পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চায় কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক না হলে নির্বাচন বিতর্কিত হবেই জানিয়ে নতুন সিইসি বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সবার দৃষ্টি বর্তমান ইসির দিকে। এ জন্যে সতর্কতা, নিষ্ঠা ও জিরো টলারেন্স নীতিতেই চলবেন তারা।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রথম কার্যদিবসে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে ইসি সচিবালয়ের সচিব ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত ইসি সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার গতকাল সকালে জাতীয় স্মৃতি সৌধে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর বেলা ১২টায় আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন নতুন ইসি। এ সময় ইসি সচিবালয় সার্বিক অগ্রগতি, কাজের পরিধি-কাঠামো ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে একটি ধারণাপত্রও তুলে ধরেন ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
কে এম নূরুল হুদা বলেন, দেশের সবার আগ্রহ আমাদের নিয়ে; অতীতে কখনও এমনটি হয়নি। সাধারণ মানুষ, দল, আন্তর্জাতিক সংস্থা সবার সবাই তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। আশা করি, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারবো। ইসি সচিবালয়ের দক্ষ জনবল নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়ার ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের উদ্দীপ্ত করতে এবং মনোবল বাড়াতে নানা নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
কর্মকর্তাদের সাহসিকতা ও দৃঢ়তার উদাহরণ টেনে ২০১০ সালের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তা জেসমিন টুলীর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আপনাদের অঙ্গীকার আমাদের আশ্বস্ত করেছে। আমরা আগেই জেসমিন টুলী থেকে শুরু করতে চাই। জেসমিন টুলী যখন চট্টগ্রামে নির্বাচনে একেবারে নিরপেক্ষতার সঙ্গে, দৃঢতার সঙ্গে প্রত্যয়ের সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করে সফল একটা নির্বাচন উপহার দিলেন। তখন দেশবাসী তার দিকে তাকিয়ে ছিল। সমন্ত মানুষ বলেছিল, কিভাবে সম্ভব? তাকে কিন্তু কেউ প্রভাবিত করতে পারেনি, বা তার সিদ্ধান্ত থেকে তাকে কেউ বিব্রত বা বিচলিত করতে পারে নি। ইসির দক্ষতা সচিবালয়, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সক্ষমতার বিষয়ে আর কোনো সন্দেহ থাকার কোনো কারণ নেই।
ইসি সচিবালয়ের মাঠ কর্মকর্তাদের দক্ষতা থাকলেও ভালো নির্বাচন না হওয়ার প্রসঙ্গ টানেন সাবেক এ আমলা। তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ কতগুলো অত্যন্ত সফল নির্বাচন উপহার দিয়েছে, আর যে নির্বাচনগুলো বিতর্কিত ছিলÑ তা কেন বিতর্কিত ছিল, তা বিশ্লেষণে আমি যাবো না। একটা কথাই বলতে পারি, আপনারা অনেকেই বলেছেন যে ইনক্লুসিভ নির্বাচন ছিল না বলেই বিতর্কিত ছিল।
নূরুল হুদা বলেন, অংশীজনরা বলেছে- শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের উপরে দায়িত্ব চাপিয়ে দিলে ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়। স্টেকহোল্ডার যারা আছে, তারা যদি সহযোগিতা না করে এবং অংশগ্রহণ না করে তা হলে সম্ভব নয়। গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজ ইসির পাশে থেকে ইতিবাচক যে ভূমিকা রাখবে তাও তুলে ধরেন তিনি। সেক্ষেত্রে ভালো নির্বাচনে সবার সহযোগিতার বিষয়টি উল্লেখ করেন সিইসি।
নিজের উপলব্ধিও তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচন যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক না হয়; যদি সব দলের অংশগ্রহণ না থাকে সেক্ষেত্রে নির্বাচন বিতর্কিত হবেই। সুতরাং আমরা আশা করবো সব দল তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ কররে। সব দলের অংশগ্রহণ থাকলে ভারসাম্যমূলক পরিস্থিতিতে যোগ্যপ্রার্থী নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও সহজে মোকাবেলা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনে কর্মকর্তাদের প্রতি অভয় দিয়ে নবনিযুক্ত সিইসি বলেন, আমার একটাই কথা- সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরা কাজ করতে বদ্ধপরিকর। আমরা যারা সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যোগদান করেছি, শপথ নিয়েছে, আমাদের একটাই কথা- দল-মত নির্বিশেষে সব কিছুর ঊর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবো। তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা ভোটে অনিয়ম ঠেকাতে ব্যর্থ হলে ইসি নিজের ক্ষতমা দিয়ে তা মোকাবেলা করবে। কোনোভাবে অন্যায়কে প্রশ্রয় না দেয়ার নির্দেশনাও দেন তিনি। একজন নির্বাচন কমিশনারের কথা টেনে তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান জিরো টরারেন্স। কাউকে কোনো পর্যায়েই রেহাই দেয়া হবে না। আমরা প্রাইভেটলি যে আলোচনা করেছি, তাতেও আমরা বলেছি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতার নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করবো।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার নিজের বক্তব্যে ভারতের প্রসঙ্গ টেনে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের কাজের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে আমলা হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ পেয়েও গর্ববোধ করেন। তিনি বলেন, ভারতে সুকুমার সেন ও টিএন সেসন দুই জনই আমলা ছিলেন। আজকে মিডিয়াতে দেখা যায়, এই নির্বাচন কমিশন হয়েছে শুধু আমলাদের দিয়ে। তারা ভারতের মত এতো বড় বৃহত্তর একটা গণতান্ত্রিক দেশে কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছেন। সেজন্য আমি যখন ভাবি- আমিও একজন আমলা ছিলাম, তখন তাদের কথা ভেবে অত্যন্ত গৌরব বোধ করি। তিনি বলেন, সমগ্র পৃথিবীর দৃষ্টি এখন আমাদের দিকে। কেবল বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ নয়, পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে, বিশেষ করে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। জাতির প্রত্যাশা পূরণে তাদের কাজ করার অঙ্গীকার করেন মাহবুব তালুকদার।
সাবেক এ আমলা বলেন, সবার সম্মিলিত প্রয়াসে আগামী দিনগুলোতে উজ্জ্বল করে তুলব। আমাদের কাছে দেশবাসীর যে প্রত্যাশা তা আমরা পূরণ করবো। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, বিএনপি জোটের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চায় নতুন ইসি। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে আগামী জাতীয় নির্বাচন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।