পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বর্মী (মিয়ানমার) সেনা, পুলিশ, বিজিপি এবং উগ্র মুসলিম-বিরোধী মগবৌদ্ধদের গণহত্যা, গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, চরম নির্যাতন-নিপীড়ন-বিতাড়নের মুখে বাধ্য হয়ে স্বদেশভূমি মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন স্টেট) প্রদেশ ছেড়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে ঠাঁই নিয়েছে সম্প্রতি হাজার হাজার রোহিঙ্গা।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসমূহের হিসাবে নতুন করে পালিয়ে আসা মুসলিম রোহিঙ্গা নর-নারী-শিশু-বৃদ্ধের সংখ্যা ৫০ থেকে ৭০ হাজার। জাতিসংঘের ভাষায় ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যহত নিপীড়িত’ রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নির্যাতনের স্টিম রোলার আজ বন্ধ হয়নি। এসব চরম ভাগ্যহত মজলুম রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মালয়েশিয়া থেকে পাঠানো মানবিক ত্রাণবাহী জাহাজ বহুল আলোচিত ‘নটিক্যাল আলিয়া’ আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান চিটাগাং কন্টেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) জেটি-বার্থে এসে ভিড়েছে। জাহাজটি আসে বন্দরের বহির্নোঙর থেকে। আসার কিছুক্ষণ পর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জাহাজে ওঠেন এবং মানবিক ত্রাণের চালান বুঝে নেন। মালয়েশীয় ত্রাণসামগ্রী আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন। চট্টগ্রাম কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
গত সপ্তাহে প্রথমে মানবিক ত্রাণবাহী জাহাজটি মিয়ানমারের বন্দরে পৌঁছালে ইয়াঙ্গুন শহরে একদল উগ্র বৌদ্ধভিক্ষুসহ রোহিঙ্গা-বিরোধীরা জাহাজ আগমনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে। যা আন্তর্জাতিক বিবেকবান মহলে নিন্দিত হয়। সেখানে ৫০০ মেট্রিক টন (আংশিক) ত্রাণসামগ্রী খালাস করা হয়। এর পরবর্তীতে জাহাজটি কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী টেকনাফের নাফ নদীতে আসতে চাইলেও সেখানে তেমন গভীরতা (ড্রাফট) না থাকায় ‘নটিক্যাল আলিয়া’ জাহাজটির সেখানে যাওয়া হয়নি। পরে গতকাল সোমবার কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া উপদ্বীপ সংলগ্ন সাগর-কিনারে ত্রাণসামগ্রী খালাসের চেষ্টা চালিয়েও ক্রেন এবং জেটি-ঘাট না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। পরে গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এসে পৌঁছায় জাহাজটি।
কর্মকর্তারা জানান, ‘নটিক্যাল আলিয়া’ জাহাজটিতে ১৪শত ৭২ মেট্রিক টন ত্রাণসামগ্রী রয়েছে। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে আছে চাল, তেল, ওষুধ, পোশাক সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। কন্টেইনার এবং খোলা (বাল্ক) উভয় প্যাকিংয়ে এসব মানবিক ত্রাণ এই জাহাজে এসেছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় হতভাগ্য রোহিঙ্গাদের মাঝে এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হবে।
এসব মানবিক ত্রাণসামগ্রী ১৫০টি ট্রাকযোগে কক্সবাজার শহর হয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উখিয়া ও টেকনাফ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর তা ১৫ হাজার পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হবে। এরমধ্যে টেকনাফের সাড়ে ৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার ও উখিয়ায় ৯ হাজার পরিবারকে ত্রাণসামগ্রী দেয়া হবে। এর জন্য ১৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়েছে। এছাড়া নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে উপজেলা কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।