পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সীমান্তে বিএসএফ এখন অপরাধীদের দ্বারা ‘আক্রান্ত হচ্ছে বেশি’ -বিএসএফ প্রধান কে কে শর্মা
স্টাফ রিপোর্টার : সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যার জন্য সমালোচনার মুখে থাকা বিএসএফের প্রধান কে কে শর্মা উল্টো দাবী করে বসলেন, সীমান্তে মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসার পর এখন অপরাধীদের দ্বারা ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেড়ে গেছে। ঢাকায় গত ১৮ ফেব্রæয়ারি শুরু হওয়া বিজিবি ও বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৪৪তম সীমান্ত সম্মেলনে এই দাবি করেন তিনি। সম্মেলন শেষে গতকাল মঙ্গলবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল আবুল হোসেন ও বিএসএফ প্রধান কে কে শর্মা। ঢাকার পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে এই সংবাদ সম্মেলনে দুই পক্ষের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিজিবি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোহসিন রেজা।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সন্ত্রাসীদের সীমান্ত পাড়ি দেয়া ঠেকাতে, কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। এতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বিএসএফ। তিনি বলেন, সীমান্তের যে সব জায়গায় বেশি গোলাগুলি হয়; সে সব স্থান চিহ্নিত করতে, যৌথভাবে কাজ করবে বিজিবি-বিএসএফ।
তবে, সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ জানান, বিএসএফ মহাপরিচালক কে কে শর্মা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী নিহতের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোও উদ্বেগ জানিয়ে আসছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার কমিয়ে সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রæতি দেয় বিএসএফ। তারপর সীমান্তে হত্যা কমেছে বলেও পরিসংখ্যান দেখিয়ে আসছে বিএসএফ। এর মধ্যেই এবারের সীমান্ত সম্মেলনে বিএসএফ সদস্যদের আক্রান্ত হওয়া নিয়ে উদ্বেগ জানালেন বাহিনীর প্রধান শর্মা।
বিএসএফ মহাপরিচালক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রাণঘাতী নয়, এমন কৌশল অবলম্বন করার ফলে মৃত্যুর ঘটনা কমিয়ে আনা গেলেও অপরাধীদের দ্বারা বিএসএফের সদস্যদের উপর আক্রমণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে শর্মা দাবি করেন, তার বাহিনীর সদস্যরা ‘আত্মরক্ষার্থেই’ অস্ত্র ব্যবহার করেন। তবে ‘নন-লেথাল’ অস্ত্র দিয়ে ‘ফায়ার’ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিজিবি মহাপরিচালক বাংলাদেশী নাগরিকদের গুলি করা ও হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিএসএফ কর্তৃক সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন ও ভারতীয় নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সীমান্তে মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে গবাদি পশু ও মাদক চোরাচালান প্রবণ এলাকায় সমন্বিত যৌথ টহল, সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের বিধি-নিষেধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিজিবি ও বিএসএফ কর্তৃক যৌথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হন।
বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা হত্যার ক্ষেত্রে যৌথভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং শনাক্তকরণ ও মূল্যায়নের বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হয়।
সীমান্তে হত্যার ঘটনা বিজিবি ও বিএসএফ যৌথভাবে তদন্ত করবে- এমন প্রস্তাব থেকে ফিরে আসার বিষয়ে বিজিবি প্রধান আবুল হোসেন বলেন, কোনো হত্যাকাÐের ঘটনার তদন্ত বিএসএফ বা বিজিবি করতে পারে না। তদন্ত করে উভয় দেশের পুলিশ।
বিএসএফ মহাপরিচালক জানান, পরিবেশ দূষণ রোধে ভারতের আগরতলা প্রান্তে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) এবং সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশের আখাউড়া প্রান্তে বক্স কালভার্টসহ ড্রেইনেজ নির্মাণ কাজ শিগগিরই শুরু হবে।
একই সাথে এই স্থানটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় এবং জয়েন্ট রিট্রিট সেরিমনির জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হবে।
উভয় মহাপরিচালক সীমান্ত হাটের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সীমান্ত পর্যটন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নিজ নিজ দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করতে সম্মত হয়। পারস্পরিক আস্থা বাড়াতে যৌথ প্রশিক্ষণ, অনুশীলন, দুঃসাহসিক প্রশিক্ষণ, কায়কিং, র্যাফটিং, সাইক্লিং, রোয়িং, মাউন্টেইন ক্লাইম্বিং ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণেও মতৈক্য হয় সম্মেলনে।
বিএসএফ প্রধান কে কে শর্মার নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশ নেন। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন ২৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। দুই বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের পরবর্তী সম্মেলন হবে এ বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নয়াদিল্লীতে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।