Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ

অমর একুশে গ্রন্থমেলা

| প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এহসান আব্দুল্লাহ : অমর একুশে বইমেলার স্টল বিন্যাস আর নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রকাশক আর দর্শনার্থীরা। মেলায় স্টল বরাদ্দ পাওয়া নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রকাশনীর প্রকাশকদের নীরব অভিমান। মেলার ডায়গ্রাম নিয়েও আছে প্রকাশক ও দর্শকদের নানা অভিযোগ। আর নির্ধারিত সময়ের পরেও বিশেষ কিছু প্রতিষ্ঠানকে স্টল নির্মাণ করতে দেখা গেছে মেলার প্রায় শেষ সময়ে এসে। বাংলা একাডেমির ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র নীতিমালা অনুযায়ী সকল ধরনের প্রতিষ্ঠানকে ১ ফেব্রæয়ারির মধ্যে স্টল নির্মাণ শেষ করতে বলা হলেও মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায় গতকাল থেকে স্টল নির্মাণ শুরু করে আজও স্টল নির্মাণের কাজ করছে ‘প্রাণ ফ্রুটু’ ও ‘বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি’। প্রাণ ফ্রুটুর স্টলে গিয়ে দেখা মেলেনি স্টল সংশ্লিষ্ট কারোই। আর মেলার স্টল বিন্যাস নিয়ে দর্শকদের মাঝে কাজ করছে নানা ক্ষোভ। স্টলের অবস্থান ও মেলার ডায়াগ্রাম তাদের বিভিন্ন স্টল খুঁজে পেতে নানা সমস্যা তৈরি করছে বলে জানান তারা। তাছাড়া মেলার অর্ধেক সময় পার হয়ে গেলেও এখনো অনেক স্টলে লাগানো হয়নি স্টল নম্বর, ফলে তথ্যকেন্দ্র থেকে তারা নির্ধারিত প্রকাশনীর স্টল নম্বর খুঁজে পেলেও তা মেলায় খুঁজে পেতে পোহাতে হচ্ছে নানা ঝামেলা।
শোভা প্রকাশনের প্রকাশক মিজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন ভূঁইফোড় প্রকাশকরা বিশেষ ক্ষমতার চালে চাইলেই স্টল বরাদ্দ পাচ্ছেন। বইমেলা আসলে তাদের আনাগোনা বাড়ে অথচ সারা বছর তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। এমনকি ফুটপাতে যারা বই বিক্রি করতেন তারাও এখানে স্টল নিয়ে বসছেন। ইচ্ছেমতো বই বিক্রি করছেন। আড়ালে রাখা বই সস্তা দামে বিক্রি করছেন। ফলে ক্রেতারা বেশি দাম দিয়ে আমাদের স্টলের বই কিনছেন না।
তিনি আরো বলেন, বাংলা একাডেমি যাকে তাকে স্টল বরাদ্দ দিলে তো এটা আর বইমেলা থাকে না। এবারও যে পরিবেশ তা কি আর বইমেলা বলা যায়? স্টল বিন্যাস এমনভাবে করা হয়েছে যে দর্শনার্থীরা এক গলিতে ঢুকলে অন্য গলি খুঁজে পাওয়া যাবে না। এভাবে মেলার স্ট্রাকচার করা হলে, কেউ অনেক বিক্রি করবে, আর কেউ বিক্রি চোখেও দেখবে না। বৃত্তাকারে মেলার স্ট্রাকচার করা হলে সবারই বিক্রির সুযোগ থাকে।
গদ্যপদ্য প্রকাশনীর প্রকাশক প্রীতম আদনান বলেন, মেলার স্টল বরাদ্দ নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে এতে অনেক কিছুই কাজ করে। পরিচিত প্রকাশনীগুলো সবসময়ই মেলার মাঝখানের দিকটাতে স্টল বরাদ্দ পায়। ফলে তাদের বেচাকেনা ভালো হয়। আর মেলার ডায়াগ্রামটা বাংলা একাডেমি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একেকবার একেকরকমভাবে পরীক্ষা করে। ফলে মেলার পিছনে স্টল বরাদ্দ পাওয়া প্রকাশনীগুলো তেমন ব্যবসা করতে পারে না। বৃত্তাকারে মেলার স্টলগুলোর বিন্যাস করা হলে সবাই সমান সুযোগ পেতো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমিন সৈকত ও সামিয়া রহমান বলেন, মেলার স্টলগুলো হিজিবিজি স্টাইলে। পরিচিত প্রকাশনীগুলো চোখের সামনে থাকাতে সহজেই খুঁজে পাওয়া যায় কিন্তু নতুন লেখকদের বই খুঁজতে গেলে অন্যান্য প্রকাশনীগুলোর স্টল এমন জায়গায় থাকে যে সহজে খুঁজেই পাওয়া যায় না। ফলে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। সময়ও অপচয় হয় প্রচুর। মেলাটা গোল স্ট্রাকচারে হলে সহজেই সব স্টল খুজে পাওয়া যেত এবং আমাদের ভোগান্তিও কম হতো।
মেলার অর্ধেক সময় পরে এসে স্টল নির্মাণ নিয়ে জানতে চাইলে মেলার সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, আসলে এগুলোতো (প্রাণ ফ্রুটু ও বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি) বিশেষ স্টল তাই এদের সুযোগ দেয়া হয়। আমরা প্রতিবারই স্পন্সর কোম্পানীগুলোকে স্টল নির্মাণের সুযোগ দিয়ে থাকি। তবে মেলার এই সময়ে এসে স্টল নির্মাণের কোন নিয়ম আছে কিনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ২৪১টি এবং ৬৪টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ