Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ নেতা রানা গ্রেফতার

| প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ নেতা রেজওয়ানুল আজাদ রানা অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় পালিয়ে ছিলেন। দেশে ফেরার পর ঢাকার কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গতকাল সোমবার গ্রেফতার করে। প্রায় চার বছর ধরে রানা আত্মগোপন করেছিলেন। এই সময়ে সে দেশে ও মালয়েশিয়ায় পলাতক ছিলেন। তার নেতৃত্বে ও পরিকল্পনাতেই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা গত কয়েক বছর ধরে লেখক-বøগার ও প্রকাশকদের হত্যা করে আসছিল।
কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, রানা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ নেতা এবং দুর্ধর্ষ জঙ্গি। বøগার রাজীব হত্যার মামলায় তার মৃত্যুদÐ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া বøগার আসিফ মহিউদ্দিন ও মণিপুর স্কুলের শিক্ষক হত্যাচেষ্টা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি সে। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছিলাম।
সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, রানাকে গতকাল গ্রেফতার করা হলো। তাকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার কাছ থেকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি মিরপুরের পল্লবীতে বøগার রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যার পরপরই রেজোয়ানুল আজাদ রানার নাম আসে। কিন্তু ওই ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক ছিল। পলাতক অবস্থাতেই সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ‘সিøপার সেলগুলো পরিচালনা করত। তার নির্দেশনা এবং পরিকল্পনাতেই একের পর বøগার-প্রকাশক ও লেখকদের হত্যা করা হয়। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজীব হত্যা মামলায় রানাকে মৃত্যুদÐের আদেশ দেন আদালত।
সিটিটিসির একজন কর্মকর্তা জানান, ২০১৩ সালে ১৩ ফেব্রæয়ারি পল্লবীতে বøগার রাজীব ও পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রæয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বøগার ও লেখক অভিজিৎ রায়, ৩০ মার্চ তেজগাঁওয়ে বøগার ওয়াশকিুর রহমান বাবু, ১২ মে সিলেটে বøগার অনন্ত বিজয় দাস, ৭ আগস্ট বøগার ঢাকার গোড়ানে নিলয় নীল, ৩১ অক্টোবর শাহবাগে প্রকাশক ও লেখক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা ও লালমাটিয়া শুদ্ধস্বরের মালিক আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল হত্যাচেষ্টা এবং সর্বশেষ গত বছরের ২৫ মার্চ কলাবাগানে সমকামীদের অধিকারকর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয় হত্যার ঘটনার সঙ্গে এই রানার কোনো না কোনোভাবে যোগসূত্র রয়েছে।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত রানার গ্রামের বাড়ি ফেনীর দাগনভুইয়ার উত্তর জয়লস্করপুরে। তার বাবার নাম আবুল কালাম আজাদ। মায়ের নাম মমতাজ বেগম। ঢাকায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আই-বøকের ১৮৭/সি নাম্বার বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকত সে। ১৯৮৮ সালের ২৬ আগস্ট জন্ম নেয়া রানা ঢাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০০৫ সালে এসএসসি ও নটরডেম কলেজ থেকে ২০০৭ সালে এইচএসসি পাস করে। এরপর সে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়। নর্থসাউথে পড়ার সময় সে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আধ্যাত্মিক নেতা মাওলানা জসিম উদ্দিন রাহমানীর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিল সে। মূলত তার মাধ্যমেই নর্থসাউথসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে।
সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, রানা ছিল তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ। বাংলার পাশাপাশি সে ইংরেজি ও আরবি ভাষাতেও দক্ষ ছিল। একারণে অল্পদিনেই সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ নেতা হয়ে ওঠে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে সিøপার সেলের মাধ্যমে দলের সদস্যদের পরিচালনাতেও ছিল সে সিদ্ধহস্ত। মালয়েশিয়ায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থাতেই দেশের অভ্যন্তরে থাকা আনাসরুল্লাহ সদস্যদের টার্গেট নির্ধারণ ও কর্মকাÐ পরিচালনা করত।
২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি বøগার রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় ওই রানার বিরুদ্ধে মৃত্যুদÐের রায় দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। এছাড়া আরও দু’টি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিও সে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ