব্দ’ অভিধান।
প্রায় প্রতিটি স্টলেই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই পাওয়া যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইয়ের প্রতি পাঠকের সহজাত আগ্রহ রয়েছে। এ বছর তাম্রলিপি এনেছে ৬৪ জেলার ‘কিশোর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’, অনন্যা এনেছে ইমদাদুল হক মিলনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘নয় মাস’, অনুপম প্রকাশনী এনেছে সুব্রত বড়ুয়ার ‘এই আমাদের বাংলাদেশ’,  সময় প্রকাশন এনেছে কর্নেল অব. তৌফিকুর রহমানের ‘গেরিলা ১৯৭১’, অক্ষর প্রকাশনী এনেছে রফিকুর রশীদের ‘একুশের ও মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প’, রানা জামানের ‘একাত্তরে রণাঙ্গনে’, ফখরে আলমের স্মৃতিচারণ গ্রন্থ ‘আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি’, একুশে বাংলা এনেছে বিপ্রদাশ বড়ুয়ার ‘সাদা কফিন ও মুক্তিযোদ্ধারা’, বিভাস এনেছে মজিবর রহমানের প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বাঙলা বাঙালি বাংলাদেশ’, বাংলা প্রকাশ এনেছে ইসহাক খানের গল্পগ্রন্থ ‘বিচ্ছু কাহিনী’ প্রভৃতি। এছাড়া প্রতিদিনই মুক্তিযুদ্ধের নতুন নতুন বই আসছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ