Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএসফের গুলি আতঙ্কে রাণীশংকৈল হরিপুর সীমান্ত এলাকার মানুষ

| প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আশরাফুল আলম, রাণীশংকৈল থেকে : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল-হরিপুর উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা এলাকার মানুষ অবহেলিত। সীমান্ত ঘেঁষা আবাদী জমি চাষ করতে গিয়ে কৃষককে আতংকে থাকতে হয়। বিদ্যুৎবিহীন জীবনযাপন ও রাস্তাঘাটের বেহাল দশা ছাড়াও যখন তখন বিএসএফের গুলির ভয়ে আতঙ্কে দিন অতিবাহিত করছেন তারা। কাঁটা তারের বেড়ার ওপার থেকে আসা গুলির ভয়ে মাঠের কাজসহ নোম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় দৈনন্দিন কাজও বন্ধ করে দিতে হচ্ছে তাদের।
সন্ধ্যা হলে বিএসএফের টহল। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে জলে ওঠে সার্চ লাইট রাত ৮টার পর থেকেই গভীর নিস্তব্ধতা নামে এসব সীমান্ত গ্রামে। বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যার পরই পুরো এলকাজুড়ে নামে ভুতুড়ে অন্ধকার। এসব দুর্ভোগের বাইরেও রয়েছে বেহাল রাস্তাঘাট। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এ অবস্থা হয়ে ওঠে অবর্ণনীয়। বিশেষ করে কৃষিপণ্য পরিবহনে ভোগান্তির কোনো অন্ত থাকে না। এবারো বর্ষা আসতে না আসতেই রাস্তার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করেছে। হরিপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকা মারাধার গ্রামের আলম, আলামিন, সেতারা জানান, এ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। অর্থের অভাবে অনেকেই কেরোসিন তেল কিনতে পারেন না। তারা আরও জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা ঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়াও দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিতে হিমশিম খেতে হয়। এসব এলাকায় নেই গভীর নলকূপ। তুলনামুলক উচু কৃষি জমিগুলোতে আবাদ করতে নানা প্রতিকূলতার মোকাবেলা করতে হয়। ফলে প্রতিনিয়ত ফসলের উৎপাদনও কমতে শুরু করেছে। এদিকে ভারত-বাংলাদেশ বিভক্তকারী নাগর ও কুলিক নদীতে প্রতিবছরই কিছু জমি জেগে ওঠে এবং কিছু জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর ফলে প্রতিবছরই বাংলাদেশী অংশের কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অবশিষ্ট জমিতে চাষের সময়ও নির্বিঘেœ কাজ করতে পারেন না কৃষকরা । সবসময়ই তাদের মনে ওপার থেকে ছুটে আসা গুলির ভয় কাজ করে। জীবন-জীবিকার তাগিদে সীমান্ত এলাকার অনেকেই নদীতে মাছ ধরার কাজ করেন। কেউ কেউ গরু-ছাগল চড়ান নোম্যান্স ল্যান্ডে । কিন্ত বিএসএফ এর সশস্ত্র অবস্থানের আনাগোনা দেখলেই কাজ ফেলে ভয়ে পালিয়ে আসতে হয় তাদের। এমনি ভাবে সীমান্ত এলাকার মানুষ জীবন যাপন করছেন।
এব্যাপারে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের এমপি আলহাজ¦ দবিরুল ইসলাম বলেন, সীমান্ত এলাকায় জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত রাস্তার কাজ হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ কাজ চলছে, যে সব এলাকায় রাস্তার কাজ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি। ১৮ সালের মধ্যে সব কাজ হবে বলে তিনি আশাবাদী। মহিলা সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা জাহান লিটা বলেন, চোরা কারবীদের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তিকে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে এবং বিজিবির মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সাথে বিদ্যুৎ রাস্তাঘাটের কাজ অব্যাহত আছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার জেলা পরিষদের সদস্য আবুল কাশেম বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকার দরিদ্রদের মাঝে সরকারের দেওয়া যে কোন অনুদান, সুযোগ সুবিধা এখন থেকে পৌছে দিবেন বলে আশ^াস দেন ওসব এলাকার মানুষদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ