Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভাষা শহীদ ভাষা সৈনিক লও সালাম

| প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাঙালির ইতিহাসের আলোকিত অধ্যায় ভাষা আন্দোলন। ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত চলা আন্দোলনে অসংখ্য নারী-পুরুষ যোগ দিয়েছিলেন। মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষায় রাজপথে প্রাণ দিয়েছিলেন বরকত, রফিক, শফিক, জব্বাররা। ১৯৪৯ সালের ৯ মার্চ। পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাকে সরকারি কর্মকাÐ ও শিক্ষার একমাত্র ভাষা এবং সেই সাথে উর্দুর পাশাপাশি
রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার অব্যাহত আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে খাজা নাজিমুদ্দিনের উদ্যোগে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে আরবি হরফে প্রচলন করার ব্যাপারে একটি প্রস্তাব দেয়। এ লক্ষ্যে ৯ মার্চ ১৯৪৯ সালে মৌলানা আকরম খাকে চেয়ারম্যান করে ১৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। তবে বাঙালি জনতার দাবি ছিল একটিই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার।
সেই সময় থেকেই ভাষা আন্দোলনকারীদের হওপর শুরু হয় নির্যাতন। পাকিস্তান শাসনামলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে যারা কথা বলতেন, তাদের তখন শাসকগোষ্ঠীর হাতে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। ভাষার প্রশ্নে বাঙালির কোনো পঙ্ক্তি তারা পছন্দ করতেন না। তেমনি একুশ নিয়ে লেখা প্রথম কবিতাটিও মেনে নিতে পারেননি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। চট্টগ্রাম লালদীঘি ময়দানে ২১ হত্যাকাÐের প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় কবিতাটি আবৃত্তি করেন হারুনুর রশীদ। এর পর পরই পাক সরকার কবিতাটি নিষিদ্ধ করে দেয়। কবিতাটির লেখক কবি মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে। তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহŸায়ক। কবিতার নাম ছিল ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি। তখন ৯ মাস তিনি পালিয়ে, আত্মগোপন করেছিলেন। কবিতার কপিটি লুকিয়ে রেখেছিলেন বাড়িতে। এই কারণেই ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তার বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় পাকবাহিনী। এভাবে শুধু একজন-দু’জন নয়। অসংখ্য ভাষা সংগ্রামীকে সেদিন পাকিস্তানিদের নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। তার পরেও তারা বাংলা ভাষার দাবিতে অটল-অবিচল ছিলেন। কবিতায় গানেÑ গল্পে প্রতিবাদ ওঠে এসেছে। ঠিক এই কবিতাটিতে যেমন প্রতিবাদ রয়েছেÑ এ রকম হাজারো কবিতা গানে-গল্পে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীকে ধিক্কার দেয়া হয়েছে।
যার ফলেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়। সঙ্গত কারণেই স্বপ্ন ছিল, সর্বস্তরে প্রচলিত হবে বাংলা। কিন্তু স্বাধীনতার এতো বছর পরও সেটি সম্ভব হয়নি। সরকারি বেসরকারি অফিস-আদালত, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান সর্বত্রই মতৃভাষা উপেক্ষিত। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াতে মরিয়া বাবা-মা। অথচ বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে নিজের শিশুকে ধারণা দেয়ার কোনো তাগিদ তারা বোধ করেন না। ফলে বাচ্চারা ইংরেজি শিখছে ঠিকই; কিন্তু ভুলে যাচ্ছে নিজেকে। শেকড়হীনভাবে বেড়ে উঠছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও এ সমস্যা প্রকট। আর এই ভাষা আন্দোলন উপলক্ষে বাংলা একাডেমিতে চলছে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ