Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে ঘিরে থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী -পুলিশ কমিশনার

| প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা রোধে আমরা বদ্ধপরিকর। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আশপাশ এলাকাসহ মহানগরীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণসহ আশপাশের সকল এলাকা জুড়ে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি প্রবেশ গেইটে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ে স্থাপন করা হয়েছে এবং আগত দর্শনার্থীদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দ্বারা দেহ তল্লাশী ও হ্যান্ড ব্যাগ চেকিং এর আওতায় আনা হবে। মহিলাদের দেহ তল্লাশীর ক্ষেত্রে প্রতিটি গেইটে পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’১৭ উপলক্ষে ডিএমপি’র গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্তে সাংবাদিকদের ব্রিফিংএ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া এসব কথা বলেন।
কমিশনার বলেন-বিদেশী রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক ও নাগরিকদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ফায়ার টেন্ডার ও লাইটিং ইউনিট মোতায়েন থাকবে। সাইন্স এনেক্স চত্বরে সাব-কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, গত বছর দোয়েল চত্বরে কোন একটি দলের কর্মীসদস্যরা অযাচিতভাবে প্রবেশের চেষ্টা চালায় ও দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লাঞ্ছিত করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। শুধু তাই নয় কেউ কেউ জুতা পায়ে শহীদ মিনারে মূল বেদীর উপরেও উঠে পড়েছিল। যা নিন্দিত হয়েছিল সর্বমহলে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আমরা আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীও বিস্মিত হয়েছিলাম। এ বছর যাতে এধরনের ঘটনা না ঘটে সে দিকে কঠোর নজরদারি থাকবে।
তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে শহীদ মিনার কেন্দ্রিক চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চার স্তরের নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে-শহীদ মিনার বেদী কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্তা, শহীদ মিনার ও আশপাশ (জগন্নাথ হল ক্রসিং, ঢাকা মেডিকেল কলেজ বর্হিবিভাগ, দোয়েল চত্বর, টিএসসি কেন্দ্রিক) পিকেট ও স্ট্রাইকিং এবং মোবাইল প্যাট্রোল মোতায়েন, পলাশী, নীলক্ষেত, বকশী বাজার, চানখারপুল, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ, শাহবাগ মোড় কেন্দ্রিক পিকেট, স্ট্রাইকিং মোতায়েন, শহীদ মিনার কেন্দ্রিক রুফটপ ব্যবস্থপনা।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিয়ে কমিশনার আরও বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও এর আশপাশ এলাকায় অধিকতর নিরাপত্তার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। স্থাপিত সিসিটিভিসমুহ ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা ও আজিমপুর কবরস্থানে বোম্ব ডিসপোজাল টিম এবং ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ বিশেষ নজরদারির আওতায় আনার লক্ষ্যে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের ভিতরে ও বাহিরে পুলিশ মোতায়েন প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন-একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকল্পে শহীদ মিনারের বেদীর আশপাশে সাদা পোষাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে বিশেষ টিম, এসবি ও ডিবি’র একাধিক টিম মোতায়েন থাকবে। কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের বাহিরের চতুর্দিকে পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে লাইনিং ব্যবস্থা থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রতিটি প্রবেশ পথের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে কমিশনার বলেন- সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রতিটি প্রবেশ পথে নিরাপত্তার লক্ষ্যে পিকেট ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৃথক পৃথক প্রবেশ ও বর্হিগমন গেইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সর্বসাধারণের জন্য প্রবেশ পলাশী মোড় হয়ে জগন্নাথ হলের সামনে হয়ে শহীদ মিনারের উত্তর গেট দিয়ে প্রবেশ করবে এবং পূর্ব গেট দিয়ে বের হয়ে রোমানা ক্রসিং হয়ে দোয়েল চত্বর দিয়ে বর্হিগমন করবে। শাহবাগ হতে নীলক্ষেত, পুরাতন হাইকোর্ট হতে দোয়েল চত্বর, চানখারপুল হতে দোয়েল চত্বর, রোমানা ক্রসিং হতে ঢাকা মেডিকেল গেট, শিববাড়ী হতে টিএসসি, পলাশী, জগন্নাথ হল পর্যন্ত হকার উচ্ছেদের জন্য হকার উচ্ছেদ টিম মোতায়েন থাকবে।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও ডাইভারশন নিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন-একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে নির্দিষ্ট স্থানে ব্যানার, দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড স্থাপন করা এবং ডাইভারশন ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহান একুশে ফেব্রুয়ারির আগের দিন অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের ভিতরে সকল ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ভিভিআইপি ও বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দের পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সর্বসাধারণের জন্য শহীদ মিনারের বেদী উন্মুক্ত হবে। ভিভিআইপি ও বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দের পুষ্পস্তবক অর্পণ না করা পর্যন্ত সর্বসাধারণকে ধৈর্য্য ধরে জগন্নাথ হল ক্রসিংয়ে অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হলো। দোয়েল চত্বর, জিমনেসিয়াম ও রোমানা ক্রসিং দিয়ে উল্টো পথে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
ব্যানার, ফ্যাস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিষিদ্ধকরণ নিয়ে কমিশনার বলেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ভাব গাম্ভীর্যের সাথে উদযাপনের লক্ষ্যে শহীদ মিনারের আশপাশে সকল ধরণের ব্যানার, ফ্যাস্টুন, প্ল্যাকার্ড বহন নিরুৎসাহিত/নিষিদ্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের পত্র দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ