Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাবুল আক্তারের সাথে পরকীয়ার কল্পকাহিনী সম্পত্তি আত্মসাতের অপকৌশল মাত্র

সংবাদ সম্মেলনে বন্নীর দাবি

| প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাগুরা জেলা সংবাদদাতা : পুলিশের এসআই মরহুম আকরাম হোসেনের স্ত্রী বনানী বিনতে বশির (বন্নী) দাবি করেছেন যে, সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের সাথে পরকীয়ার কল্পকাহিনী প্রচার করে হয়রানি ও চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে তার (বন্নীর) স্বামীর নামীয় মূল্যবান সম্পত্তি আত্মসাতের অপকৌশলে মেতে উঠেছেন ননদরা। সোমবার দুপুরে মাগুরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন বনানী বিনতে বশীর (বন্নী)। এ সময় তাঁর সাথে পিতা বশিরউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। বন্নী অভিযোগ করেনÑ স্বামী আকরাম হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (৩য়) আদালতে ননদ জান্নাত আরা পারভীন রিনি বাদী হয়ে বন্নীর ফুফাতো ভাই সাদিমুল হক মুনকে ১নং আসামি এবং বন্নী বন্নীর পিতা বশির উদ্দীন ও মা সেলিনা খাতুনকে আসামি করে মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে কুপিয়ে ও স্যুপে বিষ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা (নং শৈলকুপা পি ৮/১৫) দায়ের করেন। ওই মামলায় ফুফাতো ভাই মুনের সাথে আমার (বন্নীর) পরকীয়ার কল্পকাহিনী উল্লেখ করা হয়। ওই সময়ের পর থেকে পরবর্তী দু’বছরের মধ্যে কখনও বাবুল আক্তারের কোন নামগন্ধ ননদরা কোথাও বলেননি। অথচ এখন ফুফাতো ভাইকে বাদ দিয়ে বর্তমান সময়ের আলোচিত সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের সাথে আমাকে নিয়ে নতুন কাহিনী সৃষ্টি করছেন কুচক্রী ননদরা।
বন্নী লিখিত বক্তব্যে আরও অভিযোগ করেন স্বামী আকরাম হোসেনের ৫টি বোন, কোন ভাই নেই। আকরাম হোসেন দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে চাকরি করেছেন। সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থে ঢাকার মগবাজারে ১টি ফ্লাট কিনেছেন। এছাড়াও ঝিনাইদহ শহরে ৩০ শতক জমির ওপর আকরামের দ্বিতল বাড়ি রয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য সাড়ে তিন কোটি টাকা।
এসআই আকরাম হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন ঢাকা সিটি এস বি থেকে ১ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে আমার হাতে দেয়। তখনই ননদ জান্নাত আরা পারভীন রিনি আমাকে চাপ দিয়ে বোন জামাই আব্দুর রশিদের হাতে ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করেন। বিষয়টি ঢাকার পুলিশের তৎকালীন এস এস এডমিন তৌফিক সাহেব ও ফারাজী সাহেব অবগত আছে।
সংবাদ সম্মেলনে বন্নী আরো অভিযোগ করেন স্বামী আকরাম হোসেন ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর পর ঝিনাইদহে এনে দাফন করা হয়। দাফনের পর পরই ননদরা স্বামীর নামীয় সম্পত্তি ও ঢাকার ফ্লাট লিখে নেয়ার জন্য আমাকে আটকে রাখার চেষ্টা করে। আমি শিশুকন্যাসহ পালিয়ে যেতে বাধ্য হই। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ননদ ও ননদ জামাইরা আমার কলেজ শিক্ষক চাচা মামাদের ধরে নিয়ে যায় এবং বেদম মারপিটে আহত করে।
সংবাদ সম্মেলনে বন্নী আরো অভিযোগ করেন, স্বামী আকরাম হোসেনের লাশের ময়না তদন্ত হয়েছে ঢাকা মেডিক্যালের ফরেনসিক বিভাগে এবং মহাখালীর সি আই ডি’তে আকরামের শরীরের বিভিন্ন অংশের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কোন বিষের আলামত মেলেনি।
পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে স্বামী আকরাম হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মর্মে আদালতে খুনের মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে। আমার ননদ জান্নাত আরা রিনির খুনের মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও উচ্চ পর্যায়ে কোন তদন্ত হলে তাতেও কোন আপত্তি নেই বন্নীর।
বন্নী আরো দাবি করেন যে, ১৯৯০ সালে খুলনায় আমার পিতা যখন চাকরি করতেন এবং বাবুলের পিতার বাসার পাশে বাস করতেন তখন আমার (বন্নীর) বয়স মাত্র ৪ বছর। ওই বয়সে কারো সাথে প্রেম করা সম্পূর্ণ অবান্তর অবাস্তব কাহিনী মাত্র। অথচ ননদ রিনি ওই সময় থেকে বাবুল আক্তারের সাথে প্রেম ছিল বলে মিথ্যাচারে নেমেছেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন যে, আকরাম হোসেন যখন মারা যান তখন বাবুল আক্তার জাতিসংঘ মিশনে দেশের বাইরে ছিলেন বলে পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি।
সংবাদ সম্মেলনে বন্নী দৃঢ়তার সাথে দাবি করেন বাবুল আক্তারের সাথে তার ব্যক্তিগত কোন পরিচয় নেই, দেখা সাক্ষাতও হয়নি। ননদরা স্বামীর ধন-সম্পদের লোভে তাকে জড়িয়ে বিভিন্ন সময়ে পরকীয়ার নতুন নতুন কাহিনী প্রচার করে তাকে হয়রানি করছে। মামলা হামলা ও শিশু কন্যাসহ জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। ফলে সে তাদের ভয়ে অনেকটা গোপনে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। বন্নী তার এতিম কন্যার ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে চায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বন্নীর পিতা বশিরুদ্দিন বলেন, মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পল্লী দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনে ২০০৯ সাল থেকে কর্মরত আছি। সে সুবাদে মেয়ের নিরাপত্তার জন্য প্রায়ই তাকে নিজের কাছে এনে রাখতে হয়। তাই বাবুল আক্তারের মাগুরার বাড়ীতে আমার মেয়ের থাকার কোনই দরকার হয় না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য ননদ জান্নাতআরা রিনির (০১৭১৮-৬৮০৫৩৪ নম্বরে) ফোন করা হলে অপর প্রান্ত থেকে মহিলা কণ্ঠে জানতে চাওয়া হয় যে, রিনিকে কি দরকার? জবাবে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বন্নীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য সম্পর্কে মন্তব্য দরকার বলা হলে, রং নাম্বার বলেই সংযোগ কেটে দেয়া হয়। ফলে রিনির মন্তব্য পাওয়া যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ