Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব বি. চৌধুরীর

| প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজনৈতিক মামলা দুই বছরের জন্য স্থগিত চান
স্টাফ রিপোর্টার : একাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচনকালীন ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। গতকাল শুক্রবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিকল্পধারা‘র সভাপতি সাবেক প্রেসিডেন্ট এই প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে একমাত্র জাতীয় সরকার ছাড়া অন্য কোনো নিরপেক্ষ সরকার হতে পারে না। ওই সহায়ক-টহায়ক-এগুলো শব্দ নাই কোথাও, যদি জাতীয় সরকার গঠন করা যায়, সমস্ত ভালো ভালো লোক ও সব দল নিয়ে একটা সরকার গঠন করা যায়, তাহলেই একটা ভালো নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। একসঙ্গে সকল বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনতে সব ‘রাজনৈতিক মামলা’ দুই বছরের জন্য স্থগিত করার প্রস্তাবও দেন বি. চৌধুরী।
তিনি বলেন, নির্বাচনে আগে একটা লেভেল প্ল্যান তো করতে হবে। বিএনপির সাঙ্গ-পাঙ্গ, বাচ্চা-কাচ্চাসহ কত হাজার মামলা যে আছে গড নোউজ। এতো হাজার হাজার মামলা থাকলে নির্বাচন করবে কীভাবে? এটা হয় না।
আমি বলব, লেভেল প্ল্যান ফিল্ড করতে হলে সমস্ত মামলা আগামী দুই বছর বন্ধ, স্থগিত করে দেন। দুই বছরের পর আবার বিচার করুন কোনো অসুবিধা নাই। রাজনৈতিক সব মামলা অবিলম্বে স্থগিত করার ঘোষণা দিক। এজন্য সরকার সুপ্রিম কোর্ট-হাইকোর্ট, অন্যান্য যারা যারা যুক্ত আছেন, তারা সবাই এরজন্য ব্যবস্থা করেন তাহলে আমরা মনে করি, মোর অর লেজ লেভেল প্ল্যান ফিল্ড হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয় স্মরণ মঞ্চ এর উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানির ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের যোগ দেয়ার যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন- তা তুলে ধরে বি. চৌধুরী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সময়ে যে অফার দিয়েছিলেন, যেটা খালেদা জিয়া গ্রহণ করেন নাই। এটা বিগ পলিটিক্যাল মিসটেক, বিরাট রাজনৈতিক ভুল। তখন যদি উনি (খালেদা জিয়া) গ্রহণ করতেন- পাঁচ-পাঁচ, সরকার ও বিরোধী এবং বিরোধী দলকে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দেয়া হবে-এই দুইটা থাকলে আর লাগে কিছু।
তিনি বলেন, আমরা ভোটে বিশ্বাস করি, অন্যকোনো মাধ্যমে বিশ্বাস করি না। ভোট আসবে, জনগণকে আমাদের পক্ষে আনতে হবে। সেই পক্ষ আমরা ভোটের মাধ্যমে জিততে চাই। মনে রাখতে হবে জনগন যখন একত্রিত হয়ে যায়, সংঘবদ্ধ হয়ে যায়, তখন তাদের ঠেকিয়ে রাখতে পারে না কোনো ধরণের বেআইনি প্রশাসন।
আমি নির্বাচন কমিশনের নামই তুলছি না। কেনো জানেন? যতগুলো নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে, ততগুলোতে নির্বাচন কমিশনে কে ছিলো- তাদের নাম কারো মনে নাই ভালো করে। ওই সময়ে সরকারটা নিরপেক্ষ ছিলো-এটাই মূল কথা। সেজন্য একটা নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন আগামী নির্বাচনে।
বঙ্গবীর এমএজি ওসমানীকে বড় মাপের দেশপ্রেমিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অভিহিত করে তার মৃত্যুবার্ষিকীতে সরকার ও বিরোধী দল স্মরণ না করায় সমালোচনাও করেন বি. চৌধুরী।
অনেক বড়মাপের মানুষ ছিলেন উনি। হৃদয় বড়, মানুষ বড়, অনেক বড় মাপের দেশপ্রেমিক ছিলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সবচাইতে নেতৃত্বদানকারী মানুষ। যুদ্ধের পরে একটা ব্যাপারে সবার শ্রদ্ধা অর্জন করতে পেরেছিলেন যখন তিনি বাকশালের বিরোধিতা করেছিলেন। দুসাহসের ব্যাপার ছিলো তখন বাকশালের বিরোধিতা করা। উনি বাকশালে যান নাই। এতো বিশাল সাহসী মানুষ আমি আর কখনো দেখি নাই। উনি গণতন্ত্রের জন্য সাহস করে কথা বলতেন। আমি তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
সংগঠনের আহŸায়ক আহম মনিরুজ্জামান দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জাকির হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, আব্দুল আউয়াল ঠাকুর, মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ