Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার আজ ৭৫তম জন্মদিন

| প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী মরহুম ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার ৭৫তম জন্মদিন আজ বৃহস্পতিবার। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী এই বিজ্ঞানী ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জের লালদিঘীর ফতেহপুর গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৯ সালের ৯ মে ইন্তেকাল করেন। দিবসটি পালন উপলক্ষে রংপুর মহানগরী এবং তার জন্মস্থান পীরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘী ফতেহপুর গ্রামে ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, মহাজোটের শরীক দলসমূহ এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলো স্মৃতিচারণ, ফাতেহা পাঠ, কবর জিয়ারত, মিলাদ মাহফিল ও গরীবদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মরহুম বিজ্ঞানীর ভাতিজা তাজিমুল ইসলাম শামীম জানান, আগামীকাল সকালে ওয়াজেদ মিয়ার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় জামাতা ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি তার মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা দিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।
পিতা মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া ও মাতা মরহুমা ময়জুনেসার চার পুত্র ও তিন কন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন সর্ব কনিষ্ঠ। গ্রামের প্রাইমারি বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণী ও পীরগঞ্জ থানার হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৯৫২ সালে রংপুর শহরের সরকারি জেলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে এই স্কুল থেকে ডিস্টিংশনসহ ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন।
১৯৫৮ সালে তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-’৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তারবরণ করেন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৬৩-’৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে স্বদেশ ফিরলে তাকে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকার আণবিক শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে পদস্থ করা হয়। তিনি ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাÐের পর দীর্ঘ ৭ বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পদার্থ বিজ্ঞান, ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্রদের জন্য দু’টি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
তার লেখা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ৩২০ পৃষ্ঠার ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচিত্র’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৫ সালের ফেব্রæয়ারিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয়।
মৃত্যুর পর তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর গ্রামে তার বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
ওয়াজেদ মিয়ার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ বিকাল সাড়ে ৪ টায় বাংলামটরের বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘ইতিহাস, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিকৃতিরোধে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সাধনা সংসদ ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ