Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সাইবার হ্যাকারদের টার্গেটে পরিণত হতে যাচ্ছে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো!

| প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : সাইবার হামলা থেকে দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে রক্ষা করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ নিয়ে একটি নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলারও নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে অধিক নিরাপত্তা দেয়া হয়। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের আক্রমণের কবল থেকে কেপিআইভুক্ত এই খাতটিকে রক্ষার জন্য এতদিন এর নিরাপত্তার দায়িত্বে সশস্ত্র পাহারা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও এখন সাইবার হ্যাকারদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যেই হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের পাসওয়ার্ড হ্যাক করে রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকারদের অর্থ লুট করে নেয়ার আলোচিত এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করেই সরকার স্পর্শকাতর খাতগুলোকে সাইবার হামলার হাত থেকে রক্ষার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দেশের বিদ্যুৎ খাত একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ খাত হওয়ায় একে রক্ষায় বিদ্যুৎ বিভাগ পরিকল্পনা নিয়েছে। যাতে করে হ্যাকাররা সাইবার হামলা চালিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন অচল করে দিতে না পারে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে সাইবার হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। হামলাকারীরা কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেন্দ্রের উৎপাদন প্রক্রিয়ার মধ্যে ঢুকে বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয় সেজন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ ভবনে এ বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় মার্কিন সংস্থা এমআইটি কানেকশন সায়েন্স সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখার কৌশল উপস্থাপনও করেছে। এতে বলা হয়, প্রযুক্তির যথাযথ সংরক্ষণ প্রয়োজন। এর সঙ্গে প্রয়োজন দক্ষ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।
কর্মশালায় প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম, জ্বালানি বিদ্যুৎ এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পিডিবি চেয়ারম্যান খালিদ মাহমুদ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইনসহ বিদ্যুৎ বিভাগ এবং সংস্থা প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন বলেন, সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে এখন আমাদের ভাবতে হচ্ছে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বিতরণের পরিমাণ এখন বাড়ছে। কেউ যাতে সাইবার আক্রমণ না করতে পারে এজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কি কি বিষয় সংযুক্ত করা যায়, কোথায় কোথায় আক্রমণ হতে পারে তা চিহ্নিত করা এবং আক্রমণ হলে কীভাবে তা মোকাবেলা করা যাবে সে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। যখনই নতুন প্রযুক্তি আসবে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। যেসব সফটওয়্যার বাইরের দেশ থেকে আসবে সেগুলো ব্যবহারে আরো সতর্ক হতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি পেনড্রাইভের মাধ্যমেও সিস্টেম থেকে তথ্য চুরি হতে পারে বা নতুন কোনো কিছু প্রবেশ করতে পারে। এজন্য সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই।
প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশের বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বাড়ছে। এখন গ্রিড এবং উৎপাদন পর্যায় সবখানেই নিয়ন্ত্রণ করা হয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এসব সফটওয়্যারে সাইবার আক্রমণে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তাই আগে ভাগেই সতর্ক থাকতে হবে দেশের বিদ্যুৎ বিভাগকে।
জানা যায়, গত বছর ইউক্রেনে সাইবার আক্রমণ চালায় হ্যাকাররা। এতে সেখানের বিদ্যুৎ বিতরণে বিপর্যয় নেমে আসে। ২০১২ সালে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় নয়টি রাজ্য ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে অনেকেই সাইবার আক্রমণকে দায়ী করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ