Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাসিনার অধীনে নির্বাচনে গেলে ৫ জানুয়ারিই যেতাম -গয়েশ্বর

| প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে গেলে ৫ জানুয়ারিই যেতাম বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা দিবে। এখন পর্যন্ত তা চূড়ান্ত করা হয়নি। যদি শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে যেতে হয় তাহলে ৫ বছর পরে কেন? ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনেই যাওয়া যেত। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। গতকাল শনিবার জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, সহ-সাংগঠনিক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, বীর উত্তম শহীদ জিয়া শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শুনুন; সংবিধানের আলোকে পরপর দু’বার নির্বাচনে না গেলে নিবন্ধন বাতিল হয়। কিন্তু এটা আপনারা জানেন যে, সংসদ নির্বাচনে যে প্রতীকগুলো ছিলো, সেই প্রতীকগুলো শুধু সংসদ নির্বাচনের জন্য। কিন্তু আজকে নৌকা আর ধানের শীষ জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য বরাদ্দ হচ্ছে। আমাদের প্রার্থী তো ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যখন এটা স্থানীয় নির্বাচনের জন্য প্রযোজ্য হয়; তখন জাতীয় সংসদের কোয়াসটা (চলে না মর্মে) টিকে না।
বেগম খালেদা জিয়ার জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে নাÑ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, উনি তো ভারতপ্রেমী। কিন্তু ভারতের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি আছে, তা তো তারা অনুসরণ করেন না। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন ভারতবর্ষের ৬০ বছরের ইতিহাসেও হয়নি। ওই নির্বাচনে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যায়নি। আগামী নির্বাচনও যদি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো হয়; সে নির্বাচনেও ভোটাররা যাবে না। এ ধরনের নির্বাচন করে তারা যদি টিকে থাকতে চায় টিকে থাকুক। তবে এটা বলতে পারি, খালেদা জিয়া ছাড়া কোনো নির্বাচন এদেশে হবে না। নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রেখে রূপরেখা দিবেÑ সংবাদ মাধ্যমের এমন খবর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গয়েশ্বর রায় বলেন, এখন আমরা এ নিয়ে বসি নাই। দলের মধ্যে নানা রঙ, নানা ধরনের ও নানা মতের লোক আছে। কে কি ভাবছে, সেটা আমরা জানি না। পত্রিকার ভাষায় যেটা আসে তা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। আমরা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেব।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১/১১ এর সময়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাসমূহ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর তা আদালত কর্তৃক খারিজের বিষয়টি তুলে ধরে গয়েশ্বর বলেন, ওই সময়ে একই মামলা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা হয়েছে, যেমনÑ নাইকো, গ্যাটকো মামলাগুলো এখনো চলমান আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর মামলাগুলো হাইকোর্ট থেকে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে অর্থাৎ তাকে এ থেকে দায়মুক্ত করেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, তা আদালত নয়, দিয়েছে সরকার। সরকার যখন মামলাটা দিয়েছে এর পিছনে তো একটা উদ্দেশ্য আছে। এটা তো উদ্দেশ্যবিহীন মামলা না তো। এক-এগারোর সরকারের সময়ে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যতটা মামলা হয়েছিলো, তার চেয়ে দ্বিগুণ মামলা ছিল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। তিনি প্যারোলে জামিন নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ওই অবস্থায় তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার পর শেখ হাসিনার মামলাগুলো হাইকোর্ট তাকে দায় মুক্তি বা নিষ্কৃতি দেয়। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলো সচল করে। এ কারণে বলছি, সরকারের একটা উদ্দেশ্য আছে। তাই আমরা বলছি, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার একটা উদ্দেশ্য আছে। ওবায়দুল কাদের যা বলছেন তা ধোপে টেকে না। এসব মামলা রাজনৈতিক কারণে। আমাদেরকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে এসব করা হচ্ছে। এসব মামলা আমরা আদালতের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো।
সরকারি দল ও বিরোধী দলের ক্ষেত্রে আইনের দু’রকম প্রয়োগ হচ্ছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আদালতে গেলে সেখানে ধর্ম-বর্ণ না-ই হোক; দলমত দেখা হয়। স্থানকাল পাত্র ভেদে আদালতের রায়টা ওভাবেই হয়। আমরা একদিন যদি হাজিরা কোনো কারণে না দিতে পারি তাহলে আমাদের জামিন বাতিল করা হয় এবং আমাদের কারাগারে যেতে হয়। কিন্তু আরেক জনের জেল হয়ে আছে, উনি মন্ত্রী হয়ে আছেনÑ এরকম দু’জন। তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অফেন্সে তাদের রায়ে সাজা হয়েছে। কিন্তু তারপরে তারা স্ব-পদে মন্ত্রী হিসাবে আছেন।
বাঘাইছড়িতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, আগের হাল যেদিকে যায়, পেছনের হাল তো সেদিকেই যায়। নতুন করে এই কমিশন থেকে আমরা কিছু প্রত্যাশা করি না। কারণ রকীবউদ্দিনের থেকে ভালো করবে না এই কমিশন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ