পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এহসান আব্দুল্লাহ : একটা সময় ছিল যখন দাদি, ফুফু, খালামণিদের মুখে রাজা-রাণীর রূপকথার গল্প শুনে ঘুমের কোলে ঢলে পড়তো শিশুরা। যুবরাজ আর মৎসকন্যারা বিচরণ করতো তাদের স্বপ্নের রাজ্যে। ডাইনি বুড়িদের প্রতি থাকতো এক অজানা ভীতি। না খেতে চাইলে বা ঘুম না আসলে শুনতে হতো রাক্ষস এর ভয়ঙ্কর মুখশ্রীর বর্ণনা। তবে সময়ের তালে তালে আজ তা কেবল ইতিহাসের পাতাতেই স্থান নিচ্ছে। অধুনা এই সময়ে শিশুদের আর টানেনা সেই রূপকথার রাজা-রাণীরা বা মৎসকন্যার প্রেমে সন্যাসী হওয়া যুবরাজের রাজপ্রাসাদ ত্যাগ। টিভি স্যাটেলাইটের এই যুগে তাদের কাছে আজ বেশি পরিচিত ড্রাগন, রোবোকপ বা ভারি ভারি মেশিনের জামা পরিহিত কোন লৌহমানব। এখন তাদের পছন্দ ম্যাজিক বুক, রেসলিং অথবা নানা কল্পকাহিনীতে ভরপুর বিভিন্ন গ্রহের এলিয়েনরা। রাজার সাম্রাজ্য ছেড়ে তারা আজ সাম্রাজ্য খুঁজে বেড়ায় মহাকাশের সেই দূরদুরান্তের বিভিন্ন গ্রহ নক্ষত্রে।
শনিবার অমর একুশে বইমেলায় ছিল শিশু প্রহর। মেলায় আসা শিশু-কিশোর ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় শিশুদের পছন্দের তালিকায় এখন রয়েছে বিভিন্ন বিজ্ঞান ভিত্তিক কল্পকাহিনী আর নানা ধরনের ম্যাজিকের বই। অভিভাবকরা এর কারণ হিসেবে দেখছেন, বিভিন্ন টিভিতে দেখা সায়েন্স ফিকশনের উপর তৈরি করা কার্টুন আর সহজলভ্য ইন্টারনেটের ব্যবহার। তারা আর আগের মতো দাদী-নানীদের কাছে ভূতের গল্প শোনে না বিধায় রূপকথার বিষয়টি তাদের কাছে আগ্রহ হারিয়েছে।
রাজধানীর ওয়াই ডবিøউ সি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী লিয়ানা তানজীন বলেন, বৈজ্ঞানিক বই তার কাছে সব সময় প্রিয়। তাই এবারও মেলায় এসে সায়েন্স ফিকশন কিনেছে সে। সে এবার ‘বিজ্ঞানের ২০০০ বছরের সেরা আবিস্কার’ ও ‘চিলড্রেন নলেজ ব্যাংক’ নামের দুটি বই। মোহাম্মদপুর রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র অমিয় আল সায়েম জানায়, সে ভূতের গল্প পড়ে। তবে সায়েন্স ফিকশনই তার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এস এ নাহিন এবারের বইমেলায় এসে কিনেছে ছবি আঁকার কলাকৌশল। তবে তারও পছন্দের শীর্ষে সায়েন্স ফিকশন। জারিন জোবায়রা নামের ক্লাস ওয়ানের এক ছাত্রী বলে, আমার পছন্দের বই হচ্ছে ম্যাজিক বই। তারপর সায়েন্স ফিকশন এরপর ভূতের বই।
শিশুদের হালের সায়েন্স ফিকশন প্রীতির কারণ হিসেবে মেলায় আসা এক অভিভাবক বলেন, আসলে যুগটাই পাল্টে গেছে। আমাদের সময় আমরা দাদি, নানিদের মুখে বিভিন্ন রকম ভূতের গল্প শুনতাম, গ্রামের মেলা থেকে ছোট ছোট ভুতের গল্পের বই অথবা বিভিন্ন রূপকথার বই কিনে পড়তাম। কিন্তু এখনকার সময়ে রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট এর ব্যবহার শিশুদের সায়েন্স ফিকশনে আকৃষ্ট করছে।
মল্লিক আবিদ আলী নামের জনতা ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা বলেন, ভূতের গল্প যে পড়ছে না সে রকম বলবো না, তবে সায়েন্স ফিকশনে আগ্রহ বাড়ছে। বিভিন্ন মিডিয়া ও ইন্টারনেটের প্রভাবে তারা এর দিকেই বেশি ঝুকছে।
গতকাল সকাল ১০:৩০টায় অমর একুশে উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশুকিশোর সাধারণ জ্ঞান ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান, শিশুসাহিত্যিক সুজন বড়–য়া এবং বাংলা একাডেমির পরিচালক শাহিদা খাতুন। উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন আকিবা আফরোজ রাকা, দ্বিতীয় হয়েছেন যুগ্মভাবে সুমাইয়া সাবিকুন্নাহার ও তারানা তাবাসসুম মিম এবং তৃতীয় হয়েছেন নামিরা রহমান অন্তরা। সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন মারজান শাওয়াল রিজওয়ান, দ্বিতীয় হয়েছেন যুগ্মভাবে রাইসা চৌধুরী ও নাবিলা হক বিস্মি এবং তৃতীয় হয়েছেন সায়েদা করিম মেশা।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল লাকী ইনামের পরিচালনায় এবং নাগরিক নাট্যাঙ্গন-এর পরিবেশনায় নাটক ক্রীতদাসের হাসি।
গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ১৫৬টি এবং ৬১টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।