Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

একজন রউফের একটি ভুলের চরম খেসারত

| প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের একদল ইন্টার্ন ডাক্তারদের চোখে ভয়ংকর এই অপরাধী লোকটির নাম আব্দুর রউফ সরকার। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার অডিটর বিভাগের কর্মকর্তা। পেশাগতভাবেই তিনি ভুল ত্রæটি ধরার দায়িত্ব পালন করে থাকলে ও ব্যক্তিগতভাবে তিনি মারাত্মক ভুল করে বসেন রোববার সকালে। ভুলটি হল বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিক্যালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া তার বয়স্ক পিতার অনুরোধে তার বেডের উপরের ফ্যানের সুইচটি খুঁজে না পেয়ে ওই ওয়ার্ডে অবস্থানরত একজন মহিলা ইন্টার্ন ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করেন এই বলে যে ‘সিস্টার ফ্যানের সুইচটি কোথায় বলতে পারেন?’
সাধারণভাবে হাসপাতালের এ্যাপ্রোন পরা নার্সদের সিস্টার বলে সম্বোধনের প্রচলন থাকায় নাজ নামের ওই ইন্টার্ন ডাক্তারের ইগোতে লাগে। ঝাঁঝালো কণ্ঠে তিনি রউফ সরকারকে বলেন, ‘সুইচ কোথায় খুঁজে নিতে পারেন না, আমি কি এই ওয়ার্ডের আয়া নাকি যে আমাকে বলতে হবে ফ্যানের সুইচ কোথায়?’ দু’জনের এই কথোপকথনের মধ্যেই আরেক ইন্টার্ন ডাক্তার আসিফ এসে ততোধিক চড়া গলায় রউফকে বলে এই তুই কেরে ডাক্তারকে অপমান করিস? রউফ প্রতি উত্তরে কিছু বলার চেষ্টার মধ্যেই আসিফ তাকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে এর সাথে ছুটে এসে যোগ দেয় অন্যান্য ইন্টার্ন ডাক্তাররা। এরপর মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে এক পর্যায়ে তাকে অন্য একটি ঘরে আটক করা হয়। চলে পুলিশে দেয়ার আয়োজন। বেলা ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় মারধর চলে রউফের উপর। নিজের বয়ষ্ক ছেলের এই দশা থেকে অসুস্থ আলাউদ্দিন সরকারের শারীরিক অবস্থা চরম আকার ধারণ করলে সিনিয়র ডাক্তাররা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন।
৪টার পরে এই মর্মান্তিক খবরে হাসপাতালে ছুটে আসে রউফের বোন ও শ্যালিকা। তারা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাসুদের কাছে বিচার চান তার ভাইকে অপমান মারধরের। সঙ্গে সঙ্গে আবার শুরু হয় মারধর। এবার মার থেকে রেহাই মেলেনি রউফের বোন ও শ্যালিকাও। এবার এই মারধরের ঘটনা ঘটে হাসপাতাল পরিচালকসহ সব কর্মকর্তা ও উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে। এই ইন্টার্ন ডাক্তার দলের উন্মুক্ত তাÐবের সময় কেউই তাদের নিবৃত্ত করার সাহস দেখায়নি যা’ চরম বিস্ময়কর!
সেখানে উপস্থিত কোন ফটোসাংবাদিককে বের করতে দেয়া হয়নি ক্যামেরা। পরে পুলিশ কার্যত গ্রেফতারের ভান করে রউফকে উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ রউফকে তাদের হেফাজতে রেখেছে। কারণ ইন্টার্ন ডাক্তাররা হুমকি দিয়েছে, তাদের ভাষায় এই বলে যে ডাক্তারকে অপমানকারী রউফকে ছেড়ে দিলে তারা হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম অচল করে দেবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ