Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবে বিএনপি মির্জা ফখরুল

| প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার: আগামীতে ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ রূপরেখা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপের প্রস্তাব দেবে বিএনপি। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান। ক্ষমতাসীনদের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বিএনপিকে ক্ষমা চাইতে হবে কেন? বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এসেছে, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। সারাদেশে লাগামছাড়া দুর্নীতি চলছে।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভার পর এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এদেশের মানুষ খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করেন, নির্বাচনকালীন সময়ে যদি একটি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে, তাহলে কারো পক্ষেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না। সেই কারণেই নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনার জন্য সহায়ক সরকার প্রয়োজন। আমরা এই সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দেবো।
এই প্রস্তাব দিয়ে আমরা সরকারকে আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার জন্য বলব। এবার আমরা প্রধানমন্ত্রীকেই এই প্রস্তাব দেবো যে, এভাবে আসতে হবে। তা না হলে সকল দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে।
নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রস্তাব প্রেসিডেন্টকে দেবেন কি না, প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রেসিডেন্টের কাজ তো শেষ হয়ে গেছে। উনি তো যে অপকর্ম করার করে ফেলেছেন। আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীকে সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দেবো।
নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া ১৩ দফা প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্টের সাথে রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপের বিষয়টিও তুলে ধরেন ফখরুল ইসলাম।
আমাদের ভিক্টরিটা কোথায় জানেন। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ১৩ দফা একটা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার আগে আওয়ামী লীগের নেতারা কোনো কথাই বলতে চায়নি। পরিষ্কার করে বলে দিয়েছিল যে, কোনো আলোচনাই হবে না, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আমাদের প্রস্তাবের পরেই প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকেছিলেন, কথা-বার্তা বলেছেন এবং একটা ব্যবস্থা নিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে গত ১৮ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া নির্বাচন কমিশন শক্তিশালীকরণে ১৩ দফা প্রস্তবাবলি জাতির উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করে তা প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠান এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ আয়োজনের আহŸান জানান। এরপরপরই প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ ৩১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ করেন।
নতুন সিইসি ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সম্পর্কে আমরা জনগণের সামনে, আপনাদের সামনে পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি, তার দলীয় অবস্থান, তার ব্যক্তিগত অবস্থান। আমরা বলেছি যে, তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হওয়ার মতো যোগ্য মানুষ নন। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে আমরা যাবো কি যাবো না, এটা তা তো অনেক পরের ব্যাপার। স্থানীয় সরকার নির্বাচন চলমান প্রক্রিয়া। আমরা করছি, এটা আমরা করব।
সারাদেশে লাগামছাড়া দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপিকে ক্ষমা চাইতে হবে কেন? কারণ বিশ্বব্যাংক ওই অভিযোগ নিয়ে এসেছে, বিশ্বব্যাংক চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। একটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব কী চুপ করে বসে থাকা? অবশ্যই আমরা রিঅ্যাক্ট করেছি এবং সেই রিঅ্যাক্ট করেছি কী, আমরা বলেছি যে, দুর্নীতি হচ্ছে। আর দুর্নীতি শুধু পদ্মাসেতুতে হচ্ছে না, সারা বাংলাদেশের দুর্নীতির লহরি বয়ে গেছে। আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে দেখছি, দুর্নীতির মানে শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে এখন। লাগাম ছাড়া দুর্নীতি চলছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পদ্মাসেতুর দুর্নীতি নিয়ে রায় কি হয়েছে না হয়েছে, এটা কানাডার বিচার বিভাগের ব্যাপার, তাদের ব্যাপার। আমরা আমাদের চোখের সামনে দেখছি যে, এখানে কীভাবে দুর্নীতির হচ্ছে? দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংক লুট করে নেয়া হচ্ছে, ওভারব্রিজ খেয়ে ফেলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক খেয়ে ফেলা হচ্ছে, আপনার স্টক মার্কেট পুরোপুরি নিয়ে নেয়া হচ্ছে। কোনটা বাকি আছে?
শুধু তাই নয়, পত্রিকাগুলোতে বেরিয়েছে প্রজেক্টগুলোতে কী হারে দুর্নীতি হচ্ছে, স্পেসিফিক পত্রিকাগুলোতে বলা হচ্ছে, এটা আমাদের কথা না। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ বিমানে কি হয়েছে? ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ও পিডিবিতে কী হচ্ছে, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে কী হচ্ছে? কোথায় নেই দুর্নীতি? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
এখন পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ চলছে, সেখানে কি দুর্নীতি হচ্ছে বলে আপনি মনে করেন, প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক ওই প্রকল্প থেকে সরে এসেছে, এখন সেখানে কী হচ্ছে তা একমাত্র আল্লাহই বলতে পারবেন, আর কেউ বলতে পারবে না।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক কিন্তু তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি। দুর্নীতি হয়নি, এটা কিন্তু তারা বলেনি। দুর্নীতি হয়েছে- এই অবস্থান থেকে বিশ্বব্যাংক সরে আসেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ