Inqilab Logo

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আজ বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে আখেরী মোনাজাত

| প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে ৪ দিনব্যপী উরশ শরিফের আখেরী মোনাজাত আজ (মঙ্গলবার) গত ৪ দিন ধরে ওয়াক্তিয়া নামাজ ও নফল নামাজসহ নানা ধরনের এবাদত বন্দেগীতে দিনরাত লাখ লাখ মুসল্লী অংশ নেয়ার পরে গতরাত ৩টায় রহমতের সময় থেকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ, জিকির, মোরাকাবা-মোশাহেদার পরে ফজরের নামাজ আদায় করেন সমবেত আশেকান, জাকেরান ও মুসল্লীবৃন্দ। আজ সকালে ফজরের নামাজ বাদ পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও এক খতম মিলাদ শেষে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পীর ছাহেব হজরত মাওলানা শাহসুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের রওজা শরিফ জিয়ারতের নিয়তে ফাতেহা শরিফ পাঠন্তে আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের উরশ শরিফকে কেন্দ্র করে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও সন্নিহিত প্রায় ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এখন তিল ধরার ঠাঁই নেই। এর পরেও প্রতিনিয়ত জনস্রোত অব্যাহত রয়েছে এ দরবার শরিফ অভিমুখে। বরিশাল-ঢাকা ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চারটি প্রবেশ পথ থেকে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলমুখী ১০-১৫ কিলোমিটার সড়ক ইতোমধ্যে প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে গেছে যানবাহনের চাপে। এর আগেই দরবার শরিফের অদূরের পার্কিং ইয়ার্ডগুলোতে অন্তত দশ হাজার যানবাহন অবস্থান নিয়েছে। গতকাল দুপুরের পরে আগত যানবাহন সমূহ মহাড়কের আশপাশেই পার্ক করতে হয়েছে। গত কয়েকটি দিনের মত রাতভরও যানবাহন বোঝাই জনশ্রোত অব্যাহত ছিল বিশ্ব জাকের মঞ্জিল অভিমুখে।
বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে এ উরশ শরিফ উপলক্ষে রাত ৩টায় রহমতের সময় থেকে শুরু করে ফজর হয়ে এশা নামাজ পর্যন্ত দিন-রাতই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ শরিফ, ফাতেহা শরিফ, খতম শরিফ, ওয়াক্তিয়া নামাজ ছাড়াও নফল নামাজ আদয় এবং জিকির ও ওয়াজ মাহফিল ছাড়াও দোয়া মোনাজাত এবং মোরাকাবা মোশাহেদা অনুষ্ঠিত হয়। লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ এ উরশে বিশাল সামিয়ানার নিচে সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে নামাজ আদায়সহ মহান আল্লাহ রাব্বুল আল-আমীনের দরবারে পানাহ চেয়ে দোয়া মোনাজাতসহ এবাদত বন্দেগীতে অংশ নেন।
আপন পীরের নির্দেশে বাংলা ১৩৫৪ সালে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পীর ছাহেব হজরত মাওলানা শাহ সুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) নিজ বাড়ী শেরপুরের পাকুরিয়া গ্রাম ছেড়ে আটরশীতে এসে ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন। টানা ৫৭ বছর তিনি এ দরবার থেকে আল্লাহ ও রাসুলের পথে সব মানুষকে দাওয়াত দিয়ে গেছেন। তিনি ছিলেন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর গ্রামের হজরত মাওলানা শাহসুফী খাজা এনায়েতপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের একজন যোগ্য খলিফা। খাজা এনায়েতপুরী (কুঃ ছেঃ) আজীজ ছাহেব ছিলেন খাজা ওয়াজেদ আলী (রঃ) ছাহেবের খলিফা। খাজা ওয়াজেদ আলী (রঃ) ছাহেবও ফরিদপুর শহরের অদূরে গের্দা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু ইসলাম প্রচারে তৎকালীন জমিদারদের বাধাসহ তাদের অত্যাচার ও উৎপীড়নে তিনি একসময়ে ফরিদপুর ত্যাগ করে কোলকাতায় হিজরত করতে বাধ্য হন। সেখানে তিনি আজীবন ইসলাম প্রচার করেন। কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালের পেছনে গোবরাবাগে রাম মোহন বেড়া লেনে তার মাজার শরিফসহ মাদ্রাসা ও মসজিদ রয়েছে। খাজা ওয়াজেদ আলী (রঃ) ছাহেবের পীর ছাহেব হজরত মাওলানা শাহসুফী ফতেহ আলী (কুঃ ছেঃ) আজীজ ছাহেবের মাজার শরিফ কোলকাতারই মানিকতলায় অবস্থিত। সেখানে তার মসজিদও রয়েছে। ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের ফতেহপুর জেলার সেরহিন্দ শরিফে তরিকায়ে নকসবন্দীয়া মুজাদ্দেদিয়ার ইমাম হজরত শায়খ আহমদ সেরহিন্দী মুজাদ্দেদ আলফেসানী (রহঃ)-এর দরবার ও মাজার শরিফ রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ