পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ই-ভোটিং ব্যবস্থার কথা বলছেন তা নিঃসন্দেহে দুরভিসন্ধিমূলক বলে জানিয়েছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ইভিএমের ব্যবহার হবে জনগণের ভোটকে স্বীয় উদ্দেশ্য সাধনে জালিয়াতি করার প্রচেষ্টা মাত্র। এটি প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি ভেল্কিবাজিরই বর্ধিত প্রকাশ। কারণ ইভিএম এ সরকারের জন্য ভোট ম্যানিপুলেট করা খুবই সহজ হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ১/১১’র সময় সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদা ইভিএম চালুর প্রস্তাব করেছিলেন। তখন বুয়েটসহ কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ এবং প্রায় সব রাজনৈতিক দল সেটির বিরোধিতা করেছিল। সিইসি কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদও এই পদ্ধতিটি চালুর জোর প্রচেষ্টা চালায়। পরীক্ষামূলকভাবে ২০১০ সালে প্রথম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক এই পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হয়। ওই সময়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে আপত্তি তোলায় ইভিএম নিয়ে কাজী রকিবউদ্দিন ইভিএম চালু থেকে সরে আসে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও যারা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের নিয়ম চালু করেছিল, কিন্তু এই ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকায় তারা সেটি বন্ধ করে দেয়। কারণ এই পদ্ধতি দূর থেকে হ্যাক করা সম্ভব বলেই স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে এই পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে সেসব দেশে। ভারত, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্টসহ অনেক দেশ ই-ভোটিং পদ্ধতি চালু করলেও এটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশে এখনো অনেক মানুষ নিরক্ষর। এতো টেকনিক্যাল বিষয় উপলব্ধি করা বা বোঝা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য। এই পদ্ধতিতে ই-ভোটিংয়ের সার্ভেয়ার সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। সুতরাং সরকারের জন্য ভোট ম্যানিপুলেট করা খুবই সহজ হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দুই শতাব্দিরও বেশি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভোটাররাও ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করে থাকে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিজেদের অভিপ্রায় পূরণ করতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন, নিজেদের ঘরের ছেলেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বানিয়েছেন, সেই সরকার জনগণের ইচ্ছার সঠিক প্রতিফলন ঘটাবেন এটি কেউ বিশ্বাস করে না। বর্তমান বিনা ভোটের সরকার যদি গণতন্ত্র, নির্বাচন এবং মানুষের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করতো তাহলে আজ চারিদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সরে যাওয়ার যে তুমুল দাবি উঠেছে সেটিকে আমলে নিয়ে সকল দলের সাথে পরামর্শ করে একজন যথার্থ নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে সাংবিধানিক এই পদটিতে বসানোর জন্য প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দিতেন। কিন্তু সেটি না করে প্রধানমন্ত্রী এখন জনগণের দৃষ্টিকে সিইসি’র দিক থেকে অন্যত্র সরানোর জন্য ই-ভোটিং ব্যবস্থার আরেকটি ম্যাজিক জনগণের সামনে প্রদর্শন করছেন। এটি প্রধানমন্ত্রীর ভোটারবিহীন নির্বাচন করার আরেকটি ডিজিটাল প্রতারণা কী না তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক সংশয় দেখা দিয়েছে।
রিজভী বলেন, যে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাক্ষুধা এতো তীব্র যে, নিজেকে চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় রাখার জন্য তিনি গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাটাই আওয়ামী বস্তার মধ্যে পুরে বন্ধ করে রেখে লাশ আর রক্তস্নাত নির্বাচনী ব্যবস্থা কায়েম করেছেন, সেই নির্বাচনগুলো অন্তহীন শোকমিছিলে পরিণত হয়েছে, সুতরাং তার পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ই-ভোটিং চালু করার ঘোষণা জনগণকে আরেকটি তামাশার বায়োস্কোপ দেখানো ছাড়া অন্য কিছু নয়। যদিও জনগণকে ধোঁকা দেয়ার বিদ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালভাবেই জানেন। কারণ আওয়ামী লীগ হচ্ছে নিজেদের টিকে থাকতে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র ও কারসাজির উপরই ভর করে। আওয়ামী লীগ জনগণের ওপর ভর করে না, ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদেরকে আত্মসম্মানহীন নিপীড়কে পরিণত করে।
রিজভী আরো বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পক্ষ থেকে আমি দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই-প্রধানমন্ত্রীর উচ্চাভিলাষের কাছে সংগ্রামী জনগণ নিজেদেরকে কখনোই সঁপে দেবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জনগণ ক্ষমতাসীন মহলের যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আব্দুল আউয়াল খান, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।