পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাসিনা মহিউদ্দিন বনাম তপতি সেনগুপ্তা গ্রæপের গৃহবিবাদ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : দলীয় অন্তর্কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এবার চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনেও। দীর্ঘ ১৮ বছর পর গতকাল (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ঘটে এই বিপত্তি। নগরীর পাঁচলাইশে একটি কমিউনিটি সেন্টারে ১৯৯৮ সালের পর আয়োজিত ‘দ্বি-বার্ষিক’ সম্মেলনের সূচনা না হতেই সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সম্মেলনস্থলে কাউন্সিল-কার্ড পাওয়া না পাওয়ার দ্ব›দ্ব, প্রবেশ করা নিয়ে উত্তেজনা, বাগ-বিতÐা, নগর মহিলা আওয়ামী লীগের দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যকার তুমুল হৈচৈ, দফায় দফায় নেতা-কর্মী, সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
নগর মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বেগম হাসিনা মহিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক তপতি সেনগুপ্তার অনুসারীদের মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে। এ সময় সম্মেলনে প্রবেশ করতে না পেরে তপতি সেনগুপ্তার অনুসারীরা সম্মেলনমুখী গাড়িবহরেও বাধা দেন। শেষ পর্যন্ত সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করতে পারেননি শ’ খানেক মহিলা লীগ নেতা-কর্মী।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অনেক আগে থেকেই সম্মেলনের নিয়ন্ত্রণ বা ‘চাবিকাঠি’ রয়েছে নগর মহিলা লীগের সভাপতি, সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পতœী বেগম হাসিনা মহিউদ্দিনের হাতেই। কিন্তু আরেকটি পক্ষের হয়ে নেতৃত্বে¡ থাকা তপতি সেনগুপ্তা তার অনুসারীদের নিয়ে সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করতে সর্বমুখী চেষ্টা চালান। তবে তাদের কাউন্সিল কার্ড না থাকায় পুলিশ তখন ঢুকতে প্রবলভাবে বাধা দেয়। তপতী সেনগুপ্তা বর্তমান মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সম্মেলনে যেতে না পেরে তপতির পক্ষের নেতা-কর্মীরা পুলিশের সাথে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তপতি সেনগুপ্তার অভিযোগ, তার পক্ষের নেতাকর্মীদের কাউকেই সম্মেলনে প্রবেশের জন্য কাউন্সিল-কার্ড দেয়া হয়নি। তার পক্ষের যারা নগর মহিলা লীগের কমিটিতে আছেন তারা গুটিকয়েক জনই কেবল কার্ড পেয়েছেন। যা অনভিপ্রেত।
এদিকে উত্তেজনার এক পর্যায়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করেন। তার পক্ষের কর্মীরা তখন শ্লোগান দেন। এরপর নমিতা আইচ ও তপতি সেনগুপ্তা শ’খানেক নেতা-কর্মী নিয়ে সম্মেলনস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ আবারও বাধা দেয়। নেতাকর্মীদের সঙ্গে এসময় পুলিশের হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। পুলিশ এক পর্যায়ে তাদের সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়। সকাল সোয়া ১১টায় আসেন হাসিনা মহিউদ্দিন। তখন মহিলা লীগে তার পক্ষে বিপক্ষে শ্লোগান ওঠে। তারপরই আসেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা এবং উদ্বোধক মহিলা লীগের সহ-সভাপতি বেগম সাফিয়া খাতুন। তাদের বহনকারী গাড়ি ঘিরে ধরে তপতি পক্ষের নেতাকর্মীরা ইন্দিরাকে নামিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। এসময় আবারও পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে মহিলা পুলিশ কয়েকজন মহিলা লীগ নেতাকর্মীকে টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দেয়।
১৯৯৮ সালে সর্বশেষ চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মরহুম আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান কায়সারের স্ত্রী নীলুফার কায়সারকে সভাপতি এবং তপতি সেনগুপ্তাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। নীলুফার কায়সার গুরুতর অসুস্থ হলে নগর মহিলা আওয়ামী লীগের হাল ধরেন হাসিনা মহিউদ্দিন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সিনিয়র সহ-সভাপতি নমিতা আইচ এবং সাধারণ সম্পাদক তপতি সেনগুপ্তার নেতৃত্বে নগর মহিলা লীগের একাংশ হাসিনা মহিউদ্দিনের বিরোধিতায় নামেন। গত সিটি নির্বাচনের পর থেকে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বিপক্ষীয়দের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন বলে আলোচনা চলে আসছে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গ সংগঠনসমূহের মাঝে সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নগর সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং বর্তমান মেয়র ও দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের পক্ষে আর বিপক্ষে দু’টি ধারায় মেরুকরণ চলে আসছে। গ্রæপিং অনেক সময়ই প্রকাশ্য দ্ব›দ্ব এমনকি রক্তক্ষয়ী সংঘাতে রূপ নিয়ে থাকে। তবে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা সভা-সমাবেশের পাশাপাশি সুশৃঙ্খল সহাবস্থান নিয়েই বক্তব্য রাখেন। আবার ওদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগেও রয়েছে প্রবল কলহ-কোন্দল।
সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন
এদিকে ১৮ বছর পর গতকালের সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন হাসিনা মহিউদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আনজুমান আরা চৌধুরী আনজি। কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির ৬টি পদে নাম ঘোষিত হয়। আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা তাদের নাম প্রস্তাব করলে কাউন্সিলররা একযোগে হাত তুলে সমর্থন জানান। কমিটির অপর নেতৃবৃন্দ হলেন- সহ-সভাপতি মমতাজ খান, রওশন আরা ইউসুফ, নূরনাহার মোতালেব, রওশন আরা আমিন, হামিদা রশিদ ও তপতী সেনগুপ্তা। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নীলু নাগ, রেখা আলম চৌধুরী ও মালেকা বেগম। সাংগঠনিক সম্পাদক হোসনে আরা বেগম। পরে কেন্দ্রের অনুমোদনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।