পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : মুসলিম অধ্যুষিত সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ দিয়েছে দেশটির একটি ফেডারেল আদালত। গত সোমবার ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের একজন ফেডারেল বিচারক এ আদেশ দেন। আদেশে ট্রাম্প প্রশাসনের এ নিষেধাজ্ঞাকে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেছেন ডিস্ট্রিক্ট জজ লিওনি ব্রিনকেমা।
ইতোপূর্বে দুই দফায় ট্রাম্পের মুসলিম নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল দু’টি ফেডারেল আদালত। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ব্রæকলিন, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি এবং মেরিল্যান্ডের আদালতে। তবে তৃতীয় ফেডারেল আদালত হিসেবে এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ এলো ভার্জিনিয়ায়।
আইনি বিবেচনায় ভার্জিনিয়ার আদালতের এ রায় খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বিচারক লিওনি ব্রিনকেমা বলেছেন, এটা ধর্মের ভিত্তিতে পক্ষপাতদুষ্ট একটি অসাংবিধানিক পদক্ষেপ। মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে অন্য কোনো ধর্মের প্রতি আনুক‚ল্য প্রদর্শনের যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, ট্রাম্পের এ পদক্ষেপ তার লঙ্ঘন।
ভার্জিনিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল মার্ক হ্যারিং বলেন, সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে যে অধিকারের কথা বলা হয়েছে, বিচারক লিওনি ব্রিনকেমা তার পক্ষেই রায় দিয়েছেন।
২২ পৃষ্ঠার আদেশে বিচারক লিওনি ব্রিনকেমা লিখেছেন, ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এ পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ব্যাপারে নির্বাচনী প্রচারণাকালে প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এখন তার এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে অসাংবিধানিকভাবে মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন মুসলিম নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিবাসন সংক্রান্ত সিনিয়র উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার। গত রোববার সিবিএস টেলিভিশনের ‘ফেস দ্য ন্যাশন’ অনুষ্ঠানে তিনি প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতাকে প্রশ্নহীন করতে বিচার বিভাগের ক্ষমতা হরণের ইঙ্গিত দেন।
২৭ জানুয়ারি ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে পরবর্তী চারমাসের জন্য সব ধরনের শরণার্থী কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে একটি ডিক্রি জারি করেন। পরে সিয়াটলের এক বিচারক ট্রাম্পের ওই নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের আদেশ দেন। ট্রাম্প প্রশাসন ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে সান-ফ্রান্সিসকোভিত্তিক তিন বিচারকের প্যানেল তা খারিজ করে দেন। আপিল আদালতের হারের পর ‘আদালতে দেখা হবে’ বলে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প। পরে তিনি নতুন নির্বাহী আদেশ জারির কথা জানান।
নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপে হোয়াইট হাউজের পরিকল্পনার প্রতি ইঙ্গিত করে স্টিফেন মিলার বলেন, মূলত শরণার্থী ও সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র সফর ও আশ্রয় নিবৃত্ত করার চেষ্টা চালানো হবে ওই আদেশের মধ্য দিয়ে।
সিবিএস টেলিভিশনের ‘ফেস দ্য ন্যাশন’ অনুষ্ঠানে স্টিফেন মিলার মার্কিন বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, শিগগিরই পুরো দুনিয়া দেখবে যে, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে না। ট্রাম্পের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের এমন একটা বিচার বিভাগ রয়েছে, যাদের হাতে অনেক বেশি ক্ষমতা। অনেক ক্ষেত্রে এটা সরকারের প্রধান শাখায় পরিণত হচ্ছে। আমাদের বিরোধীরা, মিডিয়া এবং পুরো দুনিয়া শিগগিরই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ দেখতে পাবে। আমাদের দেশকে রক্ষায় প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খুবই বাস্তবসম্মত। এটা প্রশ্নবিদ্ধ হবে না’।
শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে চড়ে ফ্লোরিডা যাওয়ার পথে এ সংক্রান্ত নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির ব্যাপারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। মার্কিন বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সন্দেহাতীতভাবে এ লড়াইয়ে জিতব। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলোÑ এতে কিছু বেশি সময় লাগছে। তবে একেবারে নতুন করে আরেকটা আদেশ জারি করাসহ আরো অনেক পথই আমাদের সামনে খোলা আছে’।
নতুন নিষেধাজ্ঞা কেমন হবে, তা পরিষ্কারভাবে না বললেও ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগের নিষেধাজ্ঞা ‘খুব সামান্যই পরিবর্তিত হবে’। অবশ্য একই সঙ্গে আগের নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে যাবে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফ রেইন্স প্রিয়েবাস। শুক্রবার তিনি সাংবাদিকদের কাছে ট্রাম্প প্রশাসনের এমন অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘মার্কিন জনগণকে জঙ্গিবাদ থেকে রক্ষার জন্য দ্রæত পদক্ষেপ নিতেই নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছে। স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়াসহ আইনি প্রক্রিয়ার সব দ্বারই খোলা রয়েছে’।
এদিকে ট্রাম্পের অভিবাসন সংক্রান্ত সিনিয়র উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার বলেন, সন্ত্রাসবাদের হাত থেকে আমাদের দেশকে রক্ষা করতে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপই নেয়া হবে। সূত্র : ফক্স নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।