Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিচ্ছেদ ভয়ঙ্কর

| প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফারুক হোসাইন/সায়ীদ আবদুল মালিক : ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সালমা কয়েকদিন আগে স্বামী শিবলী সাদিককে তালাক দিয়েছেন। দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি শিবলি সাদিককে ২০ লাখ টাকা দিয়ে রফাদফা করতে হয়েছে। কণ্ঠশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ দু’দিন আগে দ্বিতীয় স্ত্রী রেহানকে তালাক দিয়েছেন। কণ্ঠশিল্পী হৃদয় খান স্ত্রী কণ্ঠশিল্পী সুজানাকে তালাক দিয়েছেন। অভিনেত্রী সারিকা কয়েকদিন আগে স্বামী মাহিন করিমকে তালাক দিয়েছেন। নায়িকা মাহিয়া মাহির তালাকের কাহিনী তো আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। সাংস্কৃতি জগতের মানুষ সালমা, হাবিব, হৃদয়, সারিকা, মাহি শুধু নয়; দেশে আশঙ্কাজনক হারে বিবাহ-বিচ্ছেদ বাড়ছে। অল্পশিক্ষিত, কম শিক্ষিত শুধু নয়; উচ্চ শিক্ষিত পরিবারে এ ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সামাজিক অস্থিরতা, প্রগতিশীলতার নামে নারী স্বাধীনতা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-বøগ-টুইটারে আসক্তি, পর পুরুষের প্রতি নারীর আসক্তি, সামাজিজ ও নৈতিক অবক্ষয়, ব্যক্তিত্বের দ্ব›দ্ব ইত্যাদি কারণে এ বিচ্ছেদ ঘটছে। এই বিচ্ছেদে পুরুষের চেয়ে নারীরাই করছেন বেশি। আর শিক্ষিত কর্মজীবী নারীরা বিবাহ-বিচ্ছেদে এগিয়ে রয়েছেন। এক জরিপে দেখা গেছে ৭০ দশমিক ৮৫ ভাগ নারী এবং ২৯ দশমিক ১৫ ভাগ তালাক দিচ্ছেন পুরুষরা। সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর মেহতাব খানমের মতে দুটি কারণে ইদানিং বিবাহ-বিচ্ছেদ বাড়ছে। প্রথমত, মেয়েরা আগের চেয়ে বেশি শিক্ষিত হচ্ছে। তারা এখন অনেক সচেতন। মুখ বুজে নির্যাতন সহ্য না করে ডিভোর্সের পথ বেছে নিচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, মোবাইল কোম্পানিগুলোর নানা অফার, ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট, ফেসবুক এবং পর্নোগ্রাফির মতো সহজলভ্য উপাদান থেকে আকৃষ্ট হয়ে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা হারাচ্ছেন। ফলে বিয়ের মতো সুদৃঢ় সম্পর্ক এবং নৈতিক বিষয়টি ছিন্ন করতে একটুও দ্বিধা করছেন না।
ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণ ও উত্তরের তথ্যানুযায়ী, ২০১০-২০১৬ সাল পর্যন্ত রাজধানীতে তালাকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫২ হাজার। গতবছর এই সংখ্যা ছিল সাড়ে ৬ হাজার। যা ২০১৫ সালে ছিল প্রায় ৯ হাজার। এর আগে ২০১৪ সালে ৮ হাজার ২১৫টি, ২০১৩ সালে ৮ হাজার ২১৪, ২০১২ সালে ৭ হাজার ৯৯৫, ২০১১ সালে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে ৫ হাজার ৩২২ এবং ২০১০ সালে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে সাড়ে ৫ হাজার। প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০টির মতো বিচ্ছেদের আবেদন জমা হচ্ছে। প্রতিবছরই আগের বছরের তুলনায় বাড়ছে এই সংখ্যা। বর্তমানে রাজধানীতেই নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৯ হাজার বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন। ঢাকা শহরের চেয়ে সারাদেশে এই চিত্র আরো ভয়াবহ।
রাজধানীতে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করেন হাসান। স্ত্রী ফেরদৌসিকে নিয়ে উত্তরায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। হাসান সারাদিন অফিসে থাকায় তার স্ত্রী সময় কাটানোর জন্য বেছে নেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক। সেখানেই বন্ধুত্ব গড়ে উঠে অপরিচিত এক ছেলের সাথে। পরবর্তীতে তার সাথে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সংসারে অশান্তি দেখা দিলে তাদের (হাসান-ফেরদৌসি) সম্পর্ক বিচ্ছেদে রূপ নেয়। মিরপুরের শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম ও শাহিনা ইসলামের বিবাহিত জীবন ৭ বছরের। সংসার জীবনে ৩ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। হঠাৎ করেই স্ত্রীর কাছ থেকে তালাকের নোটিস পান আজিজ। স্ত্রীর কাছে তালাকের কারণ জানতে চাইলে কোন সদুত্তোর দেননি। তবে সালিশী বোর্ডের কাছে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদনে তিনি তার স্বামীকে পরনারীতে আসক্ত, মাদকসেবী ও যৌতুকের কারণে নির্যাতনকারী বলে উল্লেখ করেছেন। বিবাহ একটি পবিত্র বন্ধন হলেও হাসান-ফেরদৌসি কিংবা আজিজুল-শাহিনার অসংখ্য দম্পতি এই বন্ধনকে অহরহ বিচ্ছেদে রূপ দিচ্ছেন। কেবল ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকাতেই প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০টির মতো বিচ্ছেদের আবেদন জমা হচ্ছে। প্রতিবছরই আগের বছরের তুলনায় বাড়ছে এই সংখ্যা। বর্তমানে রাজধানীতেই নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৯ হাজার বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন। শুধু শহরে নয় সারাদেশে এই ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। আর এই বিচ্ছেদে পুরুষের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নারীরা। এক জরিপে দেখা গেছে ৭০ দশমিক ৮৫ ভাগ নারী এবং ২৯ দশমিক ১৫ ভাগ তালাক দিচ্ছেন পুরুষরা।
সমাজ বিজ্ঞানী প্রফেসর মেহতাব খানম বলেন, দুটি কারণে বিবাহ-বিচ্ছেদ বাড়ছে। প্রথমত, মেয়েরা আগের চেয়ে বেশি শিক্ষিত হচ্ছে। তারা এখন অনেক সচেতন। মুখ বুজে নির্যাতন সহ্য না করে ডিভোর্সের পথ বেছে নিচ্ছেন। মেয়েরা আগের চেয়ে বেশি শিক্ষিত এবং স্বাবলম্বী হওয়ায় আত্মঅহঙ্কার বেড়েছে। সামাজিক ও পারিবারিক বাঁধন মানতে নারাজ তারা। আছে অনেক ধনীর দুলালীর আত্মঅহমিকাও। বাধাহীন জীবনে অনেক ক্ষেত্রে তারা জড়িয়ে পড়ছেন পরকীয়ায়। আসক্ত হচ্ছে নানা মাদকে। দ্বিতীয়ত, মোবাইল কোম্পানিগুলোর নানা অফার, ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট, ফেসবুক এবং পর্নোগ্রাফির মতো সহজলভ্য উপাদান থেকে আকৃষ্ট হয়ে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা হারাচ্ছেন। ফলে বিয়ের মতো সুদৃঢ় সম্পর্ক এবং নৈতিক বিষয়টি ছিন্ন করতে একটুও দ্বিধা করছেন না তারা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বামী বা স্বামী পক্ষের যৌতুক দাবি, স্বামী-স্ত্রী উভয়ের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার, মাদকাসক্তি, পরকীয়া, দু’জনের জীবনযাপনে অমিল, সন্দেহপ্রবণতা, স্বামীর কাছ থেকে ভরণ-পোষণ না পাওয়া, স্ত্রীর অবাধ্য হওয়া, ফেইসবুক ও টুইটারে মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক সম্পর্কে জড়ানো এবং ধর্মীয় অনুশাসন অনুযায়ী জীবনযাপন না করায় তালাকের ঘটনা ঘটছে।
আর রাজধানীতে পারিবারিক জীবনে সংসার ভাঙার ঘটনা অস্বাভাবিকহারে বাড়ছে। এর বেশিরভাগই হচ্ছে মেয়েদের পক্ষ থেকে। স্ত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বামীকে তালাক দিচ্ছেন। ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) হিসাব অনুযায়ী মোট তালাকের ৮০ ভাগই দিচ্ছেন নারীরা। বছরে নগরীতে সাত হাজারের বেশি বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটনা ঘটছে। দিন দিন এর মাত্রা বাড়ছে বলে ডিসিসির তথ্যে জানা গেছে। স্বামী-স্ত্রীর পরকীয়া অথবা আভিজাত্যের অহঙ্কারে ভেঙে যাচ্ছে রাজধানীর বহু সাজানো ঘর, জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে সুখের সংসার। ইন্টারনেট, ফেইসবুক মোবাইল ফোনসহ যাবতীয় তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। উদ্বুদ্ধ করছে প্রতিবেশী দেশের বিভিন্ন হিন্দি সিরিয়াল, নাটক এবং নানা দেশীয় পর্নোগ্রাফি। এসব কিছুর সহজলভ্যতায় নৈতিক মূল্যবোধ হারাচ্ছে অনেক নারী-পুরুষ। ঘটছে নৈতিক স্খলনও। এতে তারা জড়িয়ে পড়ছে পরকীয়ার মতো গুরুতর সামাজিক অপরাধে।
ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণ ও উত্তরের তথ্যানুযায়ী, ২০১০-২০১৬ সাল পর্যন্ত রাজধানীতে তালাকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫২ হাজার। গতবছর এই সংখ্যা ছিল সাড়ে ৬ হাজার। যা ২০১৫ সালে ছিল প্রায় ৯ হাজার। এর আগে ২০১৪ সালে ৮ হাজার ২১৫টি, ২০১৩ সালে ৮ হাজার ২১৪, ২০১২ সালে ৭ হাজার ৯৯৫, ২০১১ সালে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে ৫ হাজার ৩২২ এবং ২০১০ সালে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে সাড়ে ৫ হাজার।
বিবাহ ও বিচ্ছেদ নিয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশন গবেষণা করছে ১৯৯৫ সাল থেকে। করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণ অংশে বিভক্ত হওয়ার পরও তা জারি আছে। প্রতিবছর জুনে তারা গবেষণা প্রতিবেদন জমা দেয়। তাদের গবেষণা অনুযায়ী, যেসব আবেদন ইতিমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে তার মধ্যে ৮৭ শতাংশ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে পরকীয়ার জের ধরে। ঢাকা সিটি করপোরেশন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০০ সালে ঢাকা শহরে মোট ডিভোর্স নোটিসের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭৫৩টি, ২০০১ সালে ২ হাজার ৯১৬টি, যার মধ্যে ডিভোর্সের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৪০টি, ২০০২ সালে নোটিসের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৭৩টি, এর মধ্যে তালাক হয়েছে ২ হাজার ৬১৫ টি, ২০০৩ সালে নোটিস এসেছে ৩ হাজার ২০২টি, এবং এর মধ্যে তালাক হয়েছে ২ হাজার ৯৬১টি, ২০০৪ সালে তালাকের নোটিস এসেছিল ৩ হাজার ৩৩৮টি, এবং আপোষ হয়েছে ৩৩৮টি। প্রতিবছর বিচ্ছেদের ঘটনা বাড়তে থাকায় করপোরেশনের সালিসি বোর্ডের কর্মকর্তারাও বেকায়দায় পড়েন। বিবাহ-বিচ্ছেদ এতটাই বেড়ে যায় যে, আগে যেখানে সিটি করপোরেশনের আইন বিভাগ থেকে বিচার সালিশ কার্যক্রম পরিচালিত হতো। সেখানে চাপ সামাল দিতে না পারায় ২০০৬ সালে ১০টি অঞ্চলে ভাগ করে অঞ্চলভিত্তিক সালিশ বোর্ড গঠন করে ঢাকা সিটি করপোরেশন। ডিসিসির ১০টি অঞ্চলের হিসাব মতে, ২০০৫ সালে বিয়ে বিচ্ছেদের সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৫২৫টি, ২০০৬ সালে তা বেড়ে ৬ হাজার ১২০টি, ২০০৭ সালে এ সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ হাজার ২০০, ২০০৮ সালে এর পরিমাণ কিছুটা কমে আসে, এ বছরে বিয়ে বিচ্ছেদের সংখ্যা ৭ হাজার ৭৮টি, ২০০৯ সালে তা আবার বেড়ে দাঁড়ায় ৭ হাজার ৭০৪টিতে। সিটি করপোরেশনের পরিসংখ্যান আর মহিলা আইনজীবী সমিতির তথ্য অনুযায়ী নারীর পক্ষ থেকেই ডিভোর্সের সংখ্যা এখন বেশি। আর তালাক দেয়ার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ নারীর বয়সই ২৫ থেকে ৩৫ এর মধ্যে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল-১ এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান সময়ে ঢাকা শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে তালাক প্রবণতা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রতিদিন ৫০/৬০টি তালাকের আবেদন পড়ে। উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত সকল শ্রেণির মধ্য থেকেই আবেদন আসছে। তিনি বলেন, ফেইসবুক, মোবাইল, ভাইবার, হোটসঅ্যাপ ও ও ইমোর মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এর মাধ্যমে সৃষ্ট দ্ব›দ্বই বিচ্ছেদে রূপ নিচ্ছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল-২ এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান সময়ে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই বেশি তালাক প্রবণতায় ঝুঁকে পড়েছে। বিদেশী চ্যানেলে নাটক সিরিয়াল দেখে অনেক মেয়ারাই এখন প্রতিবাদী হয়ে গেছে। মেয়েরা এখন আর আগের মত শ্বশুর-শাশুড়ি কিংবা স্বামীকে তেমন একটা দাম দিতে চায় না। তিনি বলেন, এছাড়াও বর্তমান সময়ে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের চাকরি পাওয়ার সুযোগ কম। যে কারণে স্ত্রী চাকরি করে টাকা ইনকাম করে, আর স্বামী বেকার। বেকার স্বামীর কথামত চলতো চাকরিজীবী স্ত্রী বাধ্য নয়। এভাবেই তাদের সংসারে জগড়া-ঝাটির সৃষ্টি হয়। এ থেকেই মেয়েরা এখন তালাকের সিদ্ধান্তে পৌঁঁছে যাচ্ছে অহরহ। আর আমাদের কাছেও এখন ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পক্ষ থেকেই বেশি তালাকের আবেদন আসছে।
সমাজ ও মনোবিজ্ঞানীদের মতে, আধুনিকতার নামে পশ্চিমাধাঁচের জীবনযাপন মানুষের জীবনের খুব বেশি প্রভাব ফেলছে। এজন্য মধ্য ও উচ্চবিত্ত প্রায় প্রতিটি পরিবারের মধ্যেই খুব অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। উপড়ে উঠার জন্য ও নিজেদের প্রকাশ করার প্রতিযোগিতায় সমাজের মানুষ খুব বেশি অধৈর্য হয়ে পড়ছে। পরিবারগুলোর মধ্যে ধর্মীয় ও নৈতিকতার চর্চা উঠে যাচ্ছে। পারস্পরিক সহমর্মিতার অভাব, সম্মানবোধের অভাব সর্বোপরি ধর্মহীনতা তথা ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পর্দাহীনতার কারণে পরিবারগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ তালাকের ঘটনা ঘটছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও সমাজবিজ্ঞানী ড. এমাজউদ্দিন আহমদ বলেন, একটি সমাজ যখন হিংসাত্মক কার্যক্রমে লিপ্ত হয়, তখন সমাজের স্বাভাবিকতা নষ্ট হয় এবং এসব ঘটনা ঘটে। আমাদের মূল্যবোধ তো গেছেই পাশাপাশি স্বাভাবিকতাও বিনষ্ট হয়ে গেছে। প্রথমে শহরে, পরে গ্রামে। তিনি বলেন, সমাজে তথ্য-প্রযুক্তির প্রভাবে মোবাইল ফোনের অপব্যবহার, ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপিসহ নানা প্রযুক্তির বিকৃত ব্যবহার, পারিবারিক মূল্যবোধের অভাব, বিদেশি অপসংস্কৃতির প্রভাব, নিজেদের মাঝে আত্মতুষ্টি না থাকা, একে অপরের মাঝে বোঝাপড়ার অভাব বা ধৈর্যচ্যুতি, পারিবারিক শিক্ষা ও সচেতনতা না থাকাসহ নানা কারণে পরকীয়া ও বিবাহ-বিচ্ছেদের ঘটনা বাড়ছে। এ সমস্যার উত্তরণ ঘটাতে নতুন কোনো উদাহরণ তৈরি করতে হবে।
এই জনপদে পরিবারের কেন্দ্রে থাকা নারী-পুরুষের এ সম্পর্ক পারিবারিক, ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে স্বীকৃত হয় বিয়ের মাধ্যমে। কোনো কারণে এই সম্পর্কে ছেদ পড়লে তা পৌঁছায়, আইনত বিবাহ-বিচ্ছেদে। দীর্ঘকাল ধরে এ জনপদের সামাজিক সংস্কার বিবাহ-বিচ্ছেদকে দেখেছে পারিবারিক এবং সামাজিক মারাত্মক গøানি হিসেবে। কিন্তু আধুনিকতার নামে পরিবর্তন ঘটেছে সেই সংস্কারের? বৃদ্ধ শ্বশুর ভুল করে পুত্রবধূর তোয়ালে ব্যবহারের ঘটনায় স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে বিচ্ছেদের পরিণতি হয়েছে। স্বামীর ঘরে বৃদ্ধ পিতা-মাতা থাকার কারণেও অনেক স্ত্রী বিচ্ছেদের নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেন আমাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় আমরা পরস্পর আলাদা হতে চাই, কিংবা আমি এ স্বামীর সংসার করতে অপারগ। আবার যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন, পরনারী (পরকীয়া), মাদক, পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত থাকার কারণে স্বামীর প্রতি অতিষ্ট হয়ে সংসার ত্যাগ করেছেন অনেক স্ত্রীও।
সাধারণত স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া, একে অপরের মধ্যে সংসারের নানা কারণে সন্দেহ প্রবণতা সৃষ্টি, স্বামী কাছে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন, সংসারে মিথ্যা কথা বলার প্রতি ঝোঁক বেড়ে যাওয়া, পরকীয়া, মাদক আসক্তি, প্রতিশ্রæতি রক্ষা না করা ও শারীরিক সম্পর্কে অক্ষমতাই তালাকের কারণ হিসেবে সিটি করপোরেশনের তথ্যে জানা গেছে। তবে এর বাইরে সমাজে তথ্য-প্রযুক্তির প্রভাবে মোবাইল ফোনের অপব্যবহার, ফেইসবুক, টুইটার, স্কাইপিসহ নানা প্রযুক্তির বিকৃত ব্যবহার, অতিরিক্ত লোভ, অবৈধ অর্থ আয়ের চেষ্টা, সংসারে প্রয়োজনীয় সময় না দেয়া, স্ত্রী-সন্তানদের সময় না দেয়া ও সংসারের প্রতি উদাসীনতা, সহনশীলতা ও পারিবারিক মূলবোধের অভাব, বিদেশী অপসংস্কৃতির প্রভাব, বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসন, নিজেদের মাঝে আত্মতুষ্টি না থাকা, একে অপরের মাঝে বোঝাপড়ার অভাব বা ধৈর্যচ্যুতি, পারিবারিক শিক্ষা ও সচেতনতা না থাকাসহ নানা কারণে তালাক দেয়ার ঘটনা ঘটছে।
অভিজাত ও উচ্চবিত্তদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সন্দেহ অবিশ্বাসের কারণেও কিছু বিচ্ছেদ ঘটছে। অনেকক্ষেত্রে ঠুনকো সন্দেহবশত আবেগতাড়িত বিষয়ও থাকে। রাজধানীর গুলশান, বনানী, উত্তরা ধানমন্ডির মতো অভিজাত এলাকার বহু সুখের সংসারের অবসান হচ্ছে বিচ্ছেদে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন নগরীর সবচেয়ে অভিজাত ওইসব এলাকায় গত এক বছরে প্রায় দেড় হাজার বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় একটি বিচ্ছেদের ঘটনাও যৌতুকের কারণে ঘটেনি। গরিব পরিবারগুলোর সমস্যা ভরণপোষণ কিংবা যৌতুক ও অভাব অনটন। বিয়ের দীর্ঘদিন পরে কয়েকটি সন্তান জন্মের পরও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তালাকের ঘটনা ঘটছে। এতে তালাক হওয়া দম্পতির সন্তানরা পারিবারিকভাবে পিতা অথবা মাতা না থাকায় অনায়াসে বিপথগামী হয়ে পড়ছে। বাবা-মায়ের এ ধরনের ঘটনা সন্তানদের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলছে। ফলে অভিভাবকহীন এসব সন্তান খুব সহজেই হয়ে পড়ছে মাদকাসক্ত ও অপরাধপ্রবণ। সন্তানরা নিজেদের সবার কাছ থেকে আড়াল করে রাখে; যা তাদের মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয় এবং হীনম্মন্যতায় ভোগে।
বিয়ে সালিশী পরিষদের এক কর্মকর্তা জানান, পরকীয়ার কারণেও বেশ কিছু বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। যেমনÑ গুলশান-নিকেতন এলাকার এক বাসিন্দা দীর্ঘদিন বিদেশে কর্মরত ছিলেন। ১৭ বছর বয়সের এক মেয়ে ১৪ বছর বয়সের কন্যাকে নিয়ে স্ত্রী থাকতেন দেশে। এক পর্যায়ে ছেলের শিক্ষকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে যান স্ত্রী। গোপনে খবর পেয়ে স্বামী ছুটে আসেন ঢাকায়। কিন্তু তার আগে স্ত্রী ঠুকে দেন তালাকের নোটিস। ওই স্ত্রী চলে যান আলাদা ঘরে। স্ত্রীর দেয়া তালাকের নোটিস ঠেকানোর জন্য ওই স্বামী বহু কান্নাকাটি করেছেন হাতে পায়ে ধরেছেন অনেকের। কিন্তু তাতে ডিসিসির অনেকের মনে দাগ কাটলেও মন গলেনি স্ত্রীর। কিছুদিন আগে উত্তরায় দুই ভাইবোনের আত্মহত্যার ঘটনা জন্ম দিয়ে গেছে নানা প্রশ্নের। হতাশা, নাকি বাবা-মা’র বিচ্ছেদ, তারা কোনো ঘটনার শিকার ছিল কি না- এমন অনেক প্রশ্ন রেখে গেছে বলে মনে করছেন মনোবিজ্ঞানীরা। আইনজীবীদের মতে, অন্যান্য দেশের তুলনায় এদেশে বিবাহ-বিচ্ছেদের প্রক্রিয়াটা খুব সহজ বলে সংখ্যাটা দ্রæতই বাড়ছে। তাই এ আইন সংশোধনের পাশাপাশি রাজধানীতে তালাকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে কাউন্সিলিং এর ওপর জোর দিচ্ছেন সমাজকর্মী ও মনোবিজ্ঞানীরা।
তালাকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ার কারণ হিসেবে সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, নারীরা পূর্বের চেয়ে অনেক স্বাধীন ও স্বনির্ভর হওয়ায় তারা মুখ বুঝে নির্যাতন সহ্য করতে চান না বলেই তালাকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই প্রবণতা বাড়তে থাকলে ভবিষ্যত প্রজন্ম বিপথগামী হবে, যা সমাজে ভয়াবহ সঙ্কট সৃষ্টি করবে বলে বিশেষজ্ঞ মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে যে এভাবে পাশ্চাত্যের মতো আমাদের দেশে ও হয়তো সিংগ্যাল মাদার-এর সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে যা তাদের সমাজে একটি অন্যতম সমস্যা। দেশে কিশোর অপরাধীদের বেশিরভাগই কিন্তু এসব ভাঙ্গা পরিবারের সন্তান। পরিবারের অনাদরে, অবহেলায় এবং শারীরিক/মানসিকভাবে অত্যাচারিত হয়ে বেড়ে ওঠা।
মিরপুরের নিকাহ রেজিস্ট্রার বা কাজি মো. আমির হোসেন বলেন, বিয়ে বিচ্ছেদের হার প্রতিবছরই বাড়ছে। আর এই বিচ্ছেদের আবেদনের ৭০ ভাগই আসে নারীদের কাছ থেকে। এক্ষেত্রে একপাক্ষিক তালাকের আবেদনই বেশি। তবে সমঝোতার ভিত্তিতেও সম্পর্ক শেষ করছেন কোনো কোনো দম্পতি। এ ছাড়া পরে সালিশে কিছু সংসার টিকলেও, তার সংখ্যা নগণ্য। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, কাজি অফিসে তালাকের আবদেনের মধ্য দিয়ে এর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর সিটি করপোরেশন ৩ মাস সময় দেয় উভয়পক্ষকে সমঝোতার জন্য। যদি সমঝোতা না হয়, তাহলে তালাকের আবেদনের দিন থেকেই তা কার্যকর হয়। তবে অভিযোগ আছে সিটি করপোরেশনের আইন বিভাগ এই সমঝোতার উদ্যোগ নেয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা আইনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। মো. আমির হোসেন বলেন, তালাকের আবেদনে সাধারণত মূল কারণ উল্লেখ করা হয় না। আইনি জটিলতা এড়াতে কারণ হিসেবে বনিবনা না হওয়ার কথা বলা হয়। তবে আসল কারণ আরও গভীর। তিনি বলেন, যেই বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করুন না কেন, তাদের অন্যতম অভিযোগ হলো বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক। এ ছাড়া নারীরা নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগ করেন, করেন মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, বর্তমান সময়টা খুব অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সমাজের মানুষ খুব বেশি অধৈর্য হয়ে পড়ছে। পরিবারগুলোর মধ্যে নৈতিকতার চর্চা উঠে যাচ্ছে। পরকীয়া, পরিবারকে খুব বেশি সময় না দেয়া, পারস্পরিক সহমর্মিতার অভাব, আস্থাহীনতা, সম্মানবোধের অভাবÑ সর্বোপরি যান্ত্রিকতার কারণে পরিবারগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ ভাঙনের ঘটনা ঘটছে। অধিকাংশ বিয়ে বিচ্ছেদের পেছনে পুরুষ বেশি দায়ী হলেও নারীই বেশি করে বিয়ে বিচ্ছেদ চাইতে বাধ্য হচ্ছে। এর পেছনে নারীর ক্ষমতায়নের চেয়ে শিক্ষার হার ও সম্মানবোধ বেড়ে যাওয়াকে দায়ী বলে মনে করেন তারা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, নারীর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সহনশীল মনোভাব থাকা। তারা সহশীল থাকলে তালাকের পরিমাণ এত বাড়ত না। এজন্য এই না যে নারীর প্রতি নির্যাতন হচ্ছে না। নির্যাতন হলেই সরাসরি তালাক দিতে হবে তা না; কিছুদিন দেখে-বুঝে তারপর এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত, তাহলেই এই সংখ্যা কমানো সম্ভব। ক্ষমতায়নের কারণে নারী তালাকে পুরুষের চেয়ে এগিয়ে গেছে। পারিবারিক মূল্যবোধ ও সহনশীলতা ধরে রাখলেই এই সংখ্যা কমানো সম্ভব। এছাড়া নানা কারণে কিছু নারী-পুরুষ উভয়ই বিয়ের পর বিবাহবহির্ভূত রোমান্সেও জড়াচ্ছেন বলে মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানীরা। আর তাও বিচ্ছেদ ডেকে আনছে। তবে সবচেয়ে বড় কারণ হল বিশ্বাসহীনতা। নানা কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাসহীনতা বাড়ছে। এখন দু’জনই কাজ করছেন, বাইরে যাচ্ছেন। তাদের সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব এবং পরিচিতিজনের সঙ্গে মিশছেন কথা বলছেন। আর এটা যে বাইরেই তা নয়। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে এই যোগাযোগ সার্বক্ষণিক যোগযোগে পরিণত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিচিতি এবং সম্পর্কের বহুমুখী ধারা তৈরি করেছে। আর এখানে স্বচ্ছতা না থাকলেই বিপর্যয়। এ থেকে দূরে থাকতে নিজেদের মধ্যে শুরু থেকেই বিশ্বাসের ভিত গড়ে তুলতে হবে। থাকতে হবে স্বচ্ছতা। থাকতে হবে সহনশীলতা এবং সমঝোতার মানসিকতা। সিদ্ধান্ত নিতে হবে সুস্থির হয়ে।



 

Show all comments
  • গালিব ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:২৩ এএম says : 0
    এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।
    Total Reply(0) Reply
  • ইমন ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১:০৬ এএম says : 0
    এটি এখন সামাজিক ব্যধিতে রূপ নিয়েছে, নারির অধিকারের নামে অপসংস্কৃতির চর্চা হচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • Badsha ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১:১৩ পিএম says : 0
    Family bondage should be strong otherwise it'll increase day by day.
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Mustafa Kamal ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১:১৫ পিএম says : 0
    ইনকিলাবের রিপোর্টের মান দেখে হতাশ হলাম। ................... তবে রিপোর্টিং ইসুটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
    Total Reply(0) Reply
  • মারজানা ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১:৩৮ পিএম says : 0
    অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও দিক নির্দেশনামুলক লেখা। লেখকদেরকে অসংখ্য মোবারকবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • সাইদুর রহমান ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১:৩৮ পিএম says : 0
    পর্ণগ্রাফির সহজলব্যতা বন্ধ করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • শরীফুল ইসলাম ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১:৪১ পিএম says : 0
    পারিবারিক, সামাজিক ও রাস্ট্রীয় পর্যায়ে ধর্মীয় মুল্যবোধ সৃষ্টি করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • সনিয়া ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১:৪২ পিএম says : 0
    এটা ওইসব পরিবারের বাচ্চাদের উপর বিশাল প্রভাব ফেলে।
    Total Reply(0) Reply
  • ওয়াসিম ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৩:০২ পিএম says : 0
    এটা রোধ করা না গেলে আমাদের দেশের সামাজিক বন্ধনগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • ফাহাদ ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৩:০৩ পিএম says : 0
    একটি বন্ধন টিকে থাকার জন্য উভয়ের স্বচ্ছ হওয়া খুব জরুরী
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ